ঢাকার ১০ শতাংশ এলাকায় এডিসের লার্ভা ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের অন্তত ১০ শতাংশ এলাকায় ডেঙ্গু জ্বরের বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে ঝুঁকিপূর্ণ মাত্রায়। গত বছর রাজধানীতে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রকোপের পরও মশা মারতে সিটি করপোরেশন দুটির তত্পরতার অভাবই এক্ষেত্রে দায়ী। বর্ষা-পরবর্তী এক জরিপের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক কর্মশালায় প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ১২ শতাংশ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১০ শতাংশ ওয়ার্ডে এডিস লার্ভার ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি রয়েছে। মশার লার্ভার উপস্থিতি হিসাব করা হয় ব্রুটো ইনডেক্স বা সূচকের মাধ্যমে। জরিপে প্রতি ১০০ প্রজনন উৎসের মধ্যে ২০টি বা এর বেশি উৎসে এডিস মশার লার্ভা বা পিউপা পাওয়া গেলে সেটিকে ঝুঁকিপূর্ণ উপস্থিতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, ডিএনসিসির ১, ১২, ১৬, ২৮ ও ৩১ এবং ডিএসসিসির ৫, , ১১, ১৭, ৩৭ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো সূচক পাওয়া গেছে ২০ পয়েন্টের বেশি। উত্তর সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে এ সূচক ৩০।

ডিএনসিসির ৪১ ও ডিএসসিসির ৫৯টি ওয়ার্ডে এ জরিপ চালানো হয়েছে। ডিএনসিসির উত্তরা ও ধানমন্ডির দুটি ওয়ার্ডে দুটি করে এলাকায় জরিপ পরিচালিত হয়েছে। এসব এলাকার এক হাজারটি বাড়ি জরিপ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

কর্মশালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক একেএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগের চেয়ে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০১৮ সালে বর্ষা-পরবর্তী জরিপ হয়নি। তবে সব সূচকেই ২০১৭ সালের চেয়ে এবার উপস্থিতি কম। মশার উপস্থিতি, ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা আগের বছরের তুলনায় কম পেয়েছি। মশা নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনন উৎসে নজর দিতে হবে। যদি পানি জমতে দেয়া না হয়, তাহলে মশার লার্ভাই হতে পারবে না। মশার যদি উৎস ধ্বংস করা না হয়, তাহলে শুধু লার্ভিসাইডিং করে মশা কমানো যাবে না। নাগরিকদের এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

জরিপে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেনবিভিন্ন নির্মাণ এলাকায় মশার উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে নজর দিলে মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। যদি পানির ড্রামগুলোয় বেশিদিন পানি জমে না থাকে, যদি বিষয়টিতে নজর দেয়া হয় তাহলে মশা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

এ বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে থাকবে, এ প্রত্যাশা জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা অনেক বেশি সচেতনতামূলক কাজ চালিয়েছি। এ জরিপ মশার প্রজননস্থল চিহ্নিত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহলীনা ফেরদৌসী, ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মোমিনুর রহমান মামুন, ডিএসসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. শরীফ আহমেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার সাবেক পরিচালক বেনজির আহমদ উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. আফসানা আলমগীর খান কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন