ক্যাসিনোবিরোধী বিশেষ অভিযানে সর্বপ্রথম
গ্রেফতার হন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। সে সময় তার বাসা থেকে
দেশী-বিদেশী মুদ্রা উদ্ধার করে র্যাব। এসব মুদ্রা কেনা হয়েছিল খোলাবাজার থেকে, যা পূর্বানুমতি ছাড়াই
সংরক্ষণ করেন তিনি। অনুসন্ধানে এমন তথ্য পাওয়ার পর খালেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে ফরেন
এক্সচেঞ্জ আইনে আরেকটি মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পাশাপাশি আদালতের অনুমতিক্রমে জব্দ বিদেশী মুদ্রা ও টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
পাবলিক অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টে জমা দেয়া হয়েছে।
প্রায় পাঁচ মাস অনুসন্ধানের পর বুধবার গুলশান
থানায় অবৈধভাবে ছয় দেশের মুদ্রা সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করায় খালেদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭
সালের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন আইনে সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইমের পরিদর্শক মো. ইব্রাহীম হোসেন বাদী হয়ে
মামলা করেন।
সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার
মোস্তফা কামাল বণিক বার্তাকে বলেন,
খালেদের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ আইনের মামলাটি
তদন্ত করতে গিয়ে অবৈধভাবে বিদেশী মুদ্রা সংরক্ষণের অভিযোগটি সামনে আসে। পরে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতিসাপেক্ষে ফরেন এক্সচেঞ্জ আইনে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা
করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, খালেদ মাহমুদের রাজধানীর
গুলশান ২ নম্বরের ৫৯ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৭ লাখ ৬৪ হাজার ৬০০
টাকা সমমূল্যের ছয় দেশের মুদ্রা উদ্ধার করে র্যাব। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের ১০ হাজার
৫০ ডলার, থাইল্যান্ডের ১০ হাজার ৪৯০ বাথ,
ভারতীয় ৩ হাজার ৫০০ রুপি, সৌদি আরবের ২ হাজার ৩২১ দশমিক ৫ রিয়েল, মালয়েশিয়ান ৬৫৬ রিঙ্গিত। এর
বাইরে সংযুক্ত আরব আমিরাতেরও কিছু দিরহাম উদ্ধার করা হয় তার বাসা থেকে।
খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার পাসপোর্ট পর্যালোচনার পর
সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। সংস্থাটির অনুসন্ধান বলছে, খালেদের সঙ্গে থাকা একটি
বেসরকারি ব্যাংকের ডেবিট কার্ডে মার্কিন ডলার এনডোর্সমেন্ট থাকলেও নগদ কোনো বিদেশী
মুদ্রার এনডোর্সমেন্ট নেই। তিনি বিদেশী
মুদ্রা সংরক্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে কোনো
অনুমতি নেননি। অর্থাত্ দেশের চোরাই বাজার
থেকেই তিনি ছয় দেশের মুদ্রা কিনেছেন।
ইব্রাহীম হোসেন বণিক বার্তাকে বলেন, খালেদ মাহমুদের বাসা থেকে
উদ্ধারকৃত ছয় দেশের মুদ্রা আদালতের আদেশে সিআইডির জাল নোট শনাক্তকরণ শাখা থেকে
বিশেষজ্ঞ পরীক্ষায় দেখা যায় মুদ্রাগুলো আসল। পরবর্তীতে তার কাছে থাকা দেশী-বিদেশী মুদ্রা রাষ্ট্রের
অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দেন আদালত। আদেশ মোতাবেক জব্দ করা দেশী-বিদেশী মুদ্রা বাংলাদেশ
ব্যাংকের পাবলিক অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টে রাষ্ট্রের অনূকুলে জমা দেয়া হয়েছে।