শেরপাদের জীবিকায়ও নভেল করোনাভাইরাসের ছায়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রতি বছরই পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টে আরোহণ মৌসুমে জমজমাট হয়ে ওঠে নেপালের পার্বত্য শহর খুমজুং। কিন্তু এ বছর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিপরীত। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার এভারেস্ট আরোহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, যা জীবিকা সংকটে ফেলেছে স্থানীয় শেরপাদের। খবর এএফপি।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত খুমজুংয়ে কেউ কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়নি। এ শহরে বিখ্যাত শেরপা নৃগোষ্ঠীর বহু মানুষের বাস, যারা পর্বতারোহীদের আরোহণ বিষয়ে সহায়তা করে থাকে। মূলত, তাদের জীবিকার মূল উৎসই হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আরোহীদের গাইড হিসেবে কাজ করা। কিন্তু বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও লকডাউনের কারণে হিমালয় এখন আরোহী ও পর্যটকশূন্য।

এ পরিস্থিতিতে আরো অনেকের মতো ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ফুরবা ন্যামগাল শেরপা। ফুরবা জানান, তিনি ১৭ বছর বয়স থেকে এভারেস্ট ও অন্য পর্বতশৃঙ্গ আরোহণ করে আসছেন। গাইড এবং অভিযান কর্মী হিসেবে উপার্জিত আয় দিয়ে বহন করছেন জীবিকা। কিন্তু এবার কোনো আরোহী কিংবা পর্যটক পাচ্ছেন না। ফলে দিন কাটাচ্ছেন অনিশ্চয়তার মধ্যে।

দেখা গেছে, খুমজুংয়ের ঘরগুলোর দেয়ালে পর্বতারোহণের জন্য প্রয়োজনীয় দড়ি ও গাইতি অলসভাবে ঝুলছে। খালি পড়ে আছে হোটেলগুলো। চায়ের দোকানগুলোতেও কোনো ভিড় নেই। ১২ মার্চ থেকে পর্বতারোহণ ও অভিযান কার্যকরভাবে বন্ধ ঘোষণা করে নেপাল। এর পরই এ অঞ্চলের পর্যটননির্ভর জনগোষ্ঠীর জীবিকা সংকট আরো ঘনীভূত হয়। তাছাড়া আরোহণ পারমিট বাবদ সরকারকে হারাতে হচ্ছে অন্তত ৪০ কোটি ডলার। উল্লেখ্য, এভারেস্টে আরোহণের প্রতি পারমিটের জন্য একজনের খরচ হয় ১১ হাজার ডলার।

তবে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সরকারের চেয়েও আর্থিক ক্ষতি বেশি হচ্ছে শেরপা ও গাইডদের। বিশেষ করে এ পেশার ওপর তাদের অনেকের পুরো পরিবার নির্ভরশীল হওয়ায় সংকট তীব্রতর হচ্ছে। কারণ, এপ্রিল থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত আরোহণ মৌসুমের আয় দিয়েই তাদের পুরো বছর চলতে হয়। একেকজন শেরপার প্রতি মৌসুমে আয় হয় ৫-১০ হাজার ডলার।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন