শিক্ষিকাকে গাড়িচালকের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, প্রতিবাদে মানববন্ধন

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, দিনাজপুর

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) রিজেন্ট বোর্ড এর সদস্য ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফাহিমা খানমকে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদ এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের শিক্ষক-কর্মচারীরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘রিজেন্ট বোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম। সেই ফোরামের একজন সম্মানিত সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের সভাপতি এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. ফাহিমা খানমকে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি চালক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

বক্তারা বলেন, অসুস্থ মানুষিকতার এসব মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ ও সমাজের শত্রু। গাড়ি চালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের এধরনের ধৃষ্টতা এটাই নতুন নয়। এর আগেও ২০১৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এই কর্মচারী শিক্ষক ফোরামের একটি সভায় পূর্বানুমতি ব্যতীত প্রবেশ করে প্রশাসনের সহায়তাকারী শিক্ষকদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে লাঞ্চিত করেন। এছাড়াও ওই কর্মচারীর নেতৃত্বে ৩, ৪ জন উচ্ছৃঙ্খল কর্মচারী বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কুরুচিপূর্ণভাবে ব্যঙ্গ করে থাকেন।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা দাবি জানান, কয়েকদিন আগে আমরা জানতে পেরেছিলাম, গাড়ি চালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে কর্মচারীরা প্রশাসনে সহায়তাকারী শিক্ষকদের শহরের বিভিন্ন জায়গায় লাঞ্ছিত করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। যাতে আমরা সদা শঙ্কিত ও ভীতসন্ত্রস্ত থাকি। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষকরা দিনাজপুর কোতয়ালি থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাধারণ ডায়েরিও করেন।

শিক্ষকদের ভাষ্য, তার এ ধরনের কর্মকান্ডের জন্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মোশাররফ হোসেন মিঞাঁ ও প্রফেসর ড.এম. আফজাল হোসেন এর সময় ওই কর্মচারীকে ওএসডি করে রাখেন। সদ্য সাবেক উপাচার্যের সময় তিনি অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ কয়েকটি ইনক্রিমেন্ট গ্রহণ করে। সম্প্রতি রিজেন্ট বোর্ড তা বাতিল করে দেয়। তার বিরুদ্ধে তারই সাবেক স্ত্রী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছিল। একটি বিশেষ মহলের আস্কারা পেয়ে সে দিন দিন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। এমনকি এই সন্ত্রাসী হাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থী তথা জোড়া খুনের মামলারও অন্যতম প্রধান আসামি।

শিক্ষকরা বলেন, এই সন্ত্রাসীর হাতে নারী, শিশু, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কেউই তার কাছে নিরাপদ নয়। আমরা বিচার চাই বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. ফজলুল হক বলেন, একজন নারী শিক্ষক এভাবে অপমানিত হবেন তা কল্পনা করাও কঠিন শিক্ষক পরিষদের পক্ষে আমরা সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি অন্যথায়া কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য প্রদান করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী গণতান্ত্রিক শিক্ষক পরিষদের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. ভবেন্দ্র কুমার বিশ্বাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. তারিকুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রফেসর ড. ইমরান পারভেজ, কার্যকরী সদস্য, প্রফেসর ড. খালেদ হোসেন প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন