আমদানি-রফতানিতে যুক্তদের নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ

রাশেদ এইচ চৌধুরী চট্টগ্রাম ব্যুরো

টানা ছুটিতেও শুল্কায়ন কার্যক্রম ঠিক রাখতে কাস্টমস এবং পণ্যের পরিচালন কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরে পণ্যের স্তূপ জমায় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে জেটিতে আসা জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর কাজ। নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে বাণিজ্যিক সক্ষমতা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে কঠিন পরিস্থিতিতে আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহনে যেসব ব্যক্তি বা সংস্থা সক্রিয় আছে, তাদের পক্ষ থেকে নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে।

ফ্রেইট ফরোয়ার্ডাররা আমদানিকারক রফতানিকারকের পক্ষে পণ্য আমদানি-রফতানিসংক্রান্ত যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করেন। শঙ্কার কথা জানিয়ে গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) পক্ষ থেকে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ছুটিকালীন জাহাজ চলাচলসহ দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোর অপারেশনাল কাজ সচল রাখা হয়েছে। কার্গো বিমান চলাচলও অব্যাহত আছে। ফলে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম, মোংলা পায়রা বন্দরে নিয়োজিত ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিদিন আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। কিন্তু যেহেতু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার জনচলাচলসহ গণপরিবহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কর্তৃক নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেও আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহন কাজে নিয়োজিত যানবাহনগুলো প্রতিনিয়ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমদানি-রফতানির স্বার্থ তুলে ধরলেও নিগৃহীত হতে হচ্ছে। পণ্য পরিবহনে যুক্ত যানবাহনের চলাচল নির্বিঘ্ন না রাখলে দেশের আমদানি-রফতানি কাজ এবং বন্দরগুলোর কাজ বিঘ্নিত হবে।

বাফার পরিচালক খায়রুল আলম সুজন প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ডোর টু ডোর বা ওয়ানস্টপ সেবা এবং এটুজেড (মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্টেশন) সেবা নিশ্চিত করতে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের পণ্য পরিবহনে বহুপক্ষীয় পরিবহন ব্যবস্থায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে হয়। এক্ষেত্রে পণ্য পরিবহনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি জানিয়ে সহযোগিতা চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে, যেন আমাদের পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহনগুলো বিনা বাধায় এবং নির্বঘ্নে দেশের সমুদ্রবন্দর বিমানবন্দরে আসা-যাওয়া করতে পারে এবং আমদানি-রফতানি পণ্য খালাস অথবা জাহাজীকরণ ঠিক রাখা যায়।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, ছুটিতে প্রথমদিকে রফতানি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, জরুরি চিকিৎসা, সেবাসামগ্রী শুল্কায়ন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম সীমিত করে আনা হয়েছিল। কিন্তু পরে পণ্য ওঠানো-নামানো, খালাসের মতো কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে শিল্পপণ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও শুল্কায়ন কার্যক্রমের পরিসর বাড়ানো হয়েছে।

বন্দর থেকে আমদানিকারকের পক্ষে পণ্য খালাসে যুক্ত থাকে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট। চট্টগ্রাম কাস্টমস ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিংয়ের (সিঅ্যান্ডএফ) বন্দরবিষয়ক সম্পাদক লিয়াকত আলী হাওলাদার বণিক বার্তাকে বলেন, কাস্টমস বন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে পরিস্থিতির উন্নতি করতে। যেসব আমদানিকারক খালাস নেয়ার উদ্যোগ নেবেন, তাদের পণ্য ডেলিভারি নিতে বহু রকমের বাধা অতিক্রম করতে হচ্ছে। পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত পরিবহন যানগুলো অবাধ নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করা বিশেষভাবে প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন