দিল্লির দাঙ্গা : সরকার সমালোচক বিচারপতিকে রাতারাতি বদলি

বণিক বার্তা অনলাইন

দিল্লি হাইকোর্টের আলোচিত বিচারপতি এস মুরালিধরকে গতকাল বুধবার রাতেই বদলি করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। যদিও গত সপ্তাহেই তাকে পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলির সুপারিশ করেছিল দেশটির সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। সেই বদলির প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করে দিল্লি হাইকোর্টের আইনজীবীরা। একই রাতে বদলি করা হয়েছে দিল্লির পাঁচ আইপিএস অফিসারকেও। 

বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গেল রোববার থেকে শুরু হয়েছে সহিংসতা।  গতকাল বুধবার বিচারপতি মুরালিধর উত্তর-পূর্ব দিল্লির মুস্তাফাবাদের সংঘর্ষে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা সহায়তা দিতে গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে দেশটির পুলিশকে নির্দেশ দেন। এছাড়াও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন তিদ তিনি বলেন, ‘এই দেশে ১৯৮৪ সালের মতো আরেকটি হত্যাযজ্ঞ ঘটতে দিতে পারি না আমরা।’ এছাড়াও গতকাল বুধবার সংঘর্ষে গৃহহীন মানুষদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার রায় দিয়ে দিল্লির মানুষের ‘রক্ষাকর্তায়’ পরিণত হন। পাশাপাশি তিনি উসকানিমূলক বক্তব্যের জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিচ্ছে না- তাও জানতে চান।

এরই মধ্যে কলেজিয়ামের সুপারিশ মেনে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতেই বিচারপতি মুরালিধরকে বদলির নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। বুধবার মাঝরাতে এ সংক্রান্ত একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। এতে দিল্লি হাকোর্টে থাকার আর কোনো সুযোগ রইলো না এই বিচারপতির। তবে বিজ্ঞপ্তিটি বিচারককে তার নতুন পদে যোগ দেওয়ার জন্য কোনও সময়সীমা বেঁধে  দেয়নি। এই ধরনের বদলির আদেশগুলিতে বিচারকদের যোগদানের জন্য ১৪ দিন সময় দেয়। আইনমন্ত্রী রবি শংকর প্রসাদ একে রুটিন বদলি অ্যাখ্যা দিয়ে টুইটারে লেখেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারির সুপারিশ অনুসারে নিয়ম মেনেই মাননীয় বিচারপতি মুরালিধরকে বদলি করা হয়েছে।

দিল্লি হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন আইনজীবী বলেন, বিচারপতি মুরালিধর অত্যন্ত দক্ষ এবং বহু মামলাতেই সাহসী রায় দিয়েছেন। যার মধ্যে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গা মামলা এবং সমকামিতাকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা থেকে মুক্ত করার রায়।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ও ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি মুরালিধরকে অন্যত্র বদলির প্রসঙ্গে এর আগে দু’বার রাজি হয়নি কলেজিয়াম। তবে এবার স্বপ্রনোদিত হয়েই প্রথমে কলেজিয়াম ও পরে দেশটির রাষ্ট্রপতি বিচারপতিকে বদলির নির্দেশ দিলেন।

সূত্র: এনডিটিভি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন