কভিড-১৯

লেবানন, ইরাক ও সিরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ছে ‘গুপ্ত’ সংক্রমণ

বণিক বার্তা ডেস্ক

লেবানন, ইরাক সিরিয়ায় নভেল করোনাভাইরাসজনিত কভিড-১৯- আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের আশঙ্কা, তিনটি দেশের সরকারই আক্রান্তদের বিষয়ে যে পরিসংখ্যান দিচ্ছে তা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরছে না। খবর গার্ডিয়ান

সহায়তা কর্মী আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, লেবানন ইরাকের বেশকিছু অঞ্চলে কয়েক হাজার মানুষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু বিষয়টি সরকারিভাবে প্রকাশ করা হচ্ছে না, যা পরবর্তী তিন মাসের জন্য এসব অঞ্চলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। এছাড়া মধ্য দক্ষিণ ইরাক এবং দক্ষিণ লেবাননে ভাইরাসে আক্রান্তদের ঘরে আটকে রাখছে রাজনৈতিক দলগুলো। তারা বাড়িঘরে পাহারাও বসিয়েছে।

তবে এর থেকেও খারাপ চিত্র দেখা গেছে সিরিয়ায়। দুর্বল রাষ্ট্রকাঠামো অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৭০ লাখ জনগোষ্ঠী নিয়ে দেশটির ভাইরাস পরিস্থিতি দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে। তাছাড়া দেশটির বড় একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় সেখানে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বর্তমানে তিন দেশের মধ্যে স্থল আকাশপথে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন বলা চলে। কিন্তু আশঙ্কার বিষয় হলো, মধ্য মার্চের দিকে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার আগেই ভাইরাস আক্রান্ত বহু মানুষ নিজ দেশে ফিরে আসে।

এর মধ্যে লেবাননে সারা বিশ্ব থেকেই বহু মানুষ ফিরে এসেছে। এসব প্রত্যাগতের মধ্যে অন্যতম হলেন একজন যাজক, যিনি ফিরে আসেন ইতালি থেকে। মনে করা হচ্ছে তিনি দেশটিতে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম অনুঘটক। এছাড়া মিলান লন্ডন থেকে প্রত্যাগতদের মাধ্যমেও সংক্রমণ ছড়িয়েছে। তবে সবচেয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ইরানের কুয়াম শহর থেকে ফিরে আসাদের নিয়ে। কারণ, ওই শহরই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সংক্রমণকেন্দ্র।

সংক্রমণের সময়ে কোয়ামে ছিলেন বিপুলসংখ্যক ইরাকি লেবানিজ নাগরিক। যাদের মধ্যে ছিলেন ধর্মীয় তীর্থযাত্রী ব্যবসায়ীরাও। পরে তাদের বাসে এবং উড়োজাহাজে করে বাগদাদ বৈরুতে ফেরত আনা হলেও আক্রান্তদের মধ্যে খুব অল্পসংখ্যককেই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।

লেবাননের হেজবুল্লাহ নেতা হাসান নসরুল্লাহ বলেন, তার সম্প্রদায়ের প্রত্যাগতদের অন্তরীণ অবস্থায় রাখা হয়েছে। তাছাড়া সংক্রমণের তথ্য নিয়ে তিনি কোনো লুকোচুরি করবেন না। তবে এখন পর্যন্ত গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার বিষয়ে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।

অন্যদিকে লেবাননের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, রোববার রাত পর্যন্ত দেশটিতে কভিড-১৯- আক্রান্ত ৪১২ জন শনাক্ত হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, আক্রান্তদের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি। একইভাবে ইরাকে সরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা জানানো হয়েছে ৫৪৭ জন। কিন্তু তথ্যের সত্যতা নিয়ে দেশের ভেতরে বাইরে প্রশ্ন উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরো দেশে মানুষ তাদের ঘরে বসে রোগে মারা যাচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে মৃতদের দাফনও সম্পন্ন হচ্ছে। কিন্তু তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না। যদি নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতেই হয়, তবে সংক্রমিতের প্রকৃত সংখ্যা এবং এলাকা নিয়ে গভীরভাবে ভাবতে হবে। না হলে প্রাণঘাতী ভাইরাসকে আটকানো যাবে না

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন