সূচকে উত্থান ও রেকর্ড লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগের সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল সূচক ডিএসইএক্স ও লেনদেন বেড়েছে। একইভাবে বেড়েছে দেশের আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ও লেনদেন।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সূচক বেড়েছে তিন কার্যদিবসে। আর পয়েন্ট হারিয়েছে দুই কার্যদিবসে। সপ্তাহের শুরুটা ছিল ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়। রোববার প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইএক্সে যোগ হয় ১৭০ পয়েন্ট। ৪ হাজার ৫৬৪ পয়েন্ট নিয়ে রোববার লেনদেন শুরু করা সূচকটি দিন শেষে ছিল ৪ হাজার ৭৩৪ পয়েন্টে। সোমবার সূচক বাড়ে ৩৪ পয়েন্ট। মঙ্গলবার ডিএসইএক্স হারায় ২৮ পয়েন্ট। বুধবার ফের পয়েন্ট বাড়ে ১৮। আর বৃহস্পতিবার ২৫ পয়েন্ট কমে দিনের লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান দাঁড়ায় ৪ হাজার ৭৩৩ পয়েন্টে। সার্বিকভাবে এক সপ্তাহে ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৬৮ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

ডিএসইএক্সের পাশাপাশি ব্লু চিপ সূচক ডিএস-৩০ গত সপ্তাহে ৫৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেড়ে সপ্তাহ শেষে ১ হাজার ৫৯২ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৫৩৬ পয়েন্ট। অন্যদিকে পাঁচ কার্যদিবসে প্রায় ৪৪ পয়েন্ট বা ৪ দশমিক ২১ শতাংশ বেড়েছে শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস। বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ১ হাজার ৯০ পয়েন্টে অবস্থান করছে সূচকটি, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ১ হাজার ৪৬ পয়েন্ট। চলতি বছরের প্রথম দিনে ডিএসইতে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করা নতুন সূচক সিডিএসইটি বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে অবস্থান করছে ৯৫২ পয়েন্টে, আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৯১৬ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কমেছে। আলোচ্য সময়ে স্টক এক্সচেঞ্জটিতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে ৯০৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, আগের সপ্তাহে যা ছিল ৫১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৫২১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, আগের সপ্তাহে যা ছিল ২ হাজার ৫৯৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। মঙ্গলবার এক্সচেঞ্জটিতে ১ হাজার ২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ২৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া ৩৬০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের মধ্যে সপ্তাহ শেষে দর বেড়েছে ২৪২টির, কমেছে ৯১টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৫টির।

খাতভিত্তিক লেনদেন চিত্রে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে ছিল প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের ১৪ শতাংশ দখলে নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বস্ত্র খাত। ১৩ শতাংশ দখলে নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের দখলে ছিল মোট লেনদেনের ১০ শতাংশ আর ব্যাংক খাতের দখলে ছিল ৭ শতাংশ।

আগের পাঁচ সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ সিকিউরিটিজ ছিল লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড। এর পরের অবস্থানে ছিল খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষে ছিল যথাক্রমে সামিট পাওয়ার লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড, গ্রামীণফোন লিমিটেড, গোল্ডেন হারভেস্ট অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বেক্সিমকো লিমিটেড, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড ও এডিএন টেলিকম লিমিটেড।

সমাপনী দরের ভিত্তিতে ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল যথাক্রমে এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরি লিমিটেড, প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড, বিএসআরএম লিমিটেড, রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, আইসিবি এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট মিউচুয়াল ফান্ড ওয়ান: স্কিম ওয়ান, এমএল ডায়িং লিমিটেড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড, সায়হাম টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেড।

দেশের আরেক শেয়ারবাজার সিএসইতে গত সপ্তাহে সিএসসিএক্স ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বা ৩৮০ পয়েন্ট বেড়ে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে ৮ হাজার ৮১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল ৮ হাজার ৪৩২ পয়েন্ট। এছাড়া নির্বাচিত ৩০ কোম্পানির সূচক সিএসই৩০ ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ বা ৮১৭ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ৭৭৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১১ হাজার ৯৫৮ পয়েন্ট।

সিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে মোট ২৪৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৫৪ কোটি টাকা। লেনদেন হওয়া ৩১৩টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩৩টির, কমেছে ৬০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২০টির বাজারদর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন