ইনোভিশনের ওয়েবিনারে বক্তারা

দেশে কমোডিটি স্টক এক্সচেঞ্জ থাকা প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক

 উৎপাদন সরবরাহকারীদের মধ্যে পণ্যের দামের ব্যবধান কমাতে দেশে কমোডিটি স্টক এক্সচেঞ্জ থাকা প্রয়োজন। অ্যাসোসিয়েশনগুলোর পক্ষ থেকে এটি বাস্তবায়নের জন্য জোর দিতে হবে। সম্প্রতি ইনোভিশন কনসাল্টিং লিমিটেডের উদ্যোগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কভিড-১৯-এর প্রভাব শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।

ইনোভিশন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কভিড-১৯-এর প্রভাব নিয়ে সিরিজ ওয়েবিনার আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রথম সিরিজ ছিল বাংলাদেশের আর্থিক খাত নিয়ে। ওয়েবিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) সহযোগী অধ্যাপক সাজিদ অমিত, আইপিডিসি ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আসিফ ইকবাল।

ওয়েবিনারে বক্তাদের আলোচনায় দেশের আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট বেশকিছু নীতিগত সুপারিশ উঠে এসেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শুধু করপোরেটদের প্রাধান্য না দিয়ে মাইক্রো এসএমই বা অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্যও ঋণের ব্যবস্থা করা উচিত। তাদের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষা দেয়ার পাশাপাশি বীমার আওতায় আনতে হবে। দেশের আর্থিক খাতের সক্ষমতা নিরূপণ করতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিস্তৃত পরিসরে ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য স্কিম রয়েছে, যা আমাদের দেশে নেই। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের বিদ্যমান গ্রাহকদের লোকসান কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রণোদনা দিতে হবে।

দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সরকারের পক্ষে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (ডিএফএস) মাধ্যমে সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়টিও ওয়েবিনারে উঠে এসেছে। এই অতিমারীর সময়ে ডিএফএস আরো সমৃদ্ধ হয়েছে। এর পরিধিকে আরো বিস্তৃত করতে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে হবে। পাশাপাশি ডিএফএসের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে কভিড-১৯-এর প্রকোপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও যাতে লেনদেনের ক্ষেত্রে ব্যয় কম থাকে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। একীভূত সাপ্লাই চেইন আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রচলনের মাধ্যমে ঝুঁকি দূর করার পাশাপাশি স্বাচ্ছন্দ্যময় ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে।

ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধের সময়সীমা শর্ত শিথিল করতে হবে। অর্থনৈতিক কার্যক্রমকে আরো বেগবান করতে মূসক করের পরিমাণ কমানো হলে উৎপাদন ব্যয় কমে আসবে এবং গ্রাহকের চাহিদা বাড়বে। দেশের বাজারকে যথাযথ সহায়তা দিতে হবে, কারণ বৈশ্বিক বাজার ঘুরে দাঁড়াতে বেশকিছু সময় লাগবে। পণ্যের দামের সঙ্গে জ্বালানি তেলের দামের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। বৈশ্বিক বাজারে বর্তমানে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় তা বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কিছুটা হলেও সুবিধা দেবে। তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে সরকারের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে এবং এটিকে কাজে লাগিয়ে সরকার দেশের বাজারেও তেলের দাম কমাতে পারে। এতে উৎপাদন ব্যয় কমে যাবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে চাহিদা চাঙ্গা হবে। স্থানীয় বাজারে চাহিদা উৎপাদন বাড়লে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি সঞ্চার হবে। আর ব্যবসার ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য তৈরি হলে সেটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধের জন্য সহায়ক হবে বলেও মনে করছেন বক্তারা।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন