উৎপাদন মন্দায় চা রফতানিতে আয় কমেছে কেনিয়ার

বণিক বার্তা ডেস্ক

পূর্ব আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার রফতানি পণ্যের মধ্যে অন্যতম চা। ২০১৯ সালে দেশটি থেকে পানীয় পণ্যটির রফতানিতে নিম্নমুখী প্রবণতা বজায় ছিল। ফলে খাত থেকে কমেছে দেশটির আয়। মূলত প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে গত বছর দেশটিতে চা উৎপাদন কমেছে, যা পণ্যটির রফতানি কমার পেছনে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। এদিকে চায়ের সঙ্গে সঙ্গে সময়ে দেশটি থেকে কফি রফতানিতেও মন্দা ভাব বজায় ছিল। খবর বিজনেস ডেইলি আফ্রিকা।

কেনিয়া ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের (কেএনবিএস) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে চা রফতানি করে দেশটি মোট ১১ হাজার ৩৪৫ কোটি কেনিয়ান শিলিং (স্থানীয় মুদ্রা) আয় করেছে, আগের বছরের তুলনায় যা ১৮ দশমিক ২৮ শতাংশ কম। ২০১৮ সালে পানীয় পণ্যটি রফতানি থেকে দেশটি আয় করেছিল ১৩ হাজার ৮৮৪ কোটি শিলিং। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে চা রফতানি থেকে কেনিয়ার আয় কমেছে হাজার ৫৩৯ কোটি শিলিং। 

গত বছর কেনিয়াতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম ছিল। শুষ্ক আবহাওয়া ওই সময় দেশটির চা বাগানগুলোর উৎপাদন কমিয়ে এনেছে। এছাড়া প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে উৎপাদিত চায়ের গুণগত মানও কমে গিয়েছিল। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে কেনিয়ার ব্ল্যাক টির চাহিদায় ধস নামে। উৎপাদন চাহিদা উভয় হ্রাস পেয়ে গত বছর দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি কমে যায়, যার প্রভাব পড়ে আয়ে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে দামে মন্দা ভাব গত বছর চা রফতানি থেকে দেশটির আয় কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। 

কেএনবিএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে কেনিয়ার বাগানগুলোতে সব মিলিয়ে লাখ ৭৪ হাজার ৯৩৪ টন চা উৎপাদন হয়েছে। আগের বছর দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদনের পরিমাণ ছিল লাখ হাজার ৭৮৫ টন। সে হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে চায়ের উৎপাদন ২৬ হাজার ৮৫১ টন কমেছে।

এদিকে চায়ের সঙ্গে গত বছর কফি রফতানি থেকেও কেনিয়ার আয় কমেছে। কেএনবিএসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে কফি রফতানি থেকে দেশটি আয় করেছে মোট হাজার ৩১ কোটি শিলিং। আগের বছরে খাতে দেশটির আয় ছিল হাজার ৩০৯ কোটি শিলিং। এক বছরের ব্যবধানে কফি রফতানি থেকে দেশটির আয় কমেছে ২৭৮ কোটি শিলিং। 

তবে ২০১৯ সালে কেনিয়া থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে কফি রফতানি বেড়েছে। মূলত পণ্যটির দামে দীর্ঘকালীন মন্দা ভাব দেশটির আয় কমাতে মূল ভূমিকা পালন করেছে। কেএনবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ৪৮ হাজার ৭২৬ টন কফি আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হয়েছে। ২০১৮ সালে পণ্যটি রফতানির পরিমাণ ছিল ৪৪ হাজার ৬৭৯ টন। 

এদিকে কেনিয়ার টি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি প্রত্যাশা করছে, চলতি বছর দেশটিতে চায়ের উৎপাদনে চাঙ্গা ভাব বজায় থাকতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে দেশটিতে মোট ১৫ কোটি লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, ডিসেম্বরের তুলনায় যা ১৫ শতাংশ বেশি এবং আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক শতাংশ বেশি। 

উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে চলতি বছর কেনিয়ার চা রফতানি খাতও ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি চা রফতানি হয় পাকিস্তান, মিসর, যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত সুদানের বাজারে। 

 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন