লকডাউন প্রত্যাহার করতে হবে ধাপে ধাপে: ডব্লিউএইচও

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আরোপিত লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসছে বেশ কয়েকটি দেশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গতকাল হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, লকডাউন প্রত্যাহারের বিষয়টি অবশ্যই ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি লকডাউন একবারে বা দ্রুতগতিতে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়, সেক্ষেত্রে আবারো সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। খবর রয়টার্স।

ডব্লিউএইচওর ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক তাকেশি কাসাই গতকাল এক অনলাইন প্রেস কনফারেন্সে বলেন, এখন পর্যন্ত সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের পদক্ষেপ কার্যকর বলে প্রমাণ হয়েছে। একদিক থেকে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দমিয়ে রাখতে হবে; আরেকদিক থেকে জনগণকেও নতুনভাবে বাঁচার জন্য তৈরি হয়ে উঠতে হবে; যাতে সমাজ সঠিকভাবে সচল হয়ে উঠতে পারে।

তাকেশি কাসাই বলেন, আমাদের জীবনযাপন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে এখন মহামারী পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর মতো করে গড়ে তুলতে হবে। অন্তত ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না একটি নতুন ভ্যাকসিন অথবা কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। ততদিন পর্যন্ত এভাবে জীবনযাপনকেই স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে হবে।

বিভিন্ন দেশের সরকার এরই মধ্যে লকডাউন প্রত্যাহারের কার্যকর বিভিন্ন উপায় নির্ধারণের প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কোনো কোনোটি সতর্কতার সঙ্গে ধাপে ধাপে বিষয়টি কার্যকরের জন্য গাইডলাইনও ঘোষণা করেছে। এক্ষেত্রে দেশগুলোয় সরকারিভাবে সংক্রমণ পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ডব্লিউএইচওর ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত নভেল করোভাইরাসের উপস্থিতি আছে, কোনো দেশই ভয়াবহ আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে মুক্ত নয়। এক্ষেত্রে বেঁচে থাকার নতুন কোনো উপায় গ্রহণের জন্য ব্যক্তিগত সামাজিক পর্যায়ে প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিক অঞ্চলে নভেল করোনাভাইরাস তেমন একটা জোরালো ছিল না, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের তুলনায় অঞ্চলে ভাইরাসটির সংক্রমণের গতি ছিল তুলনামূলক কম। তবে অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে জাপান সিঙ্গাপুরে সংক্রমণ বৃদ্ধির গতি এখনো অব্যাহত আছে।

সময় তাকেশি কাসাই আরো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, চলমান মহামারীর কারণে পোলিও, হাম রুবেলার মতো মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে টিকাদান কর্মসূচি যাতে থমকে না দাঁড়ায়। অন্যথায় ওয়েস্টার্ন প্যাসিফিকসহ অন্যান্য অঞ্চলে সংকটের মাত্রা আরো ঘনীভূত হতে পারে। বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে, যখন বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বেশ চাপের মুখে নাজুক অবস্থানে রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ ২৫ লাখ ছাড়াল:

এদিকে বিশ্বব্যাপী গতকাল নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের সংখ্যা ২৫ লাখ ছাড়িয়েছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, গতকাল সন্ধ্যায় বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯- মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ হাজার ৯০৭ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে লাখ ৭১ হাজার ৭৩৫ জনের।

অন্যদিকে একই সময়ে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছিল মোট ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৯৪ জনের। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে লাখ ৭১ হাজার ২৫৫ জনের।

এর মধ্যে সংক্রমণের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট লাখ ৮৭ হাজার ৯৬০ জন কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জনস হপকিন্স। তালিকায় এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে স্পেন ইতালি। এর মধ্যে স্পেনে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে লাখ হাজার ১৭৮ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা ইতালিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা লাখ ৮১ হাজার ২৮৮।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন