ভারতে নভেল করোনাভাইরাস

সংক্রমণের এক-তৃতীয়াংশের পেছনেই সংযোগ তাবলিগ জামাতের

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভারতে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় তিন হাজার জনের এক-তৃতীয়াংশের সঙ্গেই সংযুক্ত দিল্লির নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতের সমাবেশ। গতকাল এক বিবৃতিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানায় কেন্দ্র সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। খবর হিন্দুস্তান টাইমস এনডিটিভি।

ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে ৬০১টি নতুন সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে। মোট সংক্রমণের ৩০ শতাংশ নিজামুদ্দিনের ওই জমায়েতের প্রতিনিধি ছিলেন। দেশের ১৭টি রাজ্য কেন্দ্রশাসিত এলাকায় খোঁজ মিলেছে তাবলিগ জামাত থেকে সংক্রমিত রোগীর।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল বলেন, আমাদের কাছে প্রতিদিন নতুন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। ১৭টি রাজ্যে সংক্রমিত মানুষের খোঁজ মিলেছে, যারা নিজামুদ্দিনের জমায়েতে উপস্থিত ছিল। তাই মানুষ ধরে ধরে আমাদের নমুনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে। একজন বাদ যাওয়া মানে আমাদের সামনে বড় বিপদ।

তাবলিগ জামাতের জমায়েতে অংশ নেয়া এমন মানুষের সংস্পর্শে এসেছে প্রায় ২২ হাজার মানুষ। সেই সন্দেহভাজনদের দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। করোনার সংক্রমণের হটস্পট হিসেবে দেশব্যাপী যে ১৪টি জায়গা চিহ্নিত হয়েছে, সেই তালিকায় একদম উপরে রয়েছে নিজামুদ্দিনের জমায়েত। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে আরো বলা হয়, ভারতে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ৪২ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৪০ বছর। ৩৩ শতাংশের বয়স ৪১ থেকে ৬০। এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে ষাটোর্ধ্বদের হার ১৭ শতাংশ এবং বিশের কম বয়সীদের আক্রান্তের হার শতাংশ।

ভারতে পর্যন্ত কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ৬৮ জন মারা গেছেন। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়েছেন অন্তত ১৮৩ জন। রাজ্যগুলোর মধ্যে করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি কাবু করতে পেরেছে মহারাষ্ট্রকে। তার পরেই রয়েছে তামিলনাডু।

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের তাবলিগ জামাতের একটি আয়োজন গত মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ মসজিদে শুরু হয়। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরগিজস্তানের প্রতিনিধিসহ প্রায় দুই হাজার মানুষ ওই আয়োজনে অংশ নেয়। নিজামুদ্দিন মারকাজের ওই আয়োজন ১৫ মার্চ পর্যন্ত চলে। অনুষ্ঠান শেষেও অনেকে সেখানে অবস্থান করে। ২৪ মার্চ ভারতজুড়ে লকডাউন শুরুর সময়েও সেখানে প্রায় দেড় হাজার মানুষের অবস্থান ছিল। ভারতে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট হয়ে উঠেছে নিজামুদ্দিনের ছয়তলা ভবনের ওই জমায়েত।

ভারত সরকার দাবি করেছে, ওই জমায়েতে অংশ নেয়াদের মধ্য থেকে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, আসাম, দিল্লি, হিমাচল, হরিয়ানা, জম্মু কাশ্মীর, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, উত্তরাখণ্ড উত্তর প্রদেশ থেকে।

এদিকে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন চলছে। ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত তা বহাল থাকবে। লকডাউনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আতঙ্ক গ্রাস করছে ১৩০ কোটি মানুষের দেশটিতে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন