করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনীতিতে সঙ্কট সামলাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদদের বেতন কর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। প্রধানমন্ত্রীসহ সব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদদের বেতন থেকে ৩০ শতাংশ কেটে রাখবে কেন্দ্র। সেই অর্থ খরচ হবে করোনাভাইরাস এবং পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলায়। আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া এমপি ল্যাড বা সাংসদ উন্নয়নের অর্থও এ খাতে খরচ হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু এবং সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপালরাও তাদের বেতনের ৩০ শতাংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর এ কথা জানিয়েছেন প্রকাশ জাভড়েকর। তাদের না নেয়া বেতন এবং মন্ত্রী-সাংসদদের বেতনের অংশ একটি ‘কনসোলিডেটেড ফান্ড’-এ যাবে এবং করোনাভাইরাসের মোকাবেলায় তা বরাদ্দ করা হবে।
ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠক হলো। বৈঠক হয়েছে ভিডিয়ো কনফারেন্সে। বৈঠকের পর প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছেন, ১৯৫৪ সালের মন্ত্রী-সাংসদদের বেতন, ভাতা ও পেনশন আইনে পরিবর্তন আনার জন্য একটি অর্ডিন্যান্সে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এপ্রিল মাস থেকেই এই নিয়ম কার্যকর হবে। সাংসদদের পেনশনের ক্ষেত্রেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এদিকে এলাকায় উন্নয়নের কাজের জন্য সাংসদদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়। সেই অর্থ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি করে উন্নয়নের কাজ হয়। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সাংসদদের সেই উন্নয়ন তহবিলের অর্থ দুই বছরের জন্য বরাদ্দ দেয়া বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের কেন্দ্র সরকার। দুই বছরে এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭ হাজার ৯০০ কোটি রুপি। অর্থে অংকটি জানিয়েছেন মন্ত্রী জাভড়েকর।
তবে এমপি ল্যাডের অর্থও করোনা মোকাবেলা তহবিলে নেয়ার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা। কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি অবিচার। মন্ত্রী-সাংসদদের বেতনের ৩০ শতাংশ কেটে নেয়া নিয়ে কোনও আপত্তি না তুললেও আরেক কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের মতে, সাংসদদের এলাকার উন্নয়ন খাতের অর্থ এভাবে কেন্দ্রের হাতে খরচ করার অধিকার দেয়ায় সমস্যা বাড়বে। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের মতে, এই সিদ্ধান্ত ‘হঠকারী’ ও ‘অগণতান্ত্রিক’।
সূত্র: আনন্দবাজার