‘পৃথিবীর যেকোনো
জায়গায়, যদি কোনো দল এ ফল
বদলে দিতে পারে, তবে সেটি হচ্ছে
রিয়াল মাদ্রিদ।’ কথাটি বলছিলেন
ম্যানচেস্টার সিটি বস পেপ গার্দিওলা। বার্নাব্যুতে রিয়ালকে ২-১ গোলে হারানোর পরও
ঠিক আশ্বস্ত হতে পারছেন না সিটি বস। তাই এতটুকু বলেই থামেননি। বারবার সতর্ক করেছেন
শিষ্যদের। বলেছেন, ‘এখনো সব শেষ হয়ে
যায়নি।’
তবে দ্বিতীয় লেগের ফল যা-ই হোক, আপাতত কিছুটা হলেও
স্বস্তিতে থাকতে পারে সিটি। ইতিহাদে মাঠে নামার আগে জয়ের পাশাপাশি দুটি অ্যাওয়ে
গোলও আছে তাদের দখলে।
অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজাদের জয়ের দিন, পরাজয়ের স্বাদ
পেয়েছে রাজপুত্রের দলও। লিওঁর মাঠে গিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জুভেন্টাসকে পেতে
হয় ১-০ গোলের হার। রিয়ালের মতো জুভদেরও অপেক্ষা করতে হচ্ছে দ্বিতীয় লেগের জন্য।
রিয়াল ও রোনালদো যুগলবন্দি কিছুদিন আগেও ইউরোপ মাতিয়েছে। রোনালদো
রিয়াল ছাড়ার আগে টানা তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জিতেছে তারা। তবে ‘সিআর সেভেন’ রিয়াল ছেড়ে তুরিন শিবিরে যাওয়ার পর পথ
হারিয়েছে দুপক্ষই। গত মৌসুমে সেমিফাইনালের আগেই বিদায় নিতে হয়েছে দুপক্ষকে। আর
শিরোপা জিতে নিয়েছিল লিভারপুল। তবে এবার দুপক্ষই শিরোপা জয়ের প্রতি আত্মবিশ্বাসী
ছিল। সে লক্ষ্য নিয়েই আলাদা ম্যাচে মাঠে নেমেছিল বুধবার। কিন্তু দুদলকেই পেতে
হয়েছে তিক্ত স্বাদ। অবশ্য হারলেও এখনো টিকে থাকার আশা শেষ হয়ে যায়নি দুদলের জন্য।
দ্বিতীয় লেগের খেলা এখনো বাকি আছে। সেখানে বদলে যেতে পারে দৃশ্যপট। তবে
জুভেন্টাসের চেয়ে কাজটা রিয়ালের জন্যই একটু বেশি কঠিন। রিয়ালকে খেলতে হবে সিটির
মাঠে। অন্যদিকে জুভেন্টাস খেলবে নিজেদের চেনা পরিবেশে। তাই ‘লস ব্লাঙ্কোস’দের জন্য কাজটা একটু কঠিনই হবে।
তবে সতর্ক গার্দিওলা ৩ পয়েন্ট নিয়েই ফেলতে চান স্বস্তির নিঃশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘এটা কেবলই প্রথম
অংশ। আমরা এখনো ৩ পয়েন্ট পাইনি। তবে এটা ভালো ফল।’ ‘আমি অবশ্যই গর্বিত। তবে এটাও সত্য, এটা প্রথম ধাপ।
আমাদের এখনো আরেকটি ম্যাচ খেলতে হবে। সব শেষ হয়ে যায়নি। তাই শান্ত থাকতে হবে, মুহূর্তটা উপভোগ
করতে হবে। আর ম্যাচটার প্রস্তুতি নিতে হবে।’
বিপরীতে এ হার রিয়ালকে এখন আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিল। সাম্প্রতিক সময়ে
লা লিগায়ও রিয়ালের পারফরম্যান্স ভালো যাচ্ছে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের
এ ম্যাচটিকেই তাই পাখির চোখ করেছিল তারা। কিন্তু এখানেও মিলল হারের স্বাদ। রিয়ালের
পরের ম্যাচ আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনার সঙ্গে। সব মিলিয়ে বেশ চাপের মুখেই
আছেন জিনেদিন জিদান। তার ওপর দলের অধিনায়ক সার্জিও রামোস আরো একবার লাল কার্ড দেখে
মাঠ ছেড়েছেন। তবে প্রতিকূল অবস্থাতেও হাল ছাড়তে নারাজ তিনি। জিদান বলেন, ‘৭৫ মিনিট পর্যন্ত
আমাদের জন্য ম্যাচটা ভালোই ছিল। এ হারে আমরা ক্ষুব্ধ। কিন্তু এটা ১৮০ মিনিটের
খেলা। আমাদের এখান থেকে ইতিবাচক দিকগুলো নিতে হবে। যদিও এখানে খুব বেশি ইতিবাচক
বিষয় নেই। তারপর শেষের কিছু সময় বাদ দিলে ম্যাচটা আমাদের জন্য ভালোই ছিল।’
আরেক ম্যাচে লিওঁর মাঠে জুভেন্টাসের হার কিছুটা অপ্রত্যাশিতই বলতে হয়।
দারুণ ছন্দে থাকা রোনালদোও এ ম্যাচে কিছু করে দেখাতে পারেননি। আর প্রতিযোগিতার
অন্যতম সেরা খেলোয়াড় নিষ্প্রভ থাকার দিনে বাকিরাও পারেননি জ্বলে উঠতে। হারের পর
দলের কোচ মাউরিজিও সারি বলেন,
‘প্রথমার্ধে
সেই জুভেন্টাসকে পাইনি, যাদের আমরা চিনি।
কিছু জিনিস বুঝতে আমার নিজেরই সমস্যা হচ্ছে।’ অবশ্য এখনো হাতে ৯০
মিনিট বাকি থাকায় স্বস্তি পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন সারি। তবে উজ্জীবিত লিওঁও নিশ্চয়
হাল ছেড়ে দেবে না। বিবিসি, মার্কা ও এএফপি