যানবাহনসংক্রান্ত একটি সুস্পষ্ট ‘স্ক্র্যাপেজ’ নীতিমালা ভারতে বার্ষিক ৬০০ কোটি ডলারের ব্যবসা সুযোগসহ নিজস্ব একটি শিল্প (গাড়ি ভাঙা শিল্প) তৈরিতে সহায়তা করতে পারে বলে মনে করছেন গাড়ি খাতের নির্বাহী ও বিশ্লেষকরা।
খবর ইকোনমিক টাইমস।
ভারতের গাড়ি খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, এ ধরনের নীতিমালা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাঙ্গা করতে সহায়ক হবে।
পাশাপাশি অর্থনৈতিক শ্লথগতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি বাজারকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।
অনুমোদনের জন্য শিগগির ‘স্ক্র্যাপেজ’ নীতি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে বলে চলতি মাসে ভারতের অর্থমন্ত্রী নিতিন গড়করি জানিয়েছিলেন।
বিভিন্ন ধাতুর আমদানি হ্রাসে সহায়তার জন্য ভাঙা যানবাহন থেকে ইস্পাত, তামা ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো ধাতুর পুনর্ব্যবহার প্রত্যাশা করছে সরকার।
এছাড়া সড়ক থেকে পুরনো গাড়ি সরিয়ে নেয়া হলে দূষণ কমার পাশাপাশি নতুন গাড়ি পুরনোর তুলনায় বেশি জ্বালানি সাশ্রয়ী হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সরকারের জ্বালানি ব্যয় কমবে।
নতুন কুশলীদের যাতে এ নতুন বাজারে অংশগ্রহণের উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি হতে পারে, সে কারণে কেবল বাণিজ্যিক নয়, ব্যক্তিগত গাড়ি ও টু-হুইলারসহ নীতিমালার আওতায় পরিবহন খাতের সবগুলো সেগমেন্ট থাকার আশা করছে গাড়ি শিল্প।
ডাইমলার ইন্ডিয়া কমার্শিয়াল ভেহিকলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সত্যকাম আর্য বলেন, গাড়ি ভাঙা শিল্পের বিকাশের জন্য সরকারকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে।
এগুলো হলো বড় অংকের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান, ভাঙা গাড়ি বদলে নিতে অনিচ্ছুকদের জন্য স্ক্র্যাপেজ সার্টিফিকেট পুনরায় বিক্রির একটি বাজার উন্নয়ন এবং বাণিজ্যিক গাড়ির চলাচল উপযোগিতার মেয়াদ বর্তমানে প্রস্তাবিত ১৫ বছর থেকে কমিয়ে ১০ বছর করা।
এইচডিএফসি ব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভাঙা গাড়ি ও রিসাইক্লিংয়ের ৬০০ কোটি ডলারের বাজার রয়েছে।
ব্যাংকটির মতে, এ-সংক্রান্ত নীতিমালা যদি সবিস্তারে সংজ্ঞায়িত করা যায়, তবে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯০ লাখ গাড়ি এবং ২০২৫ সাল নাগাদ ২ কোটি ৮০ লাখ গাড়ি ভারতের সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হবে, যার অধিকাংশই টু-হুইলার।
এর
ফলে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণের পরিমাণ ১৭ শতাংশ ও বাতাসে ক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম) হার ২৪ শতাংশ কমিয়ে আনা যাবে।
এছাড়া যদি ভারত স্টেজ-টু ও থ্রির গাড়িও সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়, তবে বছরে ৮০ লাখ টন তেল সাশ্রয় হবে।
এ নীতিমালা সবার জন্যই লাভজনক হবে বলে মন্তব্য করেছেন এইচডিএফসি ব্যাংকের গাড়ি অর্থায়ন বিভাগের প্রধান অশোক খান্না।
৬০০ কোটি ডলারের বাজার বাদে এ শিল্প থেকে প্লাস্টিক, রাবার ও গাড়ির অন্যান্য যন্ত্রাংশের বাড়তি বাজার তৈরির সুযোগ রয়েছে।