দেশে ইউরিয়া সার মজুদ ৯ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে বর্তমানে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইউরিয়া সার মজুদ আছে এবং  বিসিআইসি'র নিয়ন্ত্রাধীন সকল সার কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের নিকট সার পৌঁছে দিতে সহযোগিতার জন্য জেলা প্রশাসকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। 

আজ সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)-এর সর্বশেষ তথ্য অনুসারে করপোরেশনের সার কারখানা ও গোডাউনসমূহে মোট ৯ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়েছে, গত বছর একই সময়ে ইউরিয়া সারের মোট মজুদের পরিমাণ ছিল ৮ লাখ ১৫ হাজার ৭৩৫ মেট্রিক টন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ইউরিয়ার মোট চাহিদা ২৫ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন এবং এর প্রায় ২২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন সার ইতিমধ্য কৃষকদের নিকট সরবরাহ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে কাফকোসহ বিসিআইসি'র নিয়ন্ত্রাধীন কারখানাগুলোতে বিসিআইসি'র কারখানাসমূহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের নির্দেশিত স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এজন্য পর্যাপ্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ব্লিচিং, মাস্ক এবং প্রয়োজনীয় পিপিই প্রদান করা হয়েছে। বর্তমানে বিসিআইসি'র অধীন ৬টি সার কারখানার মধ্যে ৩টি কারখানা চলমান রয়েছে এবং অন্য ৩টি কারখানা নিয়মিত সংক্ষিপ্ত মেরামতি শেষে শীঘ্রই উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় শুরু করবে বলে বিসিআইসি'র সূত্রে জানা গেছে। 

সার উৎপাদন ছাড়াও পরিকল্পনা অনুযায়ী বিসিআইসি'র সার আমদানি ও সরবরাহ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিসিআইস'র চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান ও কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাসহ সার ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করছেন।  

এদিকে, ইউরিয়া সার পরিবহন, ডিলারের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ইউরিয়া সার যথাসময় উত্তোলন করে সারাদেশে কৃষকদের নিকট পোঁছানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্য ১১ এপ্রিল পত্রের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। 

বিসিআইসি'র সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এবছরের এপ্রিল মাসের ইউরিয়া সারের বরাদ্দ জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে প্রেরণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মে ও জুন/২০২০ মাসের বরাদ্দও প্রেরণ করা হবে। তবে, যে সকল ডিলার এখন পর্যন্ত এবছরের মার্চ মাসের বরাদ্দ মোতাবেক নির্ধারিত পরিমাণ ইউরিয়া সার উত্তোলন করেননি তাদের দ্রুত সার উত্তোলনের জন্য নির্দেশ করা হয়েছে। 

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ৯ এপ্রিল পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীদের জরুরী সেবার অন্তর্ভুক্ত করে আদেশ জারি করেছে। করোনা ভাইরাসজনিত উদ্ভূত মহামারী পরিস্থিতি বা মহামারীপরবর্তী সময়ে খাদ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষক পর্যায়ে সার, বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা নির্দেশ প্রদান করেছেন।

উল্লেখ্য, কৃষি উৎপাদনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ ইউরিয়া সার শিল্প মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বিসিআইসি সারাদেশে ২৯টি (২৪টি বাফার গোডাউন এবং ৫টি কারখানা) বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ হাজার ৬০০ ডিলারের মাধ্যমে (প্রতি ইউনিয়নে কমপক্ষে ০১ জন ডিলার) কৃষক পর্যায়ে ইউরিয়া সরবরাহ করে থাকে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন