৪ জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে পাঁচজনের মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯-এর উপসর্গ নিয়ে ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, ময়মনসিংহ রাজবাড়ীতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে তারা মারা যান। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

ফরিদপুর: জেলার মধুখালী ভাঙ্গা উপজেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। 

জানা গেছে, করোনার উপসর্গ নিয়ে গতকাল সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি থাকা ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত রোববার তাকে আইসোলেশনে নেয়া হয়।

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মাহফুজুর রহমান বুলু জানান, তিনি কিডনিসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি কিডনিজনিত জটিলতায়ই মৃত্যুবরণ করেছেন। তবুও করোনার কারণের তার মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আজকের মধ্যে পরীক্ষার ফল পাওয়া যেতে পারে।

এদিকে ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নে করোনা উপসর্গ নিয়ে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। 

তার পরিবার জানায়, জ্বর শ্বাসকষ্টে ভোগে গতকাল ভোরে তার মৃত্যু হয়েছে। পরীক্ষার জন্য তার দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার মহসিন উদ্দিন জানান, ওই বৃদ্ধ নিজের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে জ্বর শ্বাসকষ্টসহ লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। স্বজনরা তার মৃত্যুর খবর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জানানোর পর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া পরিবারের সদস্যদের  কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ: জেলার তাড়াশে জ্বর, সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, বমি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুরে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর পর বাড়িটি লকডাউন করেছে প্রশাসন।

জানা গেছে, এপ্রিল তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরেছেন। তখন থেকেই তার হাঁচি-কাশির উপসর্গ ছিল। ধীরে ধীরে গলাব্যথা ডায়রিয়া শুরু হয়। গতকাল দুপুরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান।

তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন মিয়া বলেন, মৃত ব্যক্তির করোনার উপসর্গ থাকলেও তাকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়নি।  

সিভিল সার্জন ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, মৃত ওই যুবক জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হলেও প্রথম দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেনি পরিবারের লোকজন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গতকাল দুপুরে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে নেয়ার পথে রাস্তায় মারা যান তিনি। খবর পেয়ে তার বাড়িতে মেডিকেল টিম পাঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।

ময়মনসিংহ: জ্বর, সর্দি শ্বাসকষ্ট নিয়ে জেলার হালুয়াঘাটে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত রোববার বিকালে হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি মারা যান। গতকাল সকালে মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুনীর আহমেদ। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, মৃত ব্যক্তির বাড়িসহ আশপাশের বাড়িগুলো লকডাউন করা হয়েছে। 

রাজবাড়ী: জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে জ্বর, সর্দি-কাশি গলাব্যথা নিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বেলা ৩টার দিকে নিজ বাড়িতেই মারা যান তিনি। 

পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির শাকিল জানান, রুহুল আমীন ঢাকা থেকে গত রোববার সকালে বাড়িতে আসেন। তিনি জ্বর, সদি-কাশি গলাব্যথা নিয়ে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করছিলেন। 

গতকাল বেলা ৩টার দিকে তিনি মারা গেলে বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ প্রশাসনকে জানানো হয়।

রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) লাবিব আব্দুল্লাহ জানান, মৃত ব্যক্তি ঢাকার নবী নগর এলাকার একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিনি গত শনিবার ঢাকা থেকে পাবনায় তার শ্বশুরবাড়ি যান। সেখান থেকে গত রোববার সকালে পাংশা উপজেলায় নিজের বাড়ি আসেন। তার শরীরে করোনার উপসর্গ ছিল বলে জেনেছি। তবে বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগ ক্ষতিয়ে দেখছে। 

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডা. মো. নুরুল ইসলাম জানান, ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার বাড়িসহ আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে মৃত ব্যক্তিকে চিকিৎসাদানকারী চিকিৎসক তার পরিবারের লোকজনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন