খুলনায় ৪ হাসপাতাল ঘুরেও মেলেনি চিকিৎসা, স্কুলছাত্রের মৃত্যু

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, খুলনা

মহানগরীর খালিশপুরের স্কুল ছাত্র রিফাত লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে তার শারীরিক সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একে একে ৪টি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে নেয়া হয়। কিন্তু কোথাও তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যায় রিফাত মৃত্যুকেই বরণ করে নেয়।

রিফাত খালিশপুর হাউজিং বিহারী ক্যাম্প নং-১-এর বাসিন্দা মো. কাশেমের ছেলে। খালিশপুর ওব্যাট প্রাইমারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছিল রিফাত। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

রোগীর নানা মো. কলিমুদ্দীন জানান, তার নাতী রিফাতকে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে শারীরিক সমস্যার কারণে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক নেই বলে তাকে ভর্তি নেয়া হয়নি। কাগজে ওষুধ লিখে খাওয়ানোর জন্য বলা হয়। আর সমস্যা হলে বুধবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু শারীরিক সমস্যা প্রকট দেখার পরও তাকে ভর্তি করা হয়নি। এরপর তিনি রিফাতকে নিয়ে খালিশপুর ক্লিনিকে যান। সেখানে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে ভাল করে পর্যবেক্ষণ না করেই বলে দেন কোন চিকিৎসক নেই। রোগী ভর্তি করা যাবে না। এরপর তাদের পরামর্শে রিফাততে সার্জিক্যাল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেও তাকে ভর্তি না নিয়ে ময়লাপোতার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারাও একইভাবে রোগীকে ভর্তি না নিয়ে ফেরৎ দিয়ে দেন। এভাবে হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে রিফাত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা যায়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শেখ আতিয়ার রহমান জানান, করোনা ভাইরাস প্রদুর্ভাব নিয়ে চিকিৎসকরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু সাধারণ রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাবেন না সে রকম পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। বিষয়টি আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।

খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ জানান, কোন হাসপাতালে সাধারণ রোগীর চিকিৎসা সেবা বন্ধ করা হয়নি। তবে, হাসপাতাল ও ক্লিনিকে করোনার কারণে মানবিকতা কমছে। দায়বদ্ধতা থেকে এ রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়া উচিৎ ছিল। তবে কেন রোগীকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেয়া হল না তা খোজ খবর নিয়ে দেখা হবে।

মহানগরীর খালিশপুর ক্লিনিকের এমডি মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘লিভার সিরোসিস রোগীর জন্য আইসিইউ দরকার হয়। জটিল অবস্থায় থাকার কারণেই ওই রোগীকে ভর্তি না নিয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে সার্জিক্যালে রেফার্ড করেছেন হয়তো। যা আমাদের ক্লিনিকের নিয়ম মেনেই হতে পারে। তারপরও বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখা হবে।’

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন