পেটেন্ট কো-অপারেশন ট্রিটি সূচকে শীর্ষে হুয়াওয়ে

বণিক বার্তা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে পেটেন্ট আবেদনকারী হিসেবে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে হুয়াওয়ে। ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিসের পেটেন্ট কো-অপারেশন ট্রিটি সূচক ২০১৯ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। চীনভিত্তিক হুয়াওয়ে পেটেন্ট আবেদনের ক্ষেত্রে টানা তৃতীয়বারের মতো শীর্ষ অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত টানা তিন বছর সফলভাবে সূচকের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে হুয়াওয়ে। নিয়ে মোট সাতবার ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিসের পেটেন্ট কো-অপারেশন ট্রিটি সূচকের শীর্ষস্থান দখল করল প্রতিষ্ঠানটি। 

২০০৬ সালে প্রথমবারের মতো পেটেন্ট কো-অপারেশন ট্রিটির শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় নিজের নাম লেখায় হুয়াওয়ে। সে বছর প্রতিষ্ঠানটির আবেদনের সংখ্যা ছিল ৬১৭। এর দুই বছর পর হুয়াওয়ে চলে যায় সবার শীর্ষে। এরপর কিছুটা পালাবদল হলেও ২০১৭ সাল থেকে টানা তৃতীয়বারের মতো শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে হুয়াওয়ে।

২০১৯ সালে লাখ ৮১ হাজারেরও বেশি পেটেন্ট আবেদন গ্রহণ করেছে ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিস, যা ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় শতাংশ বেশি। এটি প্রতিষ্ঠানটির ইতিহাসে নতুন এক রেকর্ড। এক্ষেত্রে হুয়াওয়ে একাই আবেদন করেছে হাজার ৫২৪টি পেটেন্টের। পেটেন্ট আবেদনে হুয়াওয়ের পরেই অবস্থান করছে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং এলজি। প্রতিষ্ঠান দুটি যথাক্রমে হাজার ৮৫৮ হাজার ৮১৭টি পেটেন্ট আবেদন করেছে। ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিসে আবেদনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে চীন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।  

আইসিটি খাতের গবেষণা উন্নয়নে সারা বিশ্বের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ করে খাতের শীর্ষস্থানীয় পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। গবেষণা উন্নয়ন খাতে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৫ দশমিক বিলিয়ন ডলার। ব্লুমবার্গের জরিপে দেখা গেছে, ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে গবেষণা উন্নয়ন খাতে প্রায় ১৪৯ শতাংশ হারে নিজের বিনিয়োগ বাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

পেটেন্ট সূচক ২০১৯- সমসাময়িক বিশ্বের পেটেন্ট কার্যক্রমের একটি তুলনামূলক চিত্র ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া প্রযুক্তি ক্ষেত্রের নতুন প্রবণতা বা ট্রেন্ড সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য বর্ণনা করা হয়েছে।     

ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিসের প্রধান বাণিজ্য বিশ্লেষক এইডেন কেনড্রিক বলেন, ২০১২ সাল থেকে ইউরোপীয় পেটেন্টের চাহিদা ক্রমেই বেড়েছে। গত বছর আমরা প্রায় লাখ ৮১ হাজার ৪০৬টি পেটেন্ট আবেদন গ্রহণ করেছি, যা ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় শতাংশ বেশি। মোট আবেদনের প্রায় অর্ধেকই এসেছে ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি থেকে। এর মধ্যে কেবল জার্মানি থেকেই আবেদন পড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ। ইউরোপের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় এক-চতুর্থাংশ আবেদন পড়েছে। এছাড়া আবেদনকারী অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে জাপান ১২ শতাংশ, চীন শতাংশ এবং দক্ষিণ কোরিয়া শতাংশ জায়গা দখল করেছে। আবেদনে সংখ্যা বৃদ্ধির হিসাবে দেখা যাচ্ছে ইউরোপের কোম্পানিগুলো বেশ ভালোমতোই এগোচ্ছে। কিন্তু এশিয়ার কোম্পানিগুলো এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভালো করছে। বিশেষত চীন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।    

ইউরোপিয়ান পেটেন্ট অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়ান মেনিরি বলেন, ডিজিটাল যোগাযোগকে আমরা প্রযুক্তি খাতের নতুন শীর্ষস্থানীয় ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করেছি। যেখানে ফাইভজি প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নতি দেখা যাচ্ছে। চীন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপকে প্রযুক্তির উদ্ভাবনে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে। তারা প্রত্যেকেই খাতের এক-চতুর্থাংশ পেটেন্ট আবেদনের ভাগীদার।

তিনি বলেন, দ্রুততম অগ্রগতির হিসাবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল কম্পিউটার প্রযুক্তি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের কারণে এটি ঘটেছে। খাতে পড়া আবেদনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো যন্ত্র প্রশিক্ষণ, উপাত্ত পুনরুদ্ধার, চিত্র উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ ধরন চিহ্নিতকরণ। আবেদনগুলোর মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মতো এবং এক্ষেত্রে হুয়াওয়ে সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। তার পরেই ক্রমানুসারে অবস্থান করছে স্যামসাং, এলজি, ইউনাইটেড টেকনোলজিস সিমেনস।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন