নতুন চুক্তি করছেন না ভারতীয় রফতানিকারকরা

বণিক বার্তা ডেস্ক

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভারতজুড়ে লকডাউন চলছে। ২১ দিনের লকডাউনে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটির জনজীবন। মানুষ রয়েছে ঘরবন্দি। শ্লথ হয়ে এসেছে ব্যবসা-বাণিজ্য। প্রভাব পড়েছে আমদানি-রফতানিতেও। পরিস্থিতিতে চাল রফতানিতে নতুন কোনো চুক্তি সই থেকে বিরত রয়েছেন ভারতীয় রফতানিকারকরা। এমনকি লকডাউনের প্রভাবে শ্রমিক না থাকায় বিদ্যমান চুক্তির আওতায় চাল সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানান তারা। ফলে আগামী দিনগুলোয় ভারত থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যটি রফতানিতে বড় ধরনের পতন দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খবর রয়টার্স বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। 

বিষয়ে ভারতের রাইস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (আরইএ) প্রেসিডেন্ট বিভি কৃষ্ণ রাও বলেন, লকডাউনের কারণে পণ্যবাহী ট্রাক কিংবা কার্গো পাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। ট্রাকচালকরা রাস্তায় নামতে চাইছেন না। শ্রমিকরা মিল বন্দর ছেড়ে নিজ নিজ বাড়ি চলে গেছেন। পরিস্থিতিতে আগের চুক্তি মেনে চাল রফতানি কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণে আপাতত নতুন চুক্তি বন্ধ রেখেছেন অনেক রফতানিকারক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে চাল রফতানিতে নতুন চুক্তি করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা। 

৪৪টির বেশি দেশে চাল রফতানি করে ভারতীয় প্রতিষ্ঠান লাল মহল গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান প্রেম গর্গ বলেন, ২১ দিনের লকডাউনের কারণে বর্তমানে ভারত থেকে চাল রফতানি চার-পাঁচ গুণ কমে গেছে। আমরা আমদানিকারকদের বলেছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের রফতানি শুরু করব। তবে বিদ্যমান পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হতে পারে, তা কেউ জানে না। 

ভারত বিশ্বের শীর্ষ চাল রফতানিকারক দেশ। দেশটি থেকে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দেশগুলোয় সবচেয়ে বেশি চাল রফতানি হয়। ফলে ভারত থেকে রফতানি বন্ধ হলে এশিয়া আফ্রিকার অনেক দেশে খাদ্যপণ্যটির দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে সংকটে পড়বেন দুই অঞ্চলের কোটি কোটি দরিদ্র মানুষ। 

ভারতীয় রফতানিকারকদের তথ্য অনুযায়ী, স্বল্প সময়ের নোটিসে লকডাউন শুরু হওয়ায় চার লাখ টন বাসমতী ছাড়া অন্যান্য জাতের চাল এক লাখ টন বাসমতী চাল রফতানির জন্য পাইপলাইনে আটকে আছে। ভারত থেকে রফতানি হওয়া বাসমতী বাদে অন্যান্য জাতের চালের প্রধান রফতানি গন্তব্য বাংলাদেশ, নেপাল, বেনিন সেনেগাল। অন্যদিকে দেশটি থেকে ইরান, সৌদি আরব ইরাকে সবচেয়ে বেশি প্রিমিয়াম বাসমতী চাল রফতানি হয়। 

তবে আপাতত বন্ধ থাকলেও লকডাউনের পর পরই ভারতীয় চালের রফতানি চাহিদা অনেকটাই বাড়তে পারে বলে মনে করছে দেশটির চাল রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ওলাম। প্রতিষ্ঠানটির এক নোটে বলা হয়েছে, ভারতে চালের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। দেশের বাজারে চাহিদা বাড়লেও রফতানির জন্য প্রচুর চাল হাতে রয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর কারণে আন্তর্জাতিক বাজারেও চাহিদা বাড়তির দিকে রয়েছে। ফলে লকডাউন উঠে গেলে ভারতের চাল রফতানি খাতে গতি সঞ্চার হতে পারে, বাড়তে পারে রফতানি। 

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন