মহামারী কভিড-১৯-এর প্রকোপে থমকে গেছে পুরো বিশ্ব। যেসব দেশে ভাইরাসটির প্রকোপ বেশি দেখা দিয়েছে, সেখানেই সামাজিক সংক্রমণ এড়াতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। এ কারণেই অন্য অনেকের মতোই ঘরবন্দি হয়ে আছেন দেশের সব অঙ্গনের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। মোবাইল কিংবা সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও কলেই সেরে নিচ্ছেন নিজেদের প্রয়োজনীয় জরুরি কাজগুলো। অন্য অনেক শিল্পীর মতো বেশ কিছুদিন ধরেই এ রকম অবস্থায় রয়েছেন অভিনেতা আনিসুর রহমান মিলন।
টকিজের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে অল্প সময়ের আলাপকালে তেমনটাই জানালেন তিনি। মিলন বলেন, ‘সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকে বাসাতেই আছি।’ তবে ঘরে যে একেবারেই বসে আছেন তা কিন্তু নয়। বরং বাড়িতে বসেই অসহায় কলাকুশলীদের সহায়তায় কাজ করে যাচ্ছেন এ অভিনেতা। তার মতে, ‘বাসা থেকেই সংগঠনের (অভিনয়শিল্পী সংঘ) কাজগুলো করছি। যারা স্বল্প আয়ের শিল্পী-কলাকুশলী আছেন, কীভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানো যায়, কীভাবে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করা যায়, সেসব নিয়েই ব্যস্ততা।’
আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিল্পী-কলাকুশলীদের কীভাবে সাহায্য করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নে এ অভিনেতা জানান, এ মহামারীতে একেকজনের জীবনে একেক ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই তাদের সেই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা অর্থ,
খাদ্য কিংবা সাহস—যেকোনোভাবেই হোক। কারণ একজনও যাতে কষ্টে না থাকে, সেজন্যই এ প্রচেষ্টা।
অভিনয়ের ব্যস্ততা নেই এখন। সাংগঠনিক কার্যক্রমের বাইরে গিয়ে বাকি সময়গুলো কীভাবে কাটছে? কথার এক পর্যায়ে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় তার কাছে। মিলন বলেন, ‘টেলিভিশনে দেশ ও দেশের বাইরের খবর দেখি। কখনো কখনো একটা-দুটো দেখা চলচ্চিত্র আবার দেখি।’
তবে এখন নাকি আর পুরো চলচ্চিত্র দেখার ধৈর্যও নেই তার। বাসায় থাকতে থাকতে ধৈর্য শক্তিও কমে যাচ্ছে বলে জানালেন এ অভিনেতা।
অনেক দিন ধরেই ছবি নির্মাণের ইচ্ছা অভিনেতা মিলনের। অবশ্য অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপন ও নাটক নির্মাণের কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। কেবল বাকি ছিল চলচ্চিত্র নির্মাণের। কোয়ারেন্টিনের এ সময়গুলো যেন চিত্রনাট্য লেখার মোক্ষম সময়। এ সময়ের সদ্ব্যবহার করেছেন মিলন। অনেক দিন ধরেই নাকি মাথার ভেতরে ঘুরপাক খাচ্ছিল ছবির গল্পগুলো। তাই ব্যস্ততাহীন এ সময়ে গল্পগুলোকে চিত্রনাট্যে রূপ দেয়ার চেষ্টা করেন। লেখার কাজও নাকি প্রায় শেষ করেছেন। একটি নয়, দুটি নয় তিন তিনটি চিত্রনাট্য লিখে ফেলেছেন। কথায় কথায় তেমনটাই জানালেন মঞ্চের এ অভিনেতা।
এ বিষয়ে আনিসুর রহমান মিলন জানান, বেশ কিছুদিন আগেই ধাপে ধাপে তিনি তিনটি চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য লেখার কাজ অনেকটাই শেষ করেছেন। সময় ও সুযোগের অভাবে পুরোপুরি শেষ করা হয়নি। এ অবস্থায়
যখনই তার মন চায় তিনটি ছবির চিত্রনাট্য নিয়ে বসে যান ঠিকঠাক করতে। চলচ্চিত্রগুলোর নামও প্রায় ঠিক করে ফেলেছেন তিনি। নামগুলো হলো—ইয়েস, রেড বক্স, লাইট। ধারাবাহিকভাবে তিনটি ছবিই নির্মাণের ইচ্ছা রয়েছে বলে তিনি জানালেন। গত বছর নভেম্বরে মুক্তি পেয়েছিল এ অভিনেতার অভিনীত ‘ইন্দুবালা’
ছবিটি। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন নতুন মুখ পায়েল।