বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার যৌথ কমিশনের বৈঠকে তিন দলিল স্বাক্ষর

প্রতিরক্ষা সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা চূড়ান্ত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রথম যৌথ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপন, যৌথ কমিশনের বৈঠকে আলোচ্য বিষয়ের বাস্তবায়ন নিয়ে পর্যালোচনা এবং বাংলাদেশ-কম্বোডিয়ার মধ্যে নিয়মিত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি)—এই তিন বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে। দলিলগুলোতে বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম কম্বোডিয়ার পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ইয়াত সোফিয়া স্বাক্ষর করেন। এছাড়া বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষাবিষয়ক সমঝোতা চূড়ান্ত করা হয়েছে বলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।

গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রথম যৌথ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের ১৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। আর কম্বোডিয়ার ২৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী। বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিবসহ দুই দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, গতকাল প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার মধ্যে প্রথম যৌথ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কম্বোডিয়ার প্রয়াত রাজার নামে বাংলাদেশের একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। তারাও তাদের রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি সড়কের নামকরণ করবেন। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের যৌথ কমিশনের বৈঠকের প্রথম ভিত্তি রচিত হয়। সেখানে যৌথ কমিশনের নিয়মিত বৈঠকের বিষয়ে সম্মত হয়েছিলাম। সে সময়ে বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার মধ্যে বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছিল। দেরিতে হলেও প্রথমবারের মতো বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরবর্তী বৈঠক ২০২২ সালে কম্বোডিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, প্রতি দুই বছর পরপর যৌথ কমিশনে দুই দেশের সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হবে। প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশ কম্বোডিয়ার মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ স্থাপনে এমওইউ স্বাক্ষর করা হয়েছে। পাশাপাশি বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু এবং ফলাফল নিয়েও একটি দলিল স্বাক্ষর হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) করার জন্য আরেকটি এমওইউ স্বাক্ষর করা হয়েছে। প্রথম এমওইউর মাধ্যমে দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলো নিজেদের মধ্যে নিয়মিত বৈঠক করবে। বছরেই দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সেই সঙ্গে বছর দুই দেশের বেসরকারি বিমান চলাচল পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আগামী তিন বছর দুই দেশ একত্রে সাংস্কৃতিক বিনিময় করবে। -সংক্রান্ত একটি খসড়া কম্বোডিয়ার কাছে দেয়া হয়েছে। আর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী একত্রে পালনের বিষয়ে দুই দেশ সম্মত হয়েছে।

দুই দেশের পর্যটক বাড়ানের বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত বছর সাত হাজার বাংলাদেশী কম্বোডিয়া গেছে। বাংলাদেশীদের -ভিসা দেয়া হয়। ফলে এটি আরো সহজ করা এবং নিয়মিত যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের উড়োজাহাজ চলাচলের আলোচনা বছরই হবে। কম্বোডিয়া বাংলাদেশের কৃষি শিল্পের অভিজ্ঞতা বিশেষ করে মাছ চাল উৎপাদনের বিষয়টি কাজে লাগাতে চায়।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, মিয়ানমার আসিয়ান জোটের সদস্য। আর কম্বোডিয়াও আসিয়ানের সক্রিয় সদস্য। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আসিয়ানকে ব্যবহার করে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা সামনের দিনগুলোতে আরো বাড়বে। বাংলাদেশ মিয়ানমারের বন্ধু হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে কম্বোডিয়া।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন