কভিড-১৯

দুই লাখে পৌঁছল বৈশ্বিক মৃতের সংখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত বছরের শেষ দিন আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন একটি ভাইরাসের বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করেছিল চীন। এর ১২ দিনের মাথায় অজানা সেই ভাইরাসে প্রথম মৃত্যু হয় দেশটিতে। চীনে শুরু হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশে দ্রুতই ছড়িয়েছে নভেল করোনাভাইরাস নামে সে ভাইরাসটির সংক্রমণ। মহামারী থেকে অতিমারীতে রূপ নিয়েছে ভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯। গতকালই বিশ্বব্যাপী রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখে। সংখ্যা বাড়তে বাড়তে কবে গিয়ে স্থির হবে, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কোনো ধারণা নেই কারো।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বলছে, গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত সারা বিশ্বে নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে মোট ২৮ লাখ ৩৪ হাজার ১৩৪ জনের। এর মধ্যে মারা গেছে লাখ ৯৮ হাজার ৪০৫ জন। অন্যদিকে ওয়ার্ল্ডোমিটারের একই সময়ের হালনাগাদকৃত সংক্রমণ পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯- আক্রান্ত ব্যক্তির মোট সংখ্যা ২৮ লাখ ৬৪ হাজার ৩০৬। এর মধ্যে মারা গেছে লাখ ৯৮ হাজার ৫০৫ জন।

বিশ্বের নামিদামি প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীরা নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় উদ্ভাবনের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। করোনা রোগীদের সারিয়ে তুলতে চলছে নানা ধরনের ওষুধের পরীক্ষা। সাধারণ মানুষকে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য চলছে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের কাজও। সংক্রমণের বিস্তার রোধে লকডাউন, শাটডাউন কিংবা সাধারণ ছুটির পথ বেছে নিচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ। তার পরও ভাইরাসটির বর্তমান বিস্তারের সঙ্গে পেরে উঠছে না মানুষ।

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে গোটা দুনিয়ায় যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার চার ভাগের এক ভাগ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। পৃথিবীর প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ করোনা রোগী আছে যুক্তরাষ্ট্রে। জনস হপকিন্সের তথ্য বলছে, বাংলাদেশ সময় গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত দেশটিতে কভিড-১৯- মৃত্যু হয়েছে ৫২ হাজার ৪২ জনের। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, সংখ্যা ৫২ হাজার ৩৭১।

যুক্তরাষ্ট্রের পর নভেল করোনাভাইরাসের সবচেয়ে বেশি বিস্তার ঘটেছে ইউরোপের দেশ স্পেনে। যদিও দেশটিতে সংক্রমণের গতি বর্তমানে তুলনামূলক মন্থর। জনস হপকিন্সের তথ্য বলছে, স্পেনে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা লাখ ২৩ হাজার ৭৫৯। এর মধ্যে ২২ হাজার ৯০২ জন মারা গেছেন।

কভিড-১৯- আক্রান্তের দিক থেকে স্পেন দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে ইতালিতে। দেশটিতে স্পেনের চেয়ে করোনা রোগীর সংখ্যা কম হলেও মৃত্যুর হার বেশি। লাখ ৯২ হাজার ৯৯৪ জন কভিড-১৯ রোগীর বিপরীতে ইতালিতে মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার ৯৬৯ জনের। সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৬০ হাজার ৪৯৮ জন।

আক্রান্তের দিক থেকে স্পেন ইতালির পরের অবস্থানটি ফ্রান্সের। কভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যার বিচারে দেশটির অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। গতকাল পর্যন্ত ফ্রান্সে নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন লাখ ৫৯ হাজার ৯৫২ জন। মৃত্যু হয়েছে ২২ হাজার ২৪৫ জনের।

করোনা বিপর্যয় কাটিয়ে স্বাভাবিক অবস্থার দিকে যেতে শুরু করেছে ইউরোপের আরেক দেশ জার্মানি। দেশটিতে এরই মধ্যে শিথিল করা হয়েছে লকডাউনের বিভিন্ন শর্ত। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণও নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি করছে দেশটি। গতকাল পর্যন্ত জার্মানিতে করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল লাখ ৫৫ হাজার ৫৪। তবে আক্রান্ত বেশি হলেও মৃত্যুর হার ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোর চেয়ে তুলনামূলক কম জার্মানিতে। গতকাল পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে হাজার ৮০২ জনের।

নভেল করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল চীনও ভাইরাসটির বিস্তারকে মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। যে উহান প্রদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল, দিন কয়েক আগে সেখানকার লকডাউনও তুলে নেয়া হয়েছে। মানুষজনও ফিরতে শুরু করেছে স্বাভাবিক জীবনে। গতকাল পর্যন্ত চীনে করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ৮৩ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে হাজার ৬৩৬ জনের। সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৭৮ হাজারের বেশি।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী রয়েছে ভারতে। দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৫৩০। মৃত্যু হয়েছে ৭৮০ জনের। পাকিস্তানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ২২৭। মৃত্যু হয়েছে ২৫৬ জনের। আফগানিস্তানে হাজার ৪৬৩ জন রোগীর বিপরীতে মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন