এসডিজি অর্জনে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব দরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সরকারি ও বেসরকারি খাতের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব দরকার বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। গতকাল এসডিজি অর্জনবিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল দেশের এসডিজি অর্জনে সমন্বিত অংশগ্রহণ অনুপ্রাণিত করতে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের উদ্যোগে প্রকাশ করা হয় বেসরকারি পর্যায়ের প্রথম এসডিজি প্রতিবেদন। সিএসআর সেন্টার ও ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি বাংলাদেশের যৌথ সহযোগিতায় এটি প্রকাশ করা হয়। এসডিজি প্রতিবেদন প্রকাশ এবং আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সিএসআর সেন্টারের চেয়ারম্যান ফারুক সোবহানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম, বীমা উন্নয়ন এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদস্য মোশাররফ হোসেন, যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন এবং জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিয়া সেপ্পো।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে এসডিজি অর্জনে প্রায় ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। তবে গত কয়েক বছরে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো থেকে যে অর্থ সহযোগিতা এসেছে, তা মোট চাহিদার ২ দশমিক ৮ শতাংশ। আর এ অর্থের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ খরচ করা হয়েছে উন্নত দেশের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে। ফলে পিছিয়ে থাকা দেশগুলো বরাদ্দ পেয়েছে সামান্য। তাই এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ জরুরি।

তিনি বলেন, মূলত এসডিজি বাস্তবায়নে পাঁচভাবে অর্থ আসতে পারে। এগুলো হলো—সরকারি খাত, বেসরকারি খাত, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও অনুদান সহযোগিতার মাধ্যমে।

বেসরকারি খাতকে বিনিয়েগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন এবং ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাত, সরকারি খাত, সুশীল সমাজ এবং এনজিওর মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে।

আসাদুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি খাতকে সরকারের সঙ্গে এসডিজি বাস্তবায়নে দায়িত্ব নিতে হবে।

ফারজানা চৌধুরী বলেন, এসডিজির মূল নীতির আলোকে পরিবেশ-প্রতিবেশ ঝুঁকি এড়িয়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে উদ্ভাবনী সেবা প্রদানে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স। আগামী দশকে এসডিজির ১৬৯টি বিষয়কে ১৭টি লক্ষ্যমাত্রার মাধ্যমে অর্জনের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা বাড়ানো গেলে জাতীয় পর্যায়ে লক্ষ্যমাত্রা সহজ হবে।

আয়োজকরা জানান, জাতিসংঘ প্রতিবেদন নীতিমালা অনুসরণে এসডিজি বাস্তবায়নে দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোগের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে এ প্রকাশনায়। 

প্রসঙ্গত, টেকসই উন্নয়নের ব্যাপারটি প্রথম আলোচনায় আসে ১৯৮৭ সালে, বরুন্টল্যান্ড কমিশনের রিপোর্টে। ২০০০ সালে শুরু হওয়া ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল’ বা এমডিজি অর্জনের সময় শেষ হয় ২০১৫ সালে। এরপর জাতিসংঘ ঘোষণা করে ১৫ বছর মেয়াদি ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল’ বা এসডিজি। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে ২০১৬ থেকে ২০৩০ মেয়াদে এসডিজির ১৭টি লক্ষ্য পূরণ করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন