অক্সফোর্ড জাদুঘরের কাছে ‘চুরি’ যাওয়া ভাস্কর্য ফেরত চেয়েছে ভারত

ফিচার ডেস্ক

ভারত সরকার অক্সফোর্ডের আশমোলিয়ান জাদুঘরকে পনেরো শতকের একটি ব্রোঞ্জের ভাস্কর্য ফিরিয়ে দিতে বলেছে। ভাস্কর্যটি গত শতকের ষাটের দশকে তামিলনাড়ু রাজ্যের এক মন্দির থেকে চুরি হয়েছিল। লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, গত শুক্রবার সাধু থিরুমাঙ্গাই আলভার ভাস্কর্যটি ফিরিয়ে দিতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে আশমোলিয়ান ভারতীয় হাইকমিশনকে একটি নতুন গবেষণার কথা বলার পরই মূলত হাইকমিশন এ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। কারণ গবেষণাটিতে ভাস্কর্যটির প্রবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ভাস্কর্যটি ১৯৬৭ সালে লন্ডনের সথবির নিলাম হাউজ থেকে কেনা হয়েছিল।

একজন স্বাধীন স্কলার ফ্রান্সের পন্ডিচেরি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৯৫৭ সালের একটি ভাস্কর্যের ছবি উদ্ধার করেন, যার সঙ্গে দক্ষিণ ভারতের রাজ্য তামিলনাড়ুর কুম্বাকুনামের নিকটবর্তী একটি গ্রামের শ্রী সৌন্দারাজাপেরুমাল মন্দিরের ভাস্কর্যের মিল পাওয়া যায়। ভাস্কর্যটি গত শতকের ষাটের দশকের শুরুর দিকে চুরি হয়েছিল।

প্রায় এক মিটার লম্বা ভাস্কর্যটিতে দক্ষিণ ভারতের অন্যতম তামিল কবি-সাধু থিরুমাঙ্গাই আলভাকে চিত্রিত করা হয়েছে। যার এক হাতে তলোয়ার, অন্য হাতে ঢাল রয়েছে। অষ্টম অথবা নবম শতাব্দীতে বসবাসকারী এ সাধু হিন্দু ধর্মের বৈষ্ণব ঐতিহ্য হিন্দুত্ববাদে রূপান্তর হওয়ার আগে একজন নেতা, সামরিক কমান্ডার এবং দস্যু ছিলেন।


লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সেক্রেটারি রাহুল নাঙ্গারে বলেন, তামিলনাড়ুর পুলিশের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এটা স্পষ্ট যে, আসল ভাস্কর্যটি চুরি করে সেখানে একটি নকল ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। এবং এটা সেই ভাস্কর্য, যেটা বর্তমানে আশমোলিয়ানে রয়েছে। কাজেই ভারতের এ ভাস্কর্যটি পুনরুদ্ধারে আমরা তাদের কাছে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছি। ভাস্কর্যটির আসল চোর এবং পরবর্তী সময়ে এটি পাচারের বিষয়টি নিয়ে আরো তদন্ত করা হচ্ছে।

হাইকমিশনকে সতর্ক করতে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আশমোলিয়ানকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ভারতীয় হাইকমিশন। তারা আশা প্রকাশ করে বলেছে, অন্য জাদুঘরগুলোও আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের চুরি যাওয়া আরো বেশকিছু সম্পদ উদ্ধারে এ উদাহরণ অনুসরণ করবে। ভাস্কর্যটির উৎসের বিষয়ে আশমোলিয়ান আরো যথাযথ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জাদুঘরের কর্মকর্তারা শিগগিরই ভারত সফর করবেন বলে ভারতীয় হাইকমিশনার জানিয়েছেন।

এদিকে আশমোলিয়ানের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সথবির ক্যাটালগ অনুসারে ড. জেআর বেলমন্টের (১৮৮৬-১৯৮১) সংগ্রহ থেকে ব্রোঞ্জের ভাস্কর্যটি বিক্রি করা হয়েছিল এবং জাদুঘর সেটি কিনে নিয়েছিল। এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, ‘ব্রোঞ্জের এ ভাস্কর্যটি কীভাবে তার সংগ্রহে প্রবেশ করেছিল, সে বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। আমরা ভারতীয় হাইকমিশনের সমর্থন নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি।

 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন