১২৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। খেটে খাওয়া মানুষের আয়-রোজগার বন্ধ। স্থবির সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। অর্থনীতির সূচকগুলো নড়বড়ে। একই সঙ্গে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা পজিটিভ রোগী। চলমান অতিমারী করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই মোটা অংকের ঋণ খুঁজছে ভারত। করোনা মোকাবেলায় বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৬০০ কোটি ডলার ঋণের জন্য চেষ্টা করছে দেশটি। খবর ব্লুমবার্গ।
এরই মধ্যে ভারতকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বিশ্বব্যাংক। ঋণ নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার জন্য আলোচনা করছে। তবে এশিয়ার এ দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঋণ পাওয়ার বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এআইআইবি ও এডিবির কাছ থেকে ঋণের বিষয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনা পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৯০২। মৃতের সংখ্যা ৬৮। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০১ জন শনাক্ত ও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণ হচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ে। গত ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ভারতে মাত্র ৬৬ হাজার মানুষের মধ্যে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সংখ্যাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত পরীক্ষার ৩০ ভাগের এক ভাগ। করোনা পরীক্ষার দিক দিয়ে এশিয়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলের অনেক দেশের তুলনায় যোজন যোজন দূরত্বে পিছিয়ে আছে ভারত।
এমন অবস্থায় দেশটিতে ব্যাপকহারে করোনা পরীক্ষা চালানো প্রয়োজন। এজন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ টেস্টিং কিটস। আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রচুর ভেন্টিলেটর। পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) বেডও বাড়ানো জরুরি। রয়েছে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পার্সোনাল প্রটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সংগ্রহের চাপও। এসবের জন্য মোটা অংকের অর্থের দরকার ভারতের।
এ সংকটময় পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক ভারতের ডিরেক্টর জুনাইদ আহমেদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, মহামারীটি কেবল স্বাস্থ্য খাতেই চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে না, চ্যালেঞ্জে ফেলেছে সামাজিক ও আর্থিক খাতকেও। এমন অবস্থায় আমরা (বিশ্বব্যাংক) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও অর্থনৈতিক উদ্যোগগুলো সরকারের (ভারত) সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।