চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশটির গুয়াংঝু শহর ও আশপাশ এলাকার হাসপাতাল, বাজার ও গণপরিবহনে হাতবদল হওয়া কাগুজে মুদ্রা ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়েছে। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখা এ ঘোষণা দেয়। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
গুয়াংঝু চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডংয়ের রাজধানী। দেশটির স্থানীয় একটি অর্থনৈতিক বিষয়ক সংবাদমাধ্যম কাইসিন জানিয়েছে, পিপলস ব্যাংক অব চায়নার (পিবিওসি) আঞ্চলিক শাখার কর্মকর্তারা সেখানে এ ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিযুক্ত খাতগুলো থেকে সব ধরনের কাগুজে মুদ্রা সংগ্রহ করে তা ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য ওই অঞ্চলের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে এসব খাত থেকে আসা কাগুজে মুদ্রা সংগ্রহ করে তা জীবাণুমুক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। গুয়াংঝুর আঞ্চলিক শাখা কাগুজে মুদ্রা ধ্বংসের ঘোষণা দিলেও দেশটির অন্যান্য অঞ্চলে এসব মুদ্রা অতিবেগুনি রশ্মিতে জীবাণুমুক্ত করে ১৪ দিন আলাদাভাবে সংরক্ষণের পর তা আবার বাজারে ছাড়া হবে বলে জানিয়েছে পিবিওসি।
এর আগে পিবিওসির ডেপুটি গভর্নর ফ্যান ইফেই শনিবার জানান, চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি থেকে ওইদিন পর্যন্ত চীনের বাজারে নতুন ব্যাংক নোট ছাড়া হয়েছে ৬০ হাজার কোটি ইউয়ানের সমপরিমাণ। এর মধ্যে শেনঝেন অঞ্চল বাদে গুয়াংডংয়ের অন্যান্য স্থানে ৩ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিতরণ হয়েছে ৩০০ কোটি ইউয়ান। অন্যদিকে এ সময় অঞ্চলটির বাজার থেকে তুলে নেয়া হয়েছে ৭৮০ কোটি ইউয়ান।
প্রসঙ্গত, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো বাজার থেকে নিয়মিতভাবেই পুরনো কাগুজে মুদ্রা ও কয়েন সংগ্রহ করে ধ্বংস করে। বাজারে
ব্যবহারযোগ্য মুদ্রার প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য গৃহীত এ পদক্ষেপ সার্বিক মুদ্রাপ্রবাহে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। তবে রোগের প্রকোপ ঠেকাতে মুদ্রা ধ্বংসের পদক্ষেপ সাধারণত তেমন একটা নেয়া হয় না।
ইফেই আরো জানান, চীনা কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টিকিয়ে রাখতে আরো নতুন মুদ্রা বাজারে ছাড়বে।
গুয়াংঝুভিত্তিক বৃহদায়তন এক যৌথ মূলধনি ব্যাংকের উপপ্রধানের বরাত দিয়ে কাইসিন জানিয়েছে, সেখানকার ব্যাংকগুলোয় কাগুজে নোট জমা দেয়ার সময় গ্রাহকদের ওই মুদ্রার উৎস সম্পর্কে জানাতে হবে। তবে এ ধরনের পদক্ষেপ আদতে কার্যকর হবে কিনা, সে বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেও বেশ সন্দিহান।