নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মোকাবেলায় হিমশিম খেতে হচ্ছে ধনী-দরিদ্র সব দেশকেই। শুধু স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংকট নয়, বৈশ্বিক অর্থনীতিকেও মন্দার মুখে ঠেলে দিয়েছে এ ভাইরাস। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় চলতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে শতাধিক বৈশ্বিক সংগঠন। খবর বিবিসি।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহানে নভেল করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ভাইরাসটিতে গতকাল পর্যন্ত ১৩ লাখের বেশি আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৭৪ হাজারের বেশি।
এ পরিস্থিতিতে অক্সফাম ও অ্যাকশনএইড ইন্টারন্যাশনালের মতো প্রধান দাতব্য সংস্থাগুলো সরকারি-বেসরকারি ঋণদাতাদের কাছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বিশ্ব নেতা ও প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর কাছে ঋণ পরিশোধে ছাড় দেয়ার জন্য বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে চিঠি দিয়েছে। তারা চান, প্রয়োজনে সব দেশকে ঋণ ছাড়ের সুযোগ দেয়া হোক এবং বিশেষ করে দরিদ্রতম দেশগুলোকে।
এ উদ্যোগে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকায় আছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক দাতব্য সংস্থা জুবিলি ডেট ক্যাম্পেইন। সংস্থাটির পরিচালক সারা জেইন ক্লিফটন বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতি অপ্রত্যাশিত ঝাঁকুনির মুখে পড়েছে এবং একই সঙ্গে তাদের স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, কভিড-১৯ মোকাবেলায় অর্থ সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য এটাই সবচেয়ে দ্রুততম উপায়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর অলাভজনক জোট ইউরোড্যাডের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের ৬৯টি দরিদ্রতম দেশকে চলতি বছর অন্য দেশের সরকার ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানকে ১ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার এবং বেসরকারি ঋণদাতাদের ৬০০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে।
গত সোমবার নিজস্ব ব্লগে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, এ মহামারী বিশ্বকে আরেকটি মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ২০২০ সালের জন্য এটা হবে আর্থিক সংকটের চেয়ে ভয়াবহ।
নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সাহায্যপ্রার্থী দেশগুলোর জন্য আইএমএফ ৫ হাজার কোটি ডলার জরুরি অর্থায়নের ব্যবস্থা করেছে। একই সঙ্গে বিশ্বব্যাংক উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন দিয়েছে।
আইএমএফ মূলত দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেশগুলোকে মহামারী মোকাবেলায় এ অর্থ দিতে চায়। বিশ্বব্যাংক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি অর্থনীতিতে ভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা দিচ্ছে। এর মধ্যে নিম্ন সুদের ঋণ, অনুদান ও অন্যান্য কারিগরি সহায়তাও অন্তর্ভুক্ত আছে।
