এক বছর ৩ মাস পর টেস্ট জয়

দ্বিতীয় বারের মতো ইনিংস ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর থেকে হারের পর হার। সবশেষ আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সফরেও সাদা পোশাকে জয়ের দেখা মেলেনি। নিজেদের সবশেষ ছয় টেস্টের মধ্যে পাঁচটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হার মানতে হয়েছে টাইগাররা। এ অবস্থা কাটানোর প্রত্যাশাটা আগেই ছিল। অপেক্ষা ছিল কাগজে কলমে হিসাব মেলানোর।

তবে আক্ষেপটা হয়তো থেকেই যাবে মুশফিকুর রহিমের। গতকাল তিনি বলেই ফেলেছেন, শেষ সময়ে ইনিংস ঘোষণা করায় তিনি বিস্মিত হয়েছেন। আজকে অন্তত তৃতীয় শতক তুলে নেয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। তবে তার আগেই ঘোষণা করা ইনিংস। আর ফলশ্রুতিতে হাতে দেড় দিন সময় রেখেই মাঠ ছাড়তে হলো ক্রিকেটারদের। ইনিংস ও ১০৬ রানের ব্যবধানে একমাত্র টেস্টে জিম্বাবুয়েকে একরকম গুঁড়িয়েই দিয়েছে বাংলাদেশ।

সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত খেলা ১১৯ টেস্টে এটিসহ ১৪টিতে জিতেছে বাংলাদেশ, ড্র হয়েছে ১৬টি ম্যাচ আর পরাজিত ম্যাচের সংখ্যা ৮৯টি। এই ১৪ জয়ের সাতটিই আবার এসেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ৪ এবং শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে রয়েছে ১টি করে জয়।

মিরপুরে সফরের একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশের এক ইনিংসে ৬ উইকেটের বিনিময়ে করা ৫৬০ রান, দুই ইনিংসে ২০ উইকেটের বিনিময়েও করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। যার ফলে তাদের ভাগ্যে জুটেছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়। ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের পক্ষে ৪টি করে উইকেট নিয়েছিলেন নাঈম হাসান ও আবু জায়েদ রাহী। বাকি ২ উইকেট যায় তাইজুল ইসলামের দখলে।

জবাবে খেলতে নেমে বাংলাদেশের পক্ষে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান মুশফিকুর রহীম (২০৩*), সেঞ্চুরি আসে মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে (১৩২)। এছাড়া নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১ ও লিটন দাস ৫৩ রান করলে ৬ উইকেটে ৫৬০ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।

ফলে স্বাগতিকদের পুনরায় ব্যাটিংয়ে নামানোর জন্য জিম্বাবুয়ের সামনে দাঁড়ায় ২৯৫ রানের সমীকরণ। যা পূরণ করতে পারেননি ব্রেন্ডন টেলর, সিকান্দার রাজারা। আবারও নাঈম হাসানের স্পিন বিষে নীল হয়েছে জিম্বাবুয়ে। যথাযথ সঙ্গ দিয়েছেন বাঁহাতি তাইজুলও।

যার সুবাদে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ১৮৯ রানে। বাংলাদেশ পেয়েছে ইনিংস ও ১০৬ ব্যবধানে জয়।

প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে নাঈমের শিকার ৫ জিম্বাবুইয়ান ব্যাটসম্যান। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ফাইফার। এছাড়া দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ১০৬.৩ ওভারে ২৬৫/১০ (মাসভাউরে ৬৪, কাসুজা ২, আরভিন ১০৭, টেলর ১০, রাজা ১৮, মারুমা ৭, চাকাভা ৩০, তিরিপানো ৮, দলুভু ০, শুমা ০, নিয়ুচি ৬*; এবাদত ১৭-৮-২৬-০, আবু জায়েদ ২৪-৬-৭১-৪, নাঈম ৩৮-৯-৭০-৪, তাইজুল ২৭.৩-১-৯০-২)।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫৪ ওভারে ৫৬০/৬ (ইনিংস ঘোষণা) (তামিম ৪১, সাইফ ৮, শান্ত ৭১, মুমিনুল ১৩২, মুশফিক ২০৩*, মিঠুন ১৭, লিটন ৫৩, তাইজুল ১৪*; তিরিপানো ৩০-৬-৯৬-১, নিয়ুচি ২৭-৩-৮৬-১, রাজা ৩০-২-১১১-১, শুমা ২৫-২-৮৫-১, দলুভু ৪২-৪-১৭০-২)।

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৫৭.৩ ওভারে ১৮৯/১০ (মাসভাউরে ০, কাসুজা ১০, তিরিপানো ০, টেলর ১৭, আরভিন ৪৩, রাজা ৩৭, মারুমা ৪১, চাকাভা ১৮, দলুভু ৪, শুমা ৩, নিয়ুচি ৭*; নাঈম ২৪-৬-৮২-৫, তাইজুল ২৪.৩-৭-৭৮-৪, আবু জায়েদ ৪-৩-৪-০, এবাদত ৫-১-১৬-০)।

ফলাফল: বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানের ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহীম

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন