প্রবাসীদের ফিরিয়ে আনার চাপ বাড়ছে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাস সংকটে পুরো বিশ্বই এখন বিপর্যস্ত। এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সিংহভাগ দেশ যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থগিত রেখেছে। বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক রুটের সব ফ্লাইট স্থগিত রেখেছে। তবে সংকটময় পরিস্থিতিতে চাপ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের ওপর। বেশকিছু দেশ সেখানে থাকা বাংলাদেশীদের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে বলছে। ফিরিয়ে আনা না হলে এসব প্রবাসীকে অসুবিধায় ফেলার হুমকিও দিয়েছে কয়েকটি দেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে ৩২৬ জন প্রবাসীকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

গতকাল প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে করোনাভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের জন্য করণীয় বিষয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান পররাষ্ট্রমন্ত্রী . কে আব্দুল মোমেন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মহিবুল হক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, জনশক্তি কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব . আহমেদ মুনিরুছ সালেহীনসহ অন্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি কঠিন সিদ্ধান্ত। আমরা কতজনকে ফেরত আনব তা নিয়ে বৈঠকে বসেছি। বাস্তবতার নিরিখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। সবগুলো সিদ্ধান্ত একত্রে নিচ্ছি না। মূলত চার-পাঁচটি দেশ প্রবাসী বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে নিতে বলেছে। কিন্তু আমাদের প্রবাসীদের সংখ্যা অনেক বেশি। একটি দেশই যদি হয়, অনেক মানুষ হয়ে যায়।

এক প্রশ্নের উত্তরে . মোমেন বলেন, কয়েকটি দেশ আমাদের সঙ্গে প্রবাসীদের ফিরিয়ে নিতে যোগাযোগ করেছে। আমরা একটি একটি করে এগুলো নিষ্পত্তি করব। যেসব দেশ বলেছে আমাদের লোকগুলোকে অসুবিধায় ফেলবে, সেই দেশগুলো নিয়েই আমরা আগে কাজ করছি। যে মানুষগুলোকে ফিরিয়ে আনা হবে তারা মূলত অনিবন্ধিত। আমরা কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছি। যারা বাংলাদেশী প্রবাসীদের ফেরত পাঠাচ্ছেন তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদেরও অসুবিধা, আপনাদেরও অসুবিধা। এর মধ্যে মানবতার দিক থেকে আপনারা প্রবাসীদের সাহায্য করেছেন, সাহায্য আরো করুন।

সভায় প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য সরকার খাদ্য, চিকিৎসাসহ সামগ্রিক সুরক্ষার জন্য সব ধরনের সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এজন্য দূতাবাসগুলোর চাহিদা অনুসারে প্রায় সাড়ে কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া মানবিক বিবেচনায় কয়েকটি দেশ থেকে যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশী কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে কুয়েত থেকে ৩১৬ জন বাংলাদেশীকে ফেরত আনা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন