লকডাউনের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ

১৩১টি দেশে ব্যবহারকারীদের অবস্থানগত তথ্য প্রকাশ গুগলের

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে জনগণকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার। অবস্থায় জনগণ সরকারের নির্দেশ যথাযথভাবে মানছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য ১৩১টি দেশে ব্যবহারকারীদের অবস্থানগত তথ্য প্রকাশ করেছে গুগল। গত মাসে দোকান, পার্ক বা কর্মস্থলে মানুষের যাতায়াত কমেছে কিনা তা বিশ্লেষণের জন্যই মূলত গুগল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। খবর রয়টার্স।

এশিয়ার চীনে প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও পরবর্তী সময়ে কভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর রূপ ধারণ করেছে। আর এখন তো করোনাভাইরাসের এপিসেন্টার বা মূল কেন্দ্রই বদলেছে। আক্রান্ত মৃতের সংখ্যা দুদিক থেকেই চীনকে ছাড়িয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয়েছে গত মাসে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে বিভিন্ন দেশে একের পর এক লকডাউনের ঘোষণা এসেছে। কারণ প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু লকডাউন করলেও জীবনযাপন তো আর পুরোপুরি থমকে যেতে পারে না। জরুরি প্রয়োজনেই মানুষকে দৈনন্দিন পণ্যের দোকান ফার্মেসিতে যেতে হচ্ছে। জরুরি সেবাকর্মীদেরও কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু চলাচলও হতে হবে নিয়ন্ত্রিত।

কারণেই বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের জন্য মানুষের চলাচল নজরদারিতে আনা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এক্ষেত্রে গুগলের তথ্য তাদের জন্য সহায়ক হতে পারে। কারণ বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি মানুষ রয়েছে, যারা স্মার্টফোনে গুগলের বিভিন্ন সেবা ব্যবহার করে। এসব সেবার মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অবস্থানের তথ্য চলে যায় গুগলের কাছে, যা আজ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলোর জন্য সবচেয়ে বড় তথ্যভাণ্ডারে পরিণত হয়েছে।

গুগলের প্রতিবেদনে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত মেট্রোরেল, ট্রেন বাসস্টেশন, মুদিপণ্যের দোকানসহ বিভিন্ন অবস্থানে মানুষের চলাচল তার আগের পাঁচ সপ্তাহের তুলনায় কতটা বেড়েছে বা কমেছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

কভিড-১৯ রোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। গুগলের পর্যবেক্ষণাধীন সময়ে দেশটিতে রেস্তোরাঁ সিনেমা হলের মতো জায়গায় মানুষের চলাচল কমেছে ৯৪ শতাংশ। সময়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হয়েছে ৬৩ শতাংশ কম মানুষ। এছাড়া মুদিপণ্যের দোকান ফার্মেসিগুলোয় মানুষের চলাচল কমেছে ৮৫ শতাংশ। আর পার্কে ভ্রমণ কমেছে ৯০ শতাংশ।

একটু দেরিতে প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও সংক্রমণের সংখ্যায় অন্য সব দেশকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে প্রথম রাজ্যজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয় ক্যালিফোর্নিয়ায়। সেখানে বিভিন্ন রিটেইল স্পট বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের আনাগোনা অর্ধেকে নেমে এসেছে। দেশটিতে ধরনের চলাচল সবচেয়ে বেশি ২৯ শতাংশ কমেছে আরকানসাস অঙ্গরাজ্যে। সেখানে রাজ্যজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা না হলেও জনগণ নিজ উদ্যোগেই যতটা সম্ভব সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে।

জাপানে রিটেইল বিনোদন স্পটে মানুষের চলাচল কমেছে ২৬ শতাংশ। আর দেশটিতে কর্মস্থলের উদ্দেশে যাতায়াত কমেছে মাত্র শতাংশ। সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে মুদিপণ্যের দোকানে মানুষের চলাচল আগের চেয়ে বেড়ে যাওয়ায় এসব দেশের কর্তৃপক্ষগুলোকে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো বে অঞ্চলের কয়েকটি কাউন্টিতে পার্কে মানুষের চলাচল এতটা বেড়েছে যে পরবর্তী সময়ে এসব জায়গা বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

এদিকে গুগলের মতো ফেসবুকেরও বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। বিভিন্ন দেশে ধরনের প্রতিবেদন তৈরির জন্য সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি বিভিন্ন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যবহারকারীদের অবস্থানগত তথ্য সরবরাহ করলেও এখন পর্যন্ত নিজেরা কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন