মিলান কনস্যুলেটে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উদযাপন

ইতালি সংবাদদাতা

ইতালির মিলানে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের উদ্যোগে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হয়েছে। দিবসের প্রথম প্রহরে কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ প্রভাতফেরির মাধ্যমে কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে মিলান সেন্ট্রাল স্টেশন সংলগ্ন চত্ত্বরে কনস্যুলেট কর্তৃক অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। শ্রদ্ধানিবেদনের এই আয়োজনে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী, ইতালীয় ও অন্যান্য দেশের কয়েকজন নাগরিক অংশগ্রহণ করেন।

একুশে ফেব্রুয়ারি সকালে কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ কনস্যুলেট জেনারেলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে অফিস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। বিকালে কনস্যুলেট জেনারেলের হলরুমে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ভারতের কনসাল জেনারেল, ইতালি, মিশর, মরিশাস, শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিক উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সংক্রান্ত একটি বিশেষ প্রামান্যচিত্র এবং ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেরুয়ারি’ গানটির সুরকার শহিদ আলতাফ মাহমুদকে শ্রদ্ধা জানিয়ে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এ অধ্যয়নরত ১৭ দেশের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ ভাষায় এ গানটি পরবেশন নিয়ে আরেকটি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

আলোচনা পর্বে প্রথমে ভারতীয় কনসাল জেনারেল, কম্যুনে দি মিলানো এর ইকুয়াল রাইটস কমিটির প্রধান দিয়ানা দি মার্কি, কম্যুনে দি মিলানো এর কাউন্সিলার ও ব্লুম কলেজের অধ্যক্ষ বক্তব্য রাখেন। তারা বাংলাদেশের ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এং পৃথিবীর সর্বত্র মাতৃভাষা সংরক্ষণের প্রতি গুরুত্ব দেন।


অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন আব্দুল মান্নান মালিথা, নাজমুল কবির জামান, আকরাম হোসেন, মজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, আবু আলম, মোহাম্মদ হানিফ শিপন, জামিল আহমেদ, চঞ্চল রহমান, তুহিন মাহামুদ, আরফান শিকদার, জাকির হোসেন মামুন, খান মামুন, কাওছার হাওলাদার, তপু খান, মমিনুর রহমান, সালাহউদ্দিন রিপনসহ আরো অনেকে।

তারা ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, তাদের সুমহান আত্মত্যাগ কালক্রমে বাংলাদেশের সীমা অতিক্রম করে বিশ্বের সর্বত্র সকল ভাষাভাষীদের মাতৃভাষা সংরক্ষণের অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছে। এ দিবসটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা প্রদান বাংলাদেশের ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের অসামান্য স্বীকৃতি।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

সভাপতির ভাষণে কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ ভাষাশহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, আজকের এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের বিপুল উপস্থিতি মাতৃভাষার প্রতি সকলের ঐকান্তিক ভালবাসা এবং এ দিবসটির বিশেষ তাৎপর্যের সাক্ষ্য বহন করে।

পরে সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসী বাংলাদেশী শিশু-কিশোর, ব্লুম কলেজ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং কয়েকজন বিদেশী নাগরিক বাংলা, ইংরেজী, চাইনিজ, স্প্যানিশ, কেচুয়া, আরবী, ইতালীয় ও শ্রীলংকান ভাষায় গান ও কবিতা পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শেষে উপস্থিত সকলকে বাংলাদেশী খাদ্য আপ্যায়ন করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন