মহামারীর সিনেমা

ফিচার ডেস্ক

হঠাৎ করে অজানা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ, মারা যাচ্ছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনেকগুলো মৃত্যু। ভাইরাসটি আক্রান্ত করার পর খুব বেশি সময় দিচ্ছে না। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে সবার মাঝে। ভারতের মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রির চলচ্চিত্র ভাইরাস আর দক্ষিণ কোরিয়ার চলচ্চিত্র ডির্যাঞ্জড চলচ্চিত্র দুটি মহামারী ভাইরাস নিয়ে কাহিনী। তবে মালয়ালম চলচ্চিত্রটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হলেও কোরিয়ান চলচ্চিত্রটি কাল্পনিক।

ভাইরাস

ভারতের কেরালা রাজ্যের নাগরিক জাকারিয়া মোহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি অজানা এক ভাইরাসে আক্রান্ত হন। অসুস্থ অবস্থায় তাকে কোজিকোড সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কয়েক ঘণ্টা পরই সে মারা যায়। কিন্তু মারা যাওয়ার আগে সে আরো ১৮ জনের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। এরপর আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজ্যে।


ঘটনা আতঙ্কে রূপ নেয় যখন জানা যায় মহামারী এই ভাইরাসের নাম নিপাহ। যার কোনো প্রতিষেধকও নেই বা চিকিৎসা পদ্ধতিও নেই। আক্রান্ত মানুষের ৭৫ শতাংশই মারা যাচ্ছে। মানুষ পশুপাখি থেকে ভাইরাস ছড়াচ্ছে। যারাই এটিতে আক্রান্ত হচ্ছে তাদেরই বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। ঠিক যেন বর্তমান সময়ের মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের মতো।

ঘণ্টা ৩২ মিনিটের এই চলচ্চিত্রে আবেগ, উত্থান-পতন, রোগের কাছে মানুষের অসহায়ত্ব, কোয়ারেন্টিনের দুঃখ, নিপাহ আক্রান্ত ব্যক্তির একাকিত্বসবকিছু এমনভাবে সাজানো যে কেউ সেটা অনুভব করতে পারবে। মানুষ কীভাবে একত্র হয়ে একটি মহামারীকে দূর করতে পারে, সেটাই তুলে ধরা হয়েছে ভাইরাস সিনেমাটিতে।

আশিক আবু পরিচালিত চলচ্চিত্রে তারকাদের হাট বসেছিল। তবে প্রত্যেকেই তাদের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন। কুঞ্চাকো বোবান, প্রভাতি, আসিফ আলি, রহমান, ইন্দ্রজিৎ, সোবিন শাহির, রিমা কালিঙ্গাল, রিভাতি অভিনীত সিনেমাটি ২০১৯ সালে মুক্তি পায়। তব সব ছাপিয়ে চলচ্চিত্রের গল্পটিই আসল নায়ক। ২০১৮ সালে কেরালা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া মহামারী নিপাহ ভাইরাসের সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। এটি দর্শক সমালোচক উভয়ের কাছ থেকেই ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে।

ডির্যাঞ্জড

কোরিয়ার হান নদীতে ভেসে ওঠে কিছু মরদেহ। তদন্তে জানা যায়, ঘোড়াকৃমি জাতীয় একধরনের পরজীবীর (ইয়ংগ্যাসি) মাধ্যমে একটি মহামারী ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। যে আক্রান্ত হচ্ছে সেই অকল্পনীয় হারে ক্ষুধা আর তৃষ্ণা অনুভব করছে। আর ভাইরাসটি সরাসরি আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কে আঘাত করছে। ফলে বাধ্য হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তি তৃষ্ণা মেটাতে ছুটে যাচ্ছে নদীতে। আর সেই পানির সংস্পর্শে এসে আবার নতুন ব্যক্তি আক্রান্ত হচ্ছে। ক্রমেই সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বাধ্য হয়ে ঘোষণা করে যারাই আক্রান্ত তাদের যেন পানির কাছে যেতে দেয়া না হয়।

কিন্তু দেশে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ায় ক্রমেই বাড়তে থাকে মৃত্যু। একপর্যায়ে জানা যায়, রোগটির প্রতিষেধক বাজারে আছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। আর যারা সেই ওষুধের বাজারজাত করে, সেই ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিই মূলত ভাইরাসটি ছেড়েছে। কিন্তু তারা ওষুধটি তৈরির মূল উপাদান দিতে অস্বীকার করে। এমনকি যারা ওষুধ তৈরি করেছিল তারাও মারা যেতে থাকে। শুরু হয় প্রতিষেধক পাওয়ার নতুন যুদ্ধ।

মেডিকেল থ্রিলার জনরাতে কোরিয়ায় নির্মিত প্রথম ছবি ডির্যাঞ্জড ২০১২ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিম মুং-মিন, কিম ডং-আন, মুন জুং-হি লি হা-নুই। পার্ক জুং- পরিচালিত ১০৯ মিনিটের এই সিনেমাটি নির্মাণ করতে খরচ হয় মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বক্স অফিস থেকে এটি সর্বমোট ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে।


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন