আগের দিন বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছিলেন, প্রথম এক-দেড় ঘণ্টা উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা পাবে পেসাররা।
গতকাল আগে বল হাতে নিয়ে শুরুতে দলকে সাফল্যও এনে দেন বাংলাদেশ পেসার আবু জায়েদ রাহী।
দলীয় ৭ রানেই ফিরিয়ে দেন ওপেনার কেভিন কাসুজাকে।
কিন্তু প্রথম সেশনে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে এতটুকুই।
দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রিন্স মাসভাউরে ও ক্রেইগ আরভিন মিলে জিম্বাবুয়েকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন।
বেশকিছুটা সময় সংগ্রাম করার পর ধীরে ধীরে স্বরূপে ফিরতে শুরু করেন বাংলাদেশের বোলাররা।
বিশেষ করে ডানহাতি অফ স্পিনার নাঈম হাসানের ঘূর্ণিতে ঘুরে দাঁড়ায় স্বাগতিক বাংলাদেশ।
চার উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের লাগাম টেনে ধরতে মূল ভূমিকা রাখেন এ স্পিনার।
অন্য প্রান্ত থেকে তাকে দারুণ সহায়তা দেন রাহী।
প্রথম দিন ২২৮ রান করলেও জিম্বাবুয়ে হারিয়েছে ৬ উইকেট।
স্পিননির্ভর রক্ষণাত্মক ক্রিকেট থেকে বের হওয়ার কথা আগের দিনই বলেছিলেন বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো।
সে
অনুযায়ী দলও গড়েছেন তিনি।
দুজন স্পিনারের সঙ্গে ছিলেন দুজন পেসারও।
এবারের উইকেটও ছিল মিরপুরের গতানুগতিক উইকেট থেকে আলাদা।
ভালো করার দুয়ারও খোলা ছিল সবার জন্য।
জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক আরভিন দেখিয়েছেন এ উইকেটে টিকে থেকে কীভাবে রান করতে হয়।
অন্যদিকে নাঈম ও রাহী দেখিয়েছেন সঠিক জায়গায় লম্বা সময় বল করে সাফল্য আদায়ের কৌশল।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো ছিল না জিম্বাবুয়ের।
বাংলাদেশের দুই পেসার উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে চেপে ধরেন জিম্বাবুয়ে ওপেনার কাসুজা ও মাসভাউরেকে।
প্রথম ৬ ওভারে আসে মাত্র ১ রান, যে রানটি আসে অতিরিক্ত খাত থেকে! পরে অষ্টম ওভারে দলকে সাফল্য এনে দেন রাহী।
অফ
স্টাম্পের বাইরে দুর্দান্ত লেংথ বল ফেলে কাসুজাকে ক্যাচ বানান নাঈমের।
তবে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে এতটুকুই।
দারুণ ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে স্বাগতিক বোলারদের নিরাশ করতে থাকেন মাসভাউরে ও আরভিন।
লাঞ্চে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এ দুজন বাংলাদেশকে কোনো সুযোগই দেননি।
৩০
ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে রান তোলে ৮০।
বিরতির পরও দাপট অব্যাহত ছিল জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটসম্যানের।
এর
মাঝে মাসভাউরে তুলে নেন ফিফটি।
এরপর অবশ্য দুবার জীবনও পান তিনি।
প্রথমবার নিজের বলেই ফিরতি ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন নাঈম।
এরপর উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে দ্বিতীয়বার জীবন পান মাসভাউরে।
দুবার জীবন পেয়েও শেষ রক্ষা হয়নি এই ওপেনারের।
সেই নাঈমের বলেই এবার ফিরতি ক্যাচ দিলেন তিনি।
১৫২ বলে ৯ চারে তিনি করেন ৬৪ রান।
দলের রান তখন ১১৮।
এরপর আরভিনের সঙ্গে জুটি গড়েন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলর।
তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি টেলর।
নাঈমের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন দলীয় ১৩৪ রানে।
রিভার্স সুইপ খেলতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে বল আঘাত হানে স্টাম্পে।
১১
বলে ১০ রান করেন টেলর।
এরপর আরভিনের সঙ্গে জুটি গড়েন সিকান্দার রাজা।
এ
দুজন মিলে দ্রুত দুই উইকেট হারানোর চাপ সামলে নেয়ার চেষ্টা করেন।
এ
দুজন যোগ করেন ৪০ রান।
জমে যাওয়া এ জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ফের সাফল্য এনে দেন নাঈম।
ঘূর্ণি বল রাজার ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে লিটন দাসের গ্লাভসে।
৬২
বলে ৩ চারে ১৮ রান করেন সিকান্দার।
তখন জিম্বাবুয়ের দলীয় রান ১৭৪।
আরভিন প্রান্ত আগলে দাঁড়িয়ে থাকলেও দ্রুত ফিরে যান টিমিসেন মারুমা।
৭
রান করে রাহীর বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন তিনি।
১৯৯ রানে ৫ উইকেট হারালেও তখনো জিম্বাবুয়েকে লক্ষ্যচ্যুত হতে দেননি আরভিন।
২১৩ বলে পূরণ করে নেন নিজের সেঞ্চুরি।
এরপর অবশ্য ইনিংস খুব বেশিদূর টেনে নিতে পারেননি তিনি।
দিন শেষ হওয়ার এক ওভার আগে তাকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে স্বস্তি এনে দেন দিনের সেরা বোলার নাঈম।
এ
উইকেটটিই দিনের লড়াইয়ে এগিয়ে রাখে বাংলাদেশকে।
২২৭ বলে ১৩ চারে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেন জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক।
৬৮
রান দিয়ে নাঈম নিয়েছেন ৪ উইকেট।
রাহীর শিকার দুটি।