সাড়ে ছয় দশক আগে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতি আদায় এবং এর মযার্দা প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে যে আন্দোলন তুঙ্গে উঠেছিল, তার মাধ্যমে তত্কালীন পূর্ববঙ্গবাসী বাঙালি সমাজের মধ্যে এক নতুন চেতনা ও মূল্যবোধ জাগ্রত হয়।
বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারিতে এ অয়োময় প্রত্যয় অর্জিত হয় যে, জাতি হিসেবে এ দেশ ও সমাজের সার্বিক আর্থসামাজিক ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন সর্বস্তরে প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষার ব্যবহার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা।
ভাষা কৃষ্টিই প্রত্যেক জাতির প্রকৃষ্ট সম্পদ, তার রাজনৈতিক অধিকার ও অর্থনৈতিক জীবনযাপনে স্বয়ম্ভরতা অর্জনের, সাবলীল
স্বচ্ছন্দ জীবনযাপনের এবং স্বনির্ভর জাতিসত্তার পরিচিতি লাভের একমাত্র সার্টিফিকেট।
আর
তাই যখনই আমাদের এই প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষার ওপর শত্রুরা আক্রমণ চালিয়েছে, তখনই আমরা রুখে দাঁড়িয়েছি।
যেহেতু ভাষা বা সংস্কৃতি থেকে পৃথক হয়ে জাতি হিসেবে আমাদের কোনো অস্তিত্ব ভাবা সম্ভবপর ছিল না, সেহেতু আমরা ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রের স্বাধিকার আদায়ের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম।
তত্কালীন সমাজে বাঙালিরা রাজনৈতিক চেতনায় খুব একটা প্রখর ছিল না।
কিন্তু একুশে ফেব্রুয়ারি তাদেরকে সে মহামন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করেছিল, সন্দেহ নেই।
ভাষার স্বাধিকার আদায় থেকে শুরু করে একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবি আমরা তাই পরবর্তীকালে করেছিলাম।
আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনা কতখানি প্রখরতা লাভ করলে আমরা এতখানি পথপরিক্রমণের স্বপ্ন দেখেছিলাম এবং পথ পাড়িও দিয়েছি, তার মর্ম উপলব্ধির মধ্যেই একুশের চেতনার মাহাত্ম্য নিহিত।
ঔপনিবেশিক শাসনামলে অর্থনৈতিক শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে বাংলাদেশের জনগণ ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত থেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করে। সুদীর্ঘকাল বিদেশী শাসন ও শোষণে বিপর্যস্ত এ দেশের অর্থনৈতিক জীবনযাত্রায় মৌল পরিবর্তনের প্রত্যাশা ও প্রয়াসও দীর্ঘদিনের। এ দেশের রাজনীতি মূলত এবং মুখ্যত আপামর জনসাধারণের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সম্পদের বণ্টন ব্যবস্থায় বৈষম্য দূরীকরণের দাবিকে কেন্দ্র করে, বিশেষ করে মুখের ভাষা, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অনির্বাণ আকাঙ্ক্ষাকে ঘিরে দানা বাঁধে। সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণে সফলতা-ব্যর্থতার দায়ভাগ রাজনৈতিক-অর্থনীতির নীতিনির্ধারকদের। কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণে দূরদর্শিতার অভাব এবং আত্মস্বার্থবাদী ও গোষ্ঠীগত দৃষ্টিভঙ্গির ফলে জাতীয় ঐকমত্যের অভাবজনিত পরিবেশে জাতীয় অর্থনীতির সার্বিক সমৃদ্ধি সাধনের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ ব্যাহত হয়। এমন অপারগ পরিস্থিতিতে অনেক উন্নয়নশীল দেশের মতো অর্থনৈতিক উন্নয়নে সম্ভাবনাময় হয়েও বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে পুরোপুরি সফল নয়।
একুশে ফেব্রুয়ারি শুধু আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনা দিয়েছিল তা নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অর্থনীতির স্বয়ম্ভরতা অর্জনের একটা সুস্পষ্ট ইঙ্গিতও করেছিল।
একুশের চেতনা এমনই প্রগতিশীল ছিল, এমনই প্রগাঢ় ছিল যে যার জন্য স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম আমরা সবাই।
একুশের ভাবধারা প্রথম দিকে কতিপয় ছাত্রসমাজ ও বুদ্ধিজীবী মহলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরবর্তীকালে তা দেশের আপামর জনসাধারণকেও স্পর্শ করেছিল।
একুশ আমাদের যে চেতনা ও মূল্যবোধ উপহার দিয়েছিল, তা ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে, স্বৈরাচারের পতনকার্যে একতাবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে, নিপীড়িত জনগণের পাশে দাঁড়াতে এবং সর্বোপরি মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ হতে।
একুশের চেতনা আমাদের সাহিত্যাঙ্গনেও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
জাতীয়তাবাদী সাহিত্যের পাশাপাশি গণমুখী সাহিত্য রচনায় মনোনিবেশ করেছিলেন আমাদের কবি-সাহিত্যকরা।
সাহিত্যধারায় এক নবযুগের সূচনা হয়েছিল, তাতে সন্দেহ নেই।
একুশের চেতনা তাই স্বাধীনতাপূর্ব বাংলাদেশে আমাদের একটি মহান আত্মপ্রত্যয়ী, স্বধর্মে নিষ্ঠাবান এবং স্ব-ঐতিহ্যের পরম পূজারি জাতিতে পরিণত হওয়ার মহা শিক্ষা দিয়েছিল।
একুশ ঘিরে শোষণ, বঞ্চনা অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের যে মহামন্ত্রে আমরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম, তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ’
৭১-এর
সফল মুক্তিসংগ্রাম।
একুশের চেতনা কোনো অচল অনুভূতির নাম নয়, বরং সচল প্রগতিবাদই এর ভিত্তি।
মূল্যবোধ উৎসাহ দেয় পুরনো জীর্ণ ঘুণে ধরা রীতি-রেওয়াজের পরিবর্তন সাধনে।
উৎসাহ দেয় বিপ্লব করতে, বিদ্রোহ করতে ওইসব বিবাদ-বিসম্বাদের বিরুদ্ধে, যা মানুষের আসল পরিচয় মনুষ্যত্বকে হত্যা করে।
বিদ্রোহ, বিপ্লব তাই নতুন নতুন মূল্যবোধের জন্ম দেয়।
আবার মূল্যবোধও বিপ্লব ও বিদ্রোহের সূচনা করে।
মূল্যবোধ সৃষ্টির এটা সাধারণ এবং স্বাভাবিক নিয়ম হলেও অনেক সময় পরিবেশের অশুভ হাওয়া যে মূল্যবোধের জন্ম দেয়, তা কোনোমতেই কল্যাণকর হতে পারে না; বরং তা ডেকে আনতে পারে মানবভাগ্যের অশুভ পরিণতিকে।
সমাজে যখন নতুন মূল্যবোধের জন্ম হয়, তখন পুরনো মূল্যবোধ ভেঙে যায়।
এভাবে চলতে থাকে মূল্যবোধের ভাঙাগড়া পর্ব।
যেহেতু এ সমাজের আবহাওয়া, পরিবেশ, প্রতিবেশ সদা পরিবর্তনশীল, সেহেতু মূল্যবোধের নবমূল্যায়ন ঘটবে যুগে যুগে কালে কালে বিভিন্ন ঘটনা পরিক্রমায়।
এটাই স্বাভাবিক নিয়ম।
কিন্তু কখনো যদি এ গতিধারা ব্যাহত হয় অর্থাৎ পুরনো মূল্যবোধের সংস্কার না হয় বা যুগের প্রয়োজনে নতুন মূল্যবোধের জন্ম না হয়, তাহলে সমূহ বিপদের আশঙ্কা দেখা দেয়।
সামাজিক কাঠামো বা শ্রেণীভেদ অনড় থাকলে বা পরিবেশতাড়িত অশুভ আবহাওয়ার কুলক্ষণে কুলগ্নে পড়লে পুরনো মূল্যবোধের অবক্ষয় শুরু হয়।
নতুন মূল্যবোধ জন্ম হওয়া তো দূরের কথা, পুরনো মূল্যবোধকে জিইয়ে রাখার পরিবর্তে তার অবক্ষয় শুরু হলে এর চেয়ে শোচনীয় পরিণতি আর হতে পারে না।
বলা বাহুল্য, একুশ শতকের শুরু কিংবা তার আগে থেকে যেন দেশে-বিদেশে সমাজ, অর্থনীতি ও রাষ্ট্রনীতিতে প্রতিষ্ঠিত নানা মূল্যবোধের বহুমুখী ও ব্যাপক ভাঙাগড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মূল্যবোধ যদি কখনো অকল্যাণকর হয়, তা হচ্ছে ওই সময়েই, যখন পুরনো মূল্যবোধের সংস্কার করা বাদ রাখা বা প্রকারান্তরে তার অবক্ষয় হতে দেয়া হয়।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে মাঝেমধ্যে আমরা তেমনই এক সংকটের সম্মুখীন হয়েছি।
দুঃখের কথা, যে মহান মূল্যবোধ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিল, স্বাধীনতা লাভের পরে আমরা তা হারাতে বসেছিলাম।
স্বাধীনতা আদায়ে আমাদের যে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া, তা ঐতিহাসিক হলেও স্বাধীনতা রক্ষায় বা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের অপারগতা-অক্ষমতা মাঝে মাঝে পরম দুঃখের বিষয় হিসেবে দেখা দিয়েছে।
আমাদের সেই সব মূল্যবোধের অবক্ষয় শুরু হয়েছে, যা একদিন আমাদের উজ্জীবিত করেছিল এক মহান আদর্শে।
আমরা মূল্যবোধের জন্ম দিইনি বা নবমূল্যায়ন করিনি, যা কিনা অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।
কীভাবে এবং কেন আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় শুরু হয়েছে, তার ব্যাখ্যা এ প্রসঙ্গে করাটা যুক্তিযুক্ত বৈকি।
তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের আগ্রাসী নীতি, গোষ্ঠীপ্রিয়তা ও ঐতিহ্য হত্যাকারী মনোভাবের বিরুদ্ধে আমরা কণ্ঠ সোচ্চার করেছিলাম।
সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলাম।
তদানীন্তন সরকারের গোটা প্রশাসন যন্ত্র ছিল নানা প্রকার হীনতাদুষ্ট।
বস্তুগত দৃষ্টিতে এসবের থেকে মুক্ত ও রহিত এবং শোষণহীন সমাজ গঠনই ছিল আমাদের সেদিনকার সংগ্রামের মূল মেনিফেস্টো।
কিন্তু ভাষা আন্দোলনের পর ৬৮ বছরে এবং স্বাধীনতার পর এত বছরে আমরা সেসবের বাস্তবায়নে কতটুকু সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি, এ মুহূর্তে তা বিবেচ্য।
শোষক সমাজের স্বাভাব পাল্টেছে কিনা দেখার বিষয়।
দেশের সাধারণ মানুষ একদিন এ শোষণ নীতি থেকেই মুক্তি পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছিল, আশায় বুক বেঁধেছিল।
কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে শোষণ চলছে, অর্থনৈতিক-সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্য-দুর্দশা দূর হয়নি, বরং বেড়েছে।
সমাজে নিঃস্ব হয়েছে আরো নিঃস্ব আর বিত্তশালী আরো বিত্তশালী।
সাধারণ মানুষ হতভাগার মতো এসব দেখতে দেখতে তাদের আগের সেই মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে।
আকাশসংস্কৃতির বদৌলতে বিদেশী ভাষা ও সংগীত-সাহিত্যের অনাকাঙ্ক্ষিত অনুপ্রবেশ এবং নানা উপায়ে যদি চলে অর্থনৈতিক আগ্রাসন, স্বনির্ভর ও স্বয়ম্ভরযোগ্য অর্থনীতিকে পঙ্গু করতে যদি চলে অধীনস্থ করার কূটপ্রয়াস, জনগণের কথা বলে গণঅধিকারের অপব্যবহার,
জনসেবার নামে যদি জনগণের হয়রানিই বেড়ে চলে, তাহলে একুশের মূল্যবোধ মুহ্যমান হয়ে পড়বে।
সবাই দেখছে শিক্ষা ক্ষেত্রে অরাজকতা অনুপ্রবেশ করেছে, প্রতিবাদী ও প্রগতিশীল ছাত্রসমাজ আজ যেন অনিমেষ যাত্রী, আদর্শ ছাড়া, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেই সেই পবিত্র সম্পর্ক।
বড়
দুঃখের হলেও বলতে হয়, একদিন যে কবি, সংস্কৃতিকর্মী, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী আর্থসামাজিক রাজনৈতিক অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার, লিখেছিলেন এন্তার কবিতা ও গান, মেধা ও মনন দিয়ে গড়ে তুলেছিলেন প্রতিরোধের দেয়াল, তারাও যেন ভিন্ন পথযাত্রী সেজে নির্বিকার দর্শকের ভূমিকায়।
তারা দ্বিধাবিভক্ত, দলীয় শ্রেণীগত অনিরপেক্ষতায় কোণঠাসা।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে তেমন উল্লেখযোগ্য সৃজনশীল সাহিত্য, চলচ্চিত্র, গান
রচিত হয়নি।
যেমনটি হয়েছিল স্বাধীনতা-পূর্ব বাংলাদেশে।
আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও সে অর্থে তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো জয়যাত্রা সূচিত হয়নি, বরং অপাঙেক্তয়-অগ্রহণযোগ্য বিদেশী সংস্কৃতির বিকৃত উচ্চারণের অভিলাষ যেন অবিরত।
শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে যে আন্দোলন, তার স্বতঃস্ফূর্ততা অর্থবহ হবে, এর যথার্থতা প্রতিপন্ন হবে যদি এ আন্দোলন সমপর্যায়ের বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন কিংবা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মৌল উদ্দেশ্য অভিপ্রায় অর্জনের সালতামামি ও সফলতা-ব্যর্থতা পর্যালোচনায় নিবেদিত নিষ্ঠাবান থাকে।
অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন ব্যতিরেকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা নির্মল নয়, নয় অর্থবহও।
অর্থনৈতিক জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত করে কিংবা উদাসীন থেকে কোনো প্রয়াস-প্রচেষ্টাকে অর্থবহ পরিণতিতে নিয়ে যাওয়া দুষ্কর।
যেহেতু সাংস্কৃতিক চেতনা মানুষের সুকুমার বৃত্তিগুলোকে ফুটিয়ে তুলতে সহায়তা করে এবং যেহেতু সত্য ও সুন্দরের প্রকাশই সাংস্কৃতিক চেতনার অন্যতম কাজ, সেহেতু সারা দেশে আজ প্রয়োজন এক সুস্থ ‘সামাজিক-সাংস্কৃতিক
আন্দোলনের’; মানুষের হূদয়ে সত্য ও সুন্দরের বিকাশ ঘটলে সে অন্যায়কে ঘৃণা করতে শিখবে এবং তার মধ্যে ঘটবে মহত্তম আদর্শের বিকাশ।
সাংস্কৃতিক এক নবজাগৃতির মাধ্যমেই আমরা মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ করতে পারি।
একুশে ফেব্রুয়ারির হীরক জয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে এ নবজাগৃতিই হোক প্রার্থনার, প্রত্যাশার।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ: সরকারের সাবেক সচিব ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান