করোনা উপসর্গ নিয়ে চারজনের মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দেশের তিন জেলায় দুই শিশুসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে দুই শিশু, নেত্রকোনা ঝিনাইদহে আরো একজন করে মারা গেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে তাদের মৃত্যু হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

লক্ষ্মীপুর: গতকাল সকালে কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নে জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়। শিশুর মৃত্যুর পর ওই এলাকার ছয়টি বাড়ি লকডাউন করা হয়। 

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে জ্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে বছর মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়।

দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করেন কমলনগর উপজেলার আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম। 

তিনি জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে গত দুই দিনে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার চর মার্টিন ইউনিয়নের চর মার্টিন গ্রামের বছর বয়সী শিশুটি কয়েকদিন ধরে জ্বর শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। অসুস্থতা বেড়ে যাওয়ায় গতকাল সকালে শিশুটিকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনেন পরিবারের লোকজন। শিশুটির অবস্থার আশঙ্কাজনক হওয়ায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পথেই মৃত্যু হয়। ঘটনায় ওই এলাকার ছয়টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া একই উপজেলার তোরাবগঞ্জ ইউনিয়নে গত দুদিন থেকে শ্বাসকষ্ট খিঁচুনি রোগে ভুগছিল বছর মাস বয়সী এক শিশু। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতেই শিশুটি মারা যায়। ঘটনার পর তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়। এতে নয় বাড়িতে মানুষ চলাচলের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, করোনা উপসর্গ সন্দেহে ওই দুই শিশুর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। 

সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফ্ফার জানান, লক্ষ্মীপুরে পর্যন্ত সাতজনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরের টেস্ট ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এপ্রিল পর্যন্ত পাঠানো ছয়টি নমুনার ফলাফল হাতে এসেছে। তারা সবাই করোনামুক্ত। তবে গত বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে করোনা উপসর্গ সন্দেহে নিহত ৭০ বছরের বৃদ্ধের নমুনার ফলাফল এখনো আসেনি।

নেত্রকোনা: জেলার খালিয়াজুরী উপজেলায় নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ৫৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন। গতকাল ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তিনি মারা যান। 

স্থানীয় লোকজন প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে জ্বর নিয়ে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে যান তিনি। এর পর থেকে ধীরে ধীরে জ্বর বাড়তে থাকে। সর্দিসহ শ্বাসকষ্টেও ভুগছিলেন তিনি। গতকাল ভোরে তিনি মারা যান। বেলা ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন মারা যাওয়া ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করতে শ্মশানে মরদেহ নিয়ে যান। সময় স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে যান। 

নেত্রকোনার সিভিল সার্জন তাজুল ইসলাম জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির জ্বর, শ্বাসকষ্টের মতো নভেল করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকার কথা স্থানীয়রা জানালে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকদের নমুনা সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয়। 

খালিয়াজুরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা মিলি দে, রাজীব হোসেন ভুইয়া মুকুল মজুমদার মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। সরকারি নির্দেশনামতেই মারা যাওয়া ব্যক্তির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। 

ঝিনাইদহ: জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলায় জ্বর, সর্দি শ্বাসকষ্ট নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। করোনার সন্দেহ থাকায় মৃতের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এছাড়াও মৃতের বাড়ির পাশাপাশি রাস্তাটিও লকডাউন করে দিয়েছে প্রশাসন।

সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, কোটচাঁদপুর উপজেলায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছিলেন। দুই সপ্তাহ আগে তিনি ফরিদপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখান থেকে এসে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েক দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। সেই সঙ্গে তার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। গত শুক্রবার রাতে তার প্রতিবেশীদের কাছে অসুস্থতার সংবাদ পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা রাতেই তার বাড়িতে গিয়ে কাশি বমির চিকিৎসা দেন। হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিলে তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসার কথা বলেন। পরবর্তী সময়ে শনিবার ভোররাতে তার মৃত্যু হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন