বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়ন দর্শন গ্রন্থের আলোচনা সভায় বক্তারা

আপাদমস্তক রাজনৈতিক নেতা ছিলেন শেখ মুজিব

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপাদমস্তক একজন রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু কি রাজনীতি কি অর্থনীতি কি বিশ্ব ব্যবস্থাসর্বক্ষেত্রেই তার বিস্ময়কর দক্ষতা আমাদের বিস্মিত না করে পারে না। তাই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনকালে তিনি যে দূরদর্শী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন, এর জন্য অধিকাংশ অর্থনীতিবিদ তাকে শুধু স্বাগত জানাননি, তার চুলচেরা বিশ্লেষণও করেছেন। তার বিস্ময়কর সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মৌলিক উপাদানগুলো রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে প্রয়োগের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছিল। এমনকি তাকেও বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছেন।

গতকাল অমর একশে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে আবুল কাসেম রচিতবঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়ন দর্শন: জাতীয়করণ নীতি এবং প্রথম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনাশীর্ষক গ্রন্থের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাবন্ধনিক অসীম সাহা। আলোচনায় অংশ নেন কাজী রোজী, এমএম আকাশ, নাসিমা আনিস আবুল কাসেম। সভায় সভাপতিত্ব করেন আতিউর রহমান।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অসীম সাহা বলেন, ১৯৭২-৭৫ সালের মধ্যে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে বঙ্গবন্ধু কতটা উচ্চাতায় তুলে এনেছিলেন এবং তিনি বেঁচে থাকলে আর কতদূর এগিয়ে নিয়ে যেতেন, তারই একটি পূর্ণাঙ্গ আকরগ্রন্থ আবুল কাসেমের বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়ন দর্শন।

আলোচকরা বলেন, নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্তের সমাজ ব্যবস্থায় আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আনয়নই ছিল বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়ন দর্শনের মূলনীতি। বঙ্গবন্ধু গভীরভাবে বিশ্বাস করতেন যে দেশে কৃষি শিল্পবিপ্লব ঘটিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা সম্ভব। কারণে তার পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনায় কৃষি শিল্প উন্নয়ন প্রাধান্য পেয়েছে। তথ্য-উপাত্ত সমৃদ্ধ, বিশ্লেষণধর্মী গ্রন্থ অনুসন্ধিত্সু পাঠকদের জন্য একটি অবশ্যপাঠ্য গ্রন্থ।

গ্রন্থের লেখক আবুল কাসেম বলেন, বাংলাদেশের মাটি থেকে উত্থিত উন্নয়নের দর্শনই ছিল বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন। মহান রাজনীতিবিদ কেবল রাষ্ট্রদর্শনই নয়, অর্থনীতি সম্পর্কেও গভীর জ্ঞান রাখতেন। বৈষম্য শোষণমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু যে অবদান রেখেছেন, সে বিষয়গুলো গ্রন্থে তুলে আনার চেষ্টা করেছি।

আতিউর রহমান বলেন, রাজনীতির মহান কবি বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শনের মূল কথা ছিল মানুষ এবং মানুষের কল্যাণ। তিনি যেমন গণতন্ত্রের কথা বলেছেন, তেমনি সাধারণ মানুষের কল্যাণে অর্থনৈতিক নীতিও নির্ধারণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শন নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করতে গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সন্ধ্যায় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ করেন কবি রুবী রহমান, কামাল চৌধুরী, নূহ-উল-আলম লেনিন এবং হারিসুল হক। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ফরিদা পারভীন, সাইদুর রহমান বয়াতি, লীনা তাপসী খান, অদিতি মহসিন সেলিম চৌধুরী।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন