অভিমত

উন্নয়ন বিনিয়োগের সামাজিক ও মানবিক মূল্য

মাহমুদ রেজা চৌধুরী

আধুনিক সমাজ রাষ্ট্র উন্নয়নে পুঁজি বিনিয়োগের বিকল্প নেই। পুঁজি বিনিয়োগের সামাজিক রাজনৈতিক একটা রিটার্ন মূল্য বা ভ্যালু আছে। সঙ্গে রয়েছে এর আর্থিক বিনিময় মূল্য। এসবের অগ্রাধিকারে থাকে ব্যক্তির উচ্চাকাঙ্ক্ষা, লোভ, সম্পত্তির অনৈতিক দখল, চুরি, দুর্নীতি, দুঃশাসন, স্বৈরাচার অত্যাচার। আধুনিক বা উন্নত এবং উন্নয়নগামী প্রায় সব সমাজ রাষ্ট্র অবকাঠামোটা এখন রকম। একটি কারণ আর্থরাজনৈতিক পুঁজিবাদ আমলাতন্ত্রউন্নয়নকে নিয়ন্ত্রণ এবং চিহ্নিত করে উন্নতিটা প্রথম কোথায় হবে। শিক্ষা, মানবিক চরিত্র মূল্যবোধের উন্নয়ন, না শিল্প, পুঁজি উন্নয়ন, পথঘাট, দালান-কোঠার উন্নয়ন।

পুঁজিবাদী আধা পুঁজিবাদী সামন্ত সমাজে বুর্জোয়াদের অগ্রাধিকারে কথিত উন্নতি অগ্রসর হয়। উন্নয়নে সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ভোক্তা হলেও সেটা কয়েক হাত মধ্যস্বত্বভোগী শ্রেণী দ্বারা ঘুরে আসে। সরাসরি ভোক্তা সমাজের পেটি বুর্জোয়া ক্ষমতাশীল শ্রেণী।

শ্রেণী এখন দুনিয়ায় কমবেশি সুসংগঠিত, কর্তৃত্বপরায়ণ প্রযুক্তিনির্ভর। এদের কাছে সমাজ রাষ্ট্রের উন্নতি বলতে বোঝায় প্রযুক্তির মাধ্যমে দৃশ্যত উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া। এর সামাজিক মানবিক বিনিময় মূল্য, ফেরত মূল্য বা মানবিকবোধের মূল্যের অবক্ষয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।

কিছুদিন আগে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বিজ্ঞ ইতিহাসবিদ প্রফেসর . সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলছিলেন, ‘বর্তমান সময় বা যুগে চারদিকে যন্ত্রের এবং যান্ত্রিক উন্নতির যন্ত্রণায় মানুষ তার স্বধর্মবিবেক মনুষ্যত্বকেই হারাচ্ছে।এটা কি উন্নয়নের সামাজিক বিনিময় মূল্য নাকি বিনিময়ের বিকল্প ফেরত বা রিটার্ন এক্সচেঞ্জ ভ্যালু? বিষয়টা জটিল হলেও দুর্বোধ্য নয়।

উন্নতি কেবলইমুদ্রামূল্য দ্বারা নির্ণীত নয়, যা সহজে দৃশ্যতও নয়। এটাকে নাগরিকের এক প্রকারের সামাজিক সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ এবং এর মূল্যমান বলা যায়। সামাজিক সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সঙ্গে রাজনীতির ভূমিকা আছে। রাজনীতিকে যুক্তরাষ্ট্রে সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক দেওয়ান শামসুল আরেফিন আখ্যায়িত করেছেনমুনাফার সন্ত্রাসনামে। নামে অধ্যাপক আরেফিনের একটি বইও আছে (প্রকাশক অ্যাডর্ন পাবলিকেশন, ২০০৫)

মুনাফা বা অর্থনৈতিক লাভ, প্রবৃদ্ধি, আয় বৃদ্ধির সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক সন্ত্রাসও যুক্তবইটি পড়ে রকম একটি ধারণাও স্পষ্ট হয়ে আসে। দেশে এখন বাহ্যিক বা এর অবকাঠামোগতমেগা উন্নয়নপরিকল্পনার বাস্তবায়ন দ্রুতগতিতে ধাবমান। বর্তমান সরকারের এটি একটি ইতিবাচক উদ্যোগ। দেশের দৃশ্যত এবং যোগাযোগ অবকাঠামোগত উন্নতির সঙ্গে ব্যক্তির কর্মসংস্থান, বেকারত্ব হ্রাস অর্থনৈতিক সঞ্চালন হয় এবং হচ্ছে। একে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। পাশাপাশি এই অর্থনৈতিক সঞ্চালন, প্রবৃদ্ধি অর্জন, সেটা যে পরিমাণেই হোক, এর পেছনে রাজনৈতিকমডেলকীবিষয়টাও কিন্তু বিবেচ্য। বর্তমান সময়ে রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে অর্থনীতিকে। অর্থনীতি দ্বারা রাজনীতি সেভাবে নিয়ন্ত্রিতও হয় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ, বাস্তবতা অভিন্ন।

আমাদের উন্নতির রাজনৈতিক মডেল দলীয় ক্ষমতায়ন কিন্তু গণতান্ত্রিক নয়। এককেন্দ্রিক, কর্তৃত্ববাদী আধুনিক সামন্তবাদ প্রথার গড়নেও পরিচালিত। যেখানে মুনাফায় সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়। মুনাফার সঙ্গে দলীয় শ্রেণীস্বার্থ আছে।

আমাদের রাজনীতির একটি দিক আলোচনায় সমাজচিন্তাবিদ বদরুদ্দীন উমর তার এক রচনায় বলেন, “জনগণের শ্রমশক্তি উৎপাদনের ফসল অপহরণের পদ্ধতিও এখানে সাধারণ শিল্প সমাজে রাজনীতির অনেকখানি বাইরে, ফলে এই অপহরণের লুটপাটসুলভ চরিত্র নগণ্যভাবেই দেশে দেখা যায়। অবাধ ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপই...আজ পর্যন্ত ধন-সম্পদঅর্জনেরসব থেকে প্রচলিত পদ্ধতি প্রশস্ত পথ (নির্বাচিত প্রবন্ধ, বদরুদ্দীন উমর, অন্যপ্রকাশ, ২০০০, পৃ. ৭৯)

অনেকের মতেই বাংলাদেশের অর্থনীতির বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে মধ্যম হারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, পরিব্যাপ্ত দারিদ্র্য, আয়বণ্টনে অক্ষমতা, শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য বেকারত্ব, জ্বালানি, খাদ্যশস্য মূলধন যন্ত্রপাতির জন্য আমদানি নির্ভরতা, জাতীয় সঞ্চয়ের নিম্নহার ইত্যাদি। খাদ্যদ্রব্য উৎপাদনে ১৯৯০-৯১ থেকে ২০১০-১১ পর্যন্ত হিসাবে এর ক্রমবর্ধমান উন্নতিকেও অস্বীকার করা যায় না। এক পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, খাদ্যশস্য উৎপাদন মাত্রা ১৯৯০-৯১-তে ছিল ১৮৮ দশমিক লাখ টন। তা ২০১০-১১-তে এসে দাঁড়ায় ৩৭০ দশমিক ১৩ লাখ টন মাত্রায়।

স্থানীয় শিল্পোন্নয়নে দেশীয় প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো, স্কয়ার, আকিজ গ্রুপ, ইস্পাহানি, নাভানা, ট্রান্সকম, হাবিব গ্রুপ, কেডিএস, ইউনোকল করপোরেশনসহ দেশীয় নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের গত পাঁচ দশকে বিনিয়োগেও আমাদের আর্থিক উন্নয়নে বিদেশনির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে। অনেক শিল্প উৎপাদনসহ কৃষির আধুনিকীকরণ কৃষিজাত দ্রব্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এর আয়ও বাড়ে, যা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যক্তিগত পুঁজি বিনিয়োগের ইতিবাচক অর্জন। অর্জন ভবিষ্যতে বৃদ্ধি পাবে। সঙ্গে এটাও সত্য, উল্লিখিত ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সরকারি হাজার কোটি অর্থ অনুদান বা ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই অপরিশোধিত আছে। এখানে বিনিয়োগের সামাজিক রিটার্ন শূন্য। রাজনীতির কর্তৃত্ববাদী মডেলের কারণে উন্নয়ন বিনিয়োগের বা ব্যয়ের বিনিময় মূল্য প্রান্তিক নাগরিকদের আয় ব্যয়ের ঊর্ধ্বে।

বিষয়টি কেবল আর্থিক আয়-ব্যয়ের বৈষম্যেই নয়, পাশাপাশি সামাজিক মানবিক মূল্যবোধের সংকটেও সমাজ রাষ্ট্রকে টেনে নিয়ে গেছে গত পাঁচ দশক।

আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পাঁচ দশকের বড় একটি ব্যর্থতা সামাজিক মূল্যবোধের সুরক্ষায় আর্থিক অগ্রগতি ইতিবাচক ভূমিকা রাখেনি। শ্রেণীবৈষম্যের রাজনীতিতে মূলত ক্ষমতাকে কর্তৃত্ববাদীর মনস্তাত্ত্বিকতায় পরিচালনার জন্য এক ধরনের উন্নয়নের হাইব্রিড গতি সঞ্চালনে এর বিনিয়োগের লক্ষ্য বড় ধরনেরমুনাফাএবং এর ভাগাভাগি। এটাও সত্য, ‘মুনাফা লক্ষ্য ছাড়া বিনিয়োগ আসে না। উন্নতিতে বিনিয়োগে দুর্নীতি চুরি নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন। বর্তমান পুঁজিবাদী ভাবাদর্শের রাজনীতি অর্থনীতিতে ন্যায়, নৈতিকতাবোধও জালে বন্দি। সামগ্রিক না হলেও আংশিক বিচার-বিশ্লেষণে বোঝা যায়, সমাজ রাষ্ট্রের নাগরিক মূল্যবোধে আদর্শ, ন্যায়পরায়ণতা, সততা ন্যায়বিচার এবং সহমর্মিতা চর্চায় আমাদের মনস্তাত্ত্বিক বিনিয়োগ হ্রাস পাচ্ছে। নানা সংকট এবং বাধা-বিপত্তির পরেও যেটুকু সততা, দায়িত্বশীলতা, জবাবদিহিতা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে চর্চা ধরে রাখার কথা বলি না কেন, সেটারও রিটার্ন ভ্যালু হতাশাজনক। সাধারণ নাগরিকদের অনেকের জন্য রকম অর্থনৈতিক সমাজ রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নিজেদের সততার বিনিময় মূল্যের হ্রাস লক্ষজনকভাবে আশঙ্কাজনক পর্যায়ে।

রকম এক কঠিন বাস্তবতার মধ্যে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্রের নামে উন্নতির আবেগের গৌরবে যখন দুনিয়ার যেকোনো প্রান্তের ক্ষমতাসীন এবং তাদের অনেক সমর্থক অন্ধের মতো চিত্কার করেন, নিজেদের ব্যতিক্রমী অর্জনের দাবিদার করেন, তখন প্রয়াত প্রাচ্যবাদী বলে খ্যাত সমাজ রাষ্ট্রচিন্তাবিদ এডওয়ার্ড সায়ীদের কথাগুলো মনে পড়ে—“ভিন্নতা, পার্থক্য, বিভক্তি কোনো জাতি-গোষ্ঠীকে সাময়িক আত্মগৌরব দিতে পারে, তবে তা অব্যাহত খরস্রোতা ইতিহাসের প্রতিফলন নয়। বিভক্তি, বিশৃঙ্খলা বাস্তবতার মাঝে এক প্রকারেরআত্মপরিচিতিবা গুরুত্ব খুঁজে পেতে সাহায্য করে। এতে স্থায়ী বিশ্বাস স্থাপন বা আত্মসমর্পণ সুফলপ্রসূ কিছু দিতে পারে না (এডওয়ার্ড সায়ীদ, দ্য ক্লাস অব ইগনোরেন্স দ্য নেশন, অক্টোবর ২২, ২০০১)

আমাদের উন্নতির বা উন্নয়নে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ, মুনাফা এবং তার ঊর্ধ্বগতির সামাজিক বিনিময় মূল্য অন্যান্য দ্রব্যমূল্যের মতো বাড়ছেই, কমছে না। দ্রব্য সংকটে এর মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বা বিদেশ থেকে সেই দ্রব্য এনে সংকট মোকাবেলা করা যায়। কিন্তু সামাজিক বা মানবিক মূল্যবোধের ক্ষয়ে কোথা থেকে কী আমদানি করে শূন্যস্থান পূরণ হবে বা হতে পারে! বিষয়টি ভাবায় বৈকি। মানবিক সামাজিক মূল্যবোধের মূল্য তো আর পেঁয়াজের বাজার নয়।

আমাদের মানসিক মানবিক উন্নয়নে পরিবার, শিক্ষালয়, ধর্মীয় উপাসনালয়মন্দির, মসজিদ, গির্জাসর্বত্রই এর প্রতি মনোযোগ, উৎসাহ, ইচ্ছা সততার বিনিয়োগ এক আতঙ্কের পর্যায়ে এখন। এসবের আলাদা দৃষ্টান্ত দেয়ার প্রয়োজন নেই। বর্তমানে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম দৈনিক পত্রিকা খুললেই তা দেখা যায়।

রাস্তাঘাট বাড়ছে, প্রশস্ত হচ্ছে। ফ্লাইওভার হচ্ছে। সেই পরিমাণে বেকারত্ব দূর মজুরি বৃদ্ধিতে সরকারের পরিকল্পনা খুবই সীমিত। এসব ক্ষেত্রে উন্নয়নে সরকারের বাজেটে বিনিয়োগ দেখা যায়, যা চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।

দেশে বিশেষ করে ঢাকার প্রতিটি এলাকাতেই উচ্চদরের কফি পানের সংস্কৃতিতে সচরাচর যাদের দেখা যায়, তারা মধ্যবিত্তের যে অংশকে প্রতিনিধিত্ব করেন, এদের অধিকাংশের আয়ের স্বচ্ছতা, সততা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এক কাপ কফি বা চা খেতে এসব জায়গায় খরচ জনপ্রতি কম হলেও ২০০-৩০০ টাকা। ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে লক্ষ করেছি, প্রায় প্রতিদিন কয়েক কাপ কফি বা চায়ের ব্যয় স্থানীয় স্বচ্ছ মধ্যবিত্তের সৎ আয়ে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে লক্ষণীয় মধ্যবিত্তের চরিত্র বা সুযোগসন্ধানীদের ভিড়। এদের ধান্দা মূলত উৎপাদক ভোক্তার মাঝে বিনা পুঁজিতে নিজের জন্য টুপাইস হাতিয়ে নেয়া। এদেরই এক অংশ দলীয় ক্ষমতা সম্পর্কের দড়ি ধরে দেশে নানা উন্নয়নে যুক্ত হয়, বিনিয়োগও করে। যে কারণে অনেক উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হতে অহেতুক বাজেট বাড়তেই থাকে। কাজের অগ্রগতি ধীর হয় এবং শেষটা অগোছালো, কিছুটা অসমাপ্ত থেকে যায়। ধরনের আর্থিক রাজনৈতিক বাহ্যিক বস্তুনির্ভর উন্নতির বিনিময় মূল্য সামাজিক ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা চর্চায় ব্যয়বহুল।

আমাদের অর্থনৈতিক উন্নতি বা প্রবৃদ্ধির সঙ্গে রাজনীতিটাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেমন শোষণের রাজনৈতিক উন্নতি, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি, বাঁচা-মরার অর্থনীতি, খোলা ম্যানহোলের রাজনৈতিক অর্থনীতি। এই প্রতিটি বিষয়েই সুচিন্তিত অর্থনীতিবিদ আকবর আলি খান তারপরার্থপরতার অর্থনীতিবইতে উল্লেখ করেছেন।

উন্নয়নের বাজারদর এবং এর মূল্য দুয়ের মাঝে একটা পার্থক্য বিরাজ করে। দরের বেচা-কেনা যত সহজ, মূল্য সেক্ষেত্রে কঠিন এক দর্শনও। মূল্যের মধ্যে সামাজিক, নৈতিক, আদর্শিক, সাংস্কৃতিক গভীরতার দীর্ঘ যোগসূত্র আছে, যা অর্জিত হয় দীর্ঘ সময় নিয়ে।বাজারদরেএর মূল্য দৃশ্যত নয়, কিন্তু মানবিক সংস্কৃতিতে এর মূল্য অপরিসীম।

আমাদের ধাবিত উন্নতিতে সব ক্ষেত্রেই সামাজিক মূল্যবোধের মানবিক আচার-আচরণের বিনিময় মূল্য এবং এর মানবিক এক্সচেঞ্জ ভ্যালুর নিম্নমুখী চরিত্রের কারণেও সমাজ রাষ্ট্রে দুর্নীতি, অত্যাচার, অনাচার, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চরম অবক্ষয়, সুশাসনের অভাব ক্রমান্বয়ে ঊর্ধ্বমুখী।

এসবের বিনিময় মূল্য কি কেবল বাহ্যিক উন্নয়নের বিনিয়োগ অর্জনে সাধারণ জন বা নাগরিক তাদের মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়নে দিতে বা মেটাতে পারবে? না পারলে মানুষের যে উন্নয়নে সমাজ রাষ্ট্রের অগ্রগতি কল্যাণ হয়, তা ব্যাহত হবে। অনেকের তাই রকমই প্রশ্ন, যে উন্নতিতে মানুষের সামাজিক নৈতিক দাসত্ব বা অসহায়ত্ব বাড়ে, সেই উন্নয়ন সমাজ রাষ্ট্র চায় কতটা? সামাজিক অর্থনীতিবিদরা ভালো জানবেন যে আমাদের চলতি উন্নয়ন বিনিয়োগের সামাজিক বিনিময় ফেরত মূল্য আমরা কতটা কী দিচ্ছি।

 

মাহমুদ রেজা চৌধুরী: রাজনীতি বিশ্লেষক

[email protected]

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন