‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ ও ‘পিকেএসএফ’-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এবং নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী চলমান নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় অবিলম্বে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের বাজেট বরাদ্দ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং চালুর দাবি জানিয়েছেন।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের আঘাতে দিন দিন ক্রমবর্ধমান হারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এ প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগণ, দিনমজুর এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিত জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিদ্যমান সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি এবং শিল্প ও সেবা খাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত, রফতানি উন্নয়ন তহবিলসহ উৎপাদন খাতে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ৭২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। এ ঘোষণার পর মাঠ পর্যায়ে খাদ্যসহায়তা প্রদান ও ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সব ক্ষেত্রে এর পরিমাণ খুবই কম।
রাজধানীতে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার কিছু ব্যবস্থা থাকলেও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেই। অন্যদিকে দেশব্যাপী স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাও ভেঙে পড়েছে। ফলে সাধারণ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সব শ্রেণীর মানুষ। এ পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে নাজুক অবস্থানে বয়স্ক মানুষ, নারী ও শিশুরা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, প্রণোদনা হিসেবে নির্ধারিত বাজেট বরাদ্দ হলেও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ‘সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের’ বাজেট এখনো বরাদ্দ করা হয়নি এবং খাদ্যের মূল জোগানদাতা কৃষক ও কৃষি খাতের জন্য প্রণোদনার কোনো ঘোষণা আসেনি। সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২১.৮ শতাংশ অর্থাৎ ৩ কোটি ৮৫ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, যারা মূলত দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ, দেশে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধিতে এসব মানুষের জীবন-জীবিকা এখন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। অতিদরিদ্র থেকে দরিদ্র, শহরের বস্তিবাসী এবং কর্ম ও উপার্জনহীন ৮০ লাখ পরিবারের জন্য আগামী জুলাই ২০২০ পর্যস্ত খাদ্যসামগ্রীর জোগান নিশ্চিত করা, অবিলম্বে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের বাজেট বরাদ্দ করা এবং ১০ টাকায় চাল বিক্রিসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত সব কার্যক্রমের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
রাজধানীর পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসা এবং সর্বস্তরে সাধারণ চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, প্রান্তিক ও অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৪০ লাখ পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য দুর্যোগপরবর্তী সময়ে রেশনিং চালুর জন্য এখনই প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানান তারা।