দক্ষিণ কোরিয়ায় গত বছর রেকর্ড ২২০ মিলিয়ন দর্শক প্রেক্ষাগৃহে গেছে।
এ
রেকর্ড দেশটিতে গত বছর মুক্তিপ্রাপ্ত পাঁচটি চলচ্চিত্রের প্রতিটিকে কম করে হলেও ১০ মিলিয়ন দর্শক দিতে সক্ষম হয়েছে।
কোরিয়ান ফিল্ম কাউন্সিল কর্তৃক প্রকাশিত এক আর্থিক প্রতিবেদনে গত বছর দেশটির চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির হালহকিকত নিয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনটিতে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে গত বছর দেশটির প্রেক্ষাগৃহগুলো মোট ২২৬ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন দর্শনার্থী গ্রহণ করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি এবং এটাই এ-যাবৎ কোরিয়ান চলচ্চিত্র ইতিহাসের রেকর্ড।
গত বছর দেশটির চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির সম্মিলিত খাত থেকে আয় হয়েছে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যা বছরে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে এবং আয়ের হিসাবেও একে রেকর্ড বলা হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির এই উল্লম্ফনের কারণ হিসেবে জানা গেছে, গত বছর নির্মিত পাঁচটি চলচ্চিত্র এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এর
মধ্যে কোরিয়ান কমেডি কপ ফিল্ম এক্সট্রিম জব রয়েছে সবচেয়ে এগিয়ে; ছবিটি প্রথমবারের মতো ১০ মিলিয়ন দর্শকের মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেলতে সক্ষম হয়।
১৬ দশমিক ২৮ মিলিয়ন টিকিট বিক্রিসহ এক্সট্রিম জব ছবিটি দক্ষিণ কোরিয়ায় গত বছর সবচেয়ে বেশিসংখ্যকবার দেখা চলচ্চিত্রের তকমা পায়।
এর
সঙ্গে আমেরিকান সুপারহিরো চলচ্চিত্র অ্যাভেঞ্জারস: এন্ডগেম পাল্লা দিয়েছিল।
তবে তা এক্সট্রিম জব-এর চেয়ে বহুদূর পেছনেই ছিল।
সব
মিলিয়ে অ্যাভেঞ্জারস: এন্ডগেম ১৩ দশমিক ৯৩ মিলিয়ন টিকিট বিক্রি করতে সক্ষম হয়েছিল।
প্রতিবেদন অনুসারে, এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ওয়াল্ট ডিজনি অ্যানিমেশন ফ্রোজেন ২ (১৩ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন), হলিউড অ্যানিমেশন
আলাদিন (১২.৫৫ মিলিয়ন) ও সর্বশেষ অস্কারবিজয়ী কোরিয়ান ব্ল্যাক কমেডি প্যারাসাইট (১০ দশমিক ০৯ মিলিয়ন)।
গত বছর মোট টিকিটের ৫১ শতাংশ বিক্রি করতে সক্ষম হয় কোরিয়ান চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি এবং তাদের সম্মিলিত আয় দাঁড়ায় ৯৭০ দশমিক ৮ বিলিয়ন ওন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনটি বলছে, দক্ষিণ কোরিয়াই একমাত্র দেশ, যেটি চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহগুলোয় বার্ষিক পরিদর্শনের গড় সংখ্যার দিক থেকেও নিজের গড়া বিশ্ব রেকর্ডটি ধরে রেখেছে।
যদিও কোরিয়ান ইন্ডি ও আর্ট ফিল্মের বাজারের অবস্থা খুব একটা ভালো যায়নি গত বছর।
মূলধারার ছবি যেখানে ২২০ মিলিয়নের বেশি দর্শক পেয়েছে, সেখানে ইন্ডি ও আর্ট ছবি মাত্র ৮ দশমিক ১ মিলিয়ন দর্শক টানতে সক্ষম হয়েছে।
এ
সংখ্যা ২০১৮ সালের চেয়েও ৫ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
প্রতিবেদনটিতে আরো দেখানো হয়েছে, গত বছর মোট দর্শকের মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ পেয়েছে ইন্ডি ও আর্ট ফিল্মগুলো, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
যাই হোক না কেন বন জুং হো নির্মিত প্যারাসাইট ছবিটি ৯২তম অস্কার আসরে সেরা ছবির পুরস্কার ছিনিয়ে নিয়ে যে কৃতিত্ব অর্জন করেছে, তা অদূর ভবিষ্যতে দেশটির চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির চলমান সফলতাকে আরো বেশি বেগবান করবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।
সূত্র: কোরিয়ান টাইমস
