কভিড-১৯ মহামারীতে ফ্লাইট বাতিল

যাত্রীদের বিমান ভাড়া ফেরত দিতে এয়ারলাইনসগুলোর প্রতি নির্দেশনা

বণিক বার্তা ডেস্ক

কভিড-১৯ মহামারীতে ফ্লাইট বাতিলের ফলে যাত্রীদের বিমান ভাড়া ফেরত দিতে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। শুক্রবার দেশটির পরিবহন বিভাগ (ডিওটি) নির্দেশনা দেয়। খবর ব্লুমবার্গ।

-মেইলে দেয়া এক সংবাদ বিবৃতিতে ডিওটি জানায়, ফ্লাইট বাতিলের পর উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেএমন অসংখ্য অভিযোগ পাচ্ছে তারা।

উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর নিয়ন্ত্রণের বাইরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ফ্লাইট বাতিল হলেও টিকিট মূল্য, অন্যান্য ঐচ্ছিক ফিসহ যাত্রীদের অর্থ ফেরত দিতে এয়ারলাইনসগুলোর বাধ্যবাধকতা ফুরিয়ে যায়নি।

অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্যান্য দেশে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্যই যাত্রীদের অর্থ ফেরতের নির্দেশনা প্রযোজ্য বলে জানায় ডিওটি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকেও গত বুধবার একই ধরনের নির্দেশনা দেয়া হয়। ইইউ আইনে সাতদিনের মধ্যে যাত্রীদের অর্থ ফেরত দেয়ার বিধান রয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানায় জোটটি।

ইইউর ট্রান্সপোর্ট কমিশনার অ্যাডিনা ভ্যালিয়াঁ এক -মেইল বিবৃতিতে বলেন, উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে বাতিল হওয়া ফ্লাইটগুলোর টিকিটের অর্থ অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। তারা অবশ্যই কোনো ভাউচার অফার করতে পারে, তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে গ্রাহক সেটা নিতে চান কিনা তা নিশ্চিত করা।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাটি এরই মধ্যে ধুঁকতে থাকা আকাশসেবা শিল্পের জন্য আরেকটি হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে লকডাউনের পরিপ্রেক্ষিতে নাটকীয় চাহিদা পতনে আর্থিক সংকটে ভোগা উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর জন্য বেইলআউট প্যাকেজ ঘোষণা করতে হয়েছে। এয়ারলাইনসগুলো যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হাজার কোটি ডলারের ঋণ বেতন সহায়তা পেতে শুরু করেছে। 

ট্রান্সপোর্টেশন সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের বরাতে জানা যায়, বৃহস্পতিবার নাগাদ গত বছরের তুলনায় যাত্রী পরিবহন ৯৫ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালের স্বাভাবিক এক কর্মদিবসে যেখানে ২৪ লাখ যাত্রী পরিবহন হয়েছে, সেখানে গত বৃহস্পতিবার মাত্র লাখ ২৪ হাজার ২১ জন যাত্রী পরিবহন হয়েছে।

উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো প্রতিদিন তাদের হাজারো ফ্লাইট বাতিল করছে এবং আগামী কয়েক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে তা বহাল থাকবে। ফ্লাইট চাহিদা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসায় অনেক উড়োজাহাজ সংস্থাই সরকারি সহায়তার জন্য আবেদন করেছে।

এদিকে কয়েকটি ভোক্তা অধিকার সংগঠনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যাত্রীদের অর্থ ফেরত দিতে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর প্রতি ডিওটি নির্দেশনা দিয়েছে বলে জানান ট্রাভেলার্স ইউনাইটেডের প্রেসিডেন্ট চার্লি লিওচা।

লিওচা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, আবহাওয়ার কারণে ফ্লাইট বিলম্ব ব্যতিরেকে যখন কোনো উড়োজাহাজ সংস্থা নিজেদের কারণে ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্ব করে, তখন উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোকে যাত্রীদের অর্থ ফেরত দিতে হবে। তবে অনেক ভ্রমণকারীই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন বলেও জানান তিনি। 

এক -মেইল বিবৃতিতে ইউনাইটেড এয়ারলাইনস জানায়, উড়োজাহাজ সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বা ফোনে উপযুক্ত যাত্রীরা তাদের রিফান্ডের অনুরোধ করতে পারবেন।

যেসব যাত্রী নিজেই ফ্লাইট পরিবর্তন করতে চান, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ উভয় স্থানেই ভিন্ন নীতি অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলো চাইলে ভাউচার অফার করতে পারে কিন্তু টিকিটের অর্থ ফেরতের বাধ্যবাধকতা নেই।

বিবৃতিতে ডিওটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবহন সংস্থাগুলো তাদের যাত্রীদের জানাচ্ছে যে তারা শুধু ভাউচার বা ভবিষ্যৎ সফরের জন্য ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। কয়েক দশক ধরেই যাত্রীদের অর্থ ফেরতের নীতি কার্যকর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। উদাহরণ হিসেবে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলা এবং ২০০৫ সালের হারিকেন ক্যাটরিনার কথা উল্লেখ করে সংস্থাটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন