ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান

আসছে পণ্য নিয়ে ফিরছে যাত্রী নিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোর প্রথম শর্ত হলো জনসমাগম এড়িয়ে চলা। লক্ষ্যে সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। বন্ধ রেখেছে গণপরিবহন। তবে কেবল পণ্য বহনের শর্তে সচল রয়েছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান রাজধানীতে আসছেও নিয়মিত। কিন্তু এর মধ্যেই অভিযোগ উঠেছে এসব ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের একদল চালকের বিরুদ্ধে, যারা ঢাকা ত্যাগ করছেন যাত্রী নিয়ে। এসব যানবাহনে গাদাগাদি করে যাত্রী পরিবহনের কারণে সংক্রমণ ঝুঁকিও বাড়ছে। 

সড়ক, নৌ আকাশপথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ রেখে সবাইকে নিজ নিজ বাসায় থাকতে বলেছে সরকার। সড়কপথে যাত্রীবাহী পরিবহন বন্ধ থাকলেও জরুরি পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখতে ট্রাক-পিকআপের মতো বাহনকে নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে। এসব পণ্যবাহী বাহনে যাত্রী বহনে নিষেধ করা হলেও কিছু চালক যাত্রীরা তা মানছেন না।

রাজধানীর বৃহৎ সবজি, মাছ মাংসের বাজার কারওয়ান বাজার। প্রতিদিনই এখানে উত্তর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে নানা ধরনের সবজি ফলমূল নিয়ে আসে প্রচুর ট্রাক কাভার্ড ভ্যান। পণ্য নামিয়ে কিছু ট্রাক কাভার্ড ভ্যান বিভিন্ন মালামালে বোঝাই হয়ে ফিরে যায়। এর বাইরে কিছু খালি পণ্যবাহী যানবাহন ফিরে যায় যাত্রী নিয়ে। 

গণপরিবহন বন্ধ থাকায় প্রতি সন্ধ্যার পর পরই কারওয়ান বাজারের প্রজাপতি গুহার পাশে রাজধানীর বাইরে গমনেচ্ছুদের ভিড় তৈরি হয়। পিকআপ কাভার্ড ভ্যানের চালকরা কারওয়ান বাজারে পণ্য নামিয়ে সার্ক ফোয়ারা মোড় থেকে ইউটার্ন নিয়ে উপস্থিত হন প্রজাপতির গুহার সামনে। সেখান থেকে যাত্রী তুলে ত্রিপল ঢাকা অবস্থায় যানবাহনগুলো রওনা দেয় উত্তর দক্ষিণ অঞ্চলে। 

স্থানটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দেড় টনের একটি জ্যাক পিকআপে উঠেছেন ১৭ জন যাত্রী। তাদের কেউ যাবেন সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত। কেউ আবার টাঙ্গাইল বা মির্জাপুর। ১৫০ কিলোমিটার পথ ছোট পিকআপে চেপে পাড়ি দেয়ার কারণ জানতে চাইলে যাত্রীরা জানান, গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে যেতে হচ্ছে। কথা শেষ হওয়ার আগেই পিকআপটি ঢেকে দিলেন চালক তার সহযোগী।

এভাবে যাত্রী বহনে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। এর আগে গত ২৮ মার্চ নিষেধ উপেক্ষা করে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক বস্তার ওপর যাত্রী তুলে ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছিল উত্তরবঙ্গের পথে। টাঙ্গাইলে সে ট্রাক উল্টে বস্তার নিচে চাপা পড়ে প্রাণ যায় ছয়জনের। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট রাজীব বর্মণ জানান, ওইদিন ভোর সাড়ে ৫টার দিকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কান্দিলা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে সংঘটিত দুর্ঘটনায় আরো ১০ জন আহত হয়েছিলেন।

পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানে যাত্রী বহনের ঘটনা শুধু উত্তর দক্ষিণ অঞ্চলেই নয়, ঘটছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লায় পণ্যবাহী পিকআপে চলছে যাত্রী পরিবহন। এসব পরিবহনে অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে। যাত্রীদের চাপ থাকায় এসব পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক পিকআপের চালকরাও হাতিয়ে নিচ্ছেন অতিরিক্ত ভাড়া।

বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বণিক বার্তাকে বলেন, পণ্যবাহী গাড়িতে যাত্রী বহন বেআইনি। কেউ যদি আইন ভঙ্গ করে ধরনের কাজ করে, তাহলে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন