গতকাল এ প্রতিবেদন দাখিল না হওয়ায় ঢাকা মহানগর হাকিম মোহম্মাদ জসিম নতুন এ তারিখ ধার্য করেন। মামলাটিতে এ পর্যন্ত ১৪ জন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। এর মধ্যে এক কিশোরসহ তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহনাজ বেগমসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষিকা এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও এ মামলায় আসামি করতে মামলার বাদী নিহত রেনুর ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু আদালতে আবেদন করেছেন। এজন্য মামলার তদন্ত আটকে আছে বলে জানা গেছে।
আটককৃত আসামিরা হলেন মো. শাহীন (৩১), মো. রাচ্চু মিয়া (২৮), মো. বাপ্পি (২১), ইব্রাহিম ওরফে হূদয় মোল্লা (২০), মুরাদ মিয়া (২২), মো. সোহেল রানা (৩০), মো. বিল্লাল (২৮), মো. আসাদুল ইসলাম (২২), মো. রাজু (২৩), আবুল কালাম আজাদ (৫০), মো. কামাল হোসেন (৪০), মো. ওয়াসিম (১৪), রিয়া বেগম ময়না (২৭) ও মো. জাফর হোসেন (২০)।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০ জুলাই রাজধানীর বাড্ডা কাঁচাবাজারের সামনে বাড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েকে ভর্তির খোঁজখবর নিতে গিয়ে উচ্চশিক্ষিতা তাসলিমা বেগম রেনু ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হন। ওই ঘটনায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নিহতের ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু।
সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায় ছেলেধরা বলে বাইরে থেকে হট্টগোল শুরু হলে ৩ থেকে ৪ মিনিটের মধ্যেই স্কুলের কিছু অভিভাবক ও বাইরে থেকে আসা মানুষের এক বিশাল জটলা তৈরি হয়। এ সময় কয়েকজন যুবক তাকে মাটিতে ফেলে নির্মমভাবে লাঠি দিয়ে পেটায়। কেউবা এলোপাতাড়ি লাথি মারেন। এতে রেনু মারা যান। ভিকটিম রেনুকে রক্ষায় কেউই এগিয়ে আসেননি।
নিহত রেনুর ১১ বছরের ছেলে তাহসিন আল মাহির ও চার বছরের মেয়ে তাসনিম তুবা নামে দুই সন্তান রয়েছে। ঘটনার দিন মেয়ে তুবাকে ভর্তির খোঁজখবর নিতেই ওই স্কুলে গিয়েছিলেন তিনি। নিহত রেনু আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেন। এর আগে স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন। প্রায় দুই বছর আগে স্বামী তসলিম হোসাইনের সঙ্গে তার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে তিনি মায়ের সঙ্গে মহাখালীর ওয়্যারলেস গেটের একটি ভাড়া বাসায় ছেলেমেয়ে নিয়ে বসবাস করছিলেন। ছেলেকে ছয় মাস আগে তার বাবা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা বড় ভাই মো. আজগার আলীর কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রেনু।