৩ জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

জ্বর, সর্দি-কাশি শ্বাসকষ্ট নিয়ে বগুড়া, লক্ষ্মীপুর সুনামগঞ্জে শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে তাদের মৃত্যুর পর আশপাশের অন্তত ২০টি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

বগুড়া: জেলার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় সে মারা যায়। শিশুটির মৃত্যুর পর আশপাশের তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ১৩ বছর বয়সী ওই শিশুকে বেলা সাড়ে ৩টায় করোনা আইসোলেশন কেন্দ্র মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে সন্ধ্যা ৭টায় মারা যায়। শিশুটির পায়ে ইনফেকশন ছিল। ইনফেকশনের চিকিৎসা নিত গ্রাম্য কবিরাজের কাছে। কবিরাজ চিকিৎসার নাম করে মাথায় প্রচুর পানি ঢালত। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকে শিশুটির নিউমোনিয়ার উপসর্গ দেখা দেয়। পরিবারের লোকজন স্থানীয় গ্রাম্য ডাক্তার দেখানোর পর বেশি অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যায় এবং বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় সে মারা যায়।

বগুড়ার গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রওনক জাহান জানান, মৃতের বাড়িসহ আশপাশের তিনটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। তার দাফন স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী করা হয়েছে। 

বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন গাওসুল আযিম চৌধুরী জানান, মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে যে শিশুটি মারা গেছে তার পায়ে ইনফেকশন ছিল। গ্রাম্য কবিরাজ স্থানীয় ডাক্তার দেখিয়েছে। যখন শিশুটি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তখন হাসপাতালে নেয়া হয়। আমাদের চিকিৎসকরা যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। সন্ধ্যায় মারা যাওয়ার পর পরই তার নমুনা সংগ্রহ করে বৃহস্পতিবার রাজশাহী পাঠানো হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর : জেলায় করোনাভাইরাস উপসর্গ নিয়ে ৭০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় ওই বাড়ির ১৫টি পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। গতকাল সকালে সতর্কতার সঙ্গে বৃদ্ধের দাফন সম্পন্ন হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফ্ফার।

এর আগে গত বুধবার রাতে জ্বর, সর্দি কাশি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান ওই বৃদ্ধ। পরে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সিভিল সার্জন জানান, ওই বৃদ্ধ কয়েকদিন থেকেই অসুস্থ। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন কিনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরো জানান, বৃদ্ধের দুই ছেলে দুই ভাতিজা ইতালি প্রবাসী। তাদের মধ্যে দুই ভাতিজা বাড়িতে আসেন। সময় তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়। বৃদ্ধের মৃত্যুর পর ওই এলাকার ১৫টি পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জ: জেলার দোয়ারাবাজারে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা ওমান প্রবাসীর (৪৯) মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তিনি গত ১৮ মার্চ দেশে আসেন। আসার পর থেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।

পরিবারের লোকজন জানান, জয়নাল আবেদীন দুই বছর ওমান ছিলেন। গত ১৮ মার্চ দেশে আসেন। বাড়িতে আসার পর থেকে তিনি হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। গতকাল সকালে হঠাৎ করে তার পেটে ব্যথা শুরু হয়। তাত্ক্ষণিক গ্রামের একজন পল্লী চিকিৎসককে আনেন পরিবারের লোকজন। ওই পল্লী চিকিৎসক তাকে কিছু ওষুধ দিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়ার প্রস্তুতিকালে তিনি মারা যান।

ব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ওই প্রবাসী দীর্ঘদিন ধরে হূদরোগে ভুগছিলেন। তার শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ ছিল না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন