ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে ঢাকায় ফিরছে মানুষ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী

 নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঢাকামুখী মানুষের ঢল থামাতে গতকাল ভোর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে নদী পার হয়ে ঢাকায় ফিরছে মানুষ।

যাত্রীরা বলছেন, জরুরি প্রয়োজনে তারা ঢাকা যাচ্ছেন অথবা ঢাকা থেকে ফিরছেন। অনেকে আবার চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসছেন। কিন্তু ফেরি লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। বিকল্প উপায় না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে নদী পার হচ্ছেন তারা।

এদিকে, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টিও ঘাটে মানা হচ্ছে না। এতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ারও ঝুঁকি বাড়ছে সাধারণ মানুষের।

সরেজমিনে গতকাল সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকামুখী মানুষের বাড়তি চাপ রয়েছে। তবে ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় অনেকে আবার বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। অনেক যাত্রী কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদী পার হচ্ছেন।

সময় ফরিদপুর থেকে আসা যাত্রী হাসান খান বলেন, গত পরশু আমার বোনের শ্বশুর মারা গেছেন। তাকে দাফন করতে এসে আটকা পড়েছি। এখন ঢাকা থেকে এসেছি বলে বোনের শ্বশুর বাড়ি থাকতে দিচ্ছেন না ওই এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার। আবার ফেরি বন্ধ থাকায় ঢাকায়ও যেতে পারছি না। তাহলে কি আমি ঘাটে না খেয়েই মারা যাব? তাই কোনো উপায় না থাকায় বেশি ভাড়া দিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে।

মাগুরা থেকে আসা হাচিনা পারভীন বলেন, আমার ছেলের বয়স মাত্র দুই বছর। তার মাথায় টিউমার ধরা পড়েছে। স্থানীয় চিকিৎসকরা ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নিতে বলেছেন। আমরা ঘাটে বসে আছি কীভাবে পার হব জানি না। তবে না যেতে পারলে আমার ছেলেটা হয়তো বাঁচবে না।

ট্রলারে পার হওয়ার সময় যাত্রী রনজু আহম্মেদ বলেন, আমি ফেরিতে পার হলে মাত্র ২৫ টাকা ভাড়া লাগত। এখন ট্রলারে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে নদী পার হতে হচ্ছে। তার ওপর জীবনের ঝুঁকি রয়েছে। 

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কবে নাগাদ ফেরি চলাচল শুরু হবে তা একমাত্র কর্তৃপক্ষই বলতে পারবে।

 

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন