গাজীপুরে শহীদ মিনার নেই ৭১৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে

বণিক বার্তা প্রতিনিধি গাজীপুর

 গাজীপুরে ৭১৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখনো কোনো শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। প্রতি বছরে মতো এবারো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করে দিবসটি পালন করা হবে, না হয় যেখানে শহীদ মিনার রয়েছে, সেখানে গিয়ে দিবসটি পালন করতে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, গাজীপুর জেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকার ৭৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪১৭টিতেই কোনো শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। এছাড়া মাদ্রাসা ও কিন্ডারগার্টেনগুলোর সিংহভাগেই নেই কোনো শহীদ মিনার। ৪৭টি কলেজের ১৫টিতে, ৩৫২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১১৩টিতে এবং ১৭৮টি মাদ্রাসার মধ্যে ১৬৮টিতেই কোনো শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে কিংবা অন্যান্য বিশেষ দিনে ফুল দিতে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোরদেরও দূরদূরান্তে যেতে হয়। এতে শিক্ষার্থীদের অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

শহরের জয়দেবপুর দারুছ ছালাম ফাজিল মাদ্রাসাটি ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখানে কোনো শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার নির্মাণ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল মান্নান বণিক বার্তাকে বলেন, পর্যাপ্ত ফান্ডের অভাবে তাদের প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায়নি। ফান্ড ও নির্দেশনা পেলেই তা নির্মাণ করা হবে। তবে ডিজির নির্দেশনা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে নিজস্বভাবে প্রোগ্রাম করা হয়। ২১ ফেব্রুয়ারির দিন শিক্ষার্থীরা প্রভাতফেরি নিয়ে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায় এবং শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

গাজীপুর সিটির ছোট দেওড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী খাদিজা বেগম বলেন, তাদের স্কুলে কোনো শহীদ মিনার নেই। এজন্য তাদের ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে অন্য স্কুলের শহীদ মিনারে যেতে হয়। যদি তাদের স্কুলে একটি শহীদ মিনার থাকত, তাহলে তাদের কষ্ট হতো না। ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাজেদা বেগম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে শহীদ মিনার নির্মাণের কথা জানানো হয়েছে। শহীদ মিনার না থাকার কারণ হিসেবে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই ফান্ড না থাকাকে দায়ী করে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণে কোনো সরকারি বরাদ্দ নেই। তবে স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোর কমিটি কিংবা জেলা পরিষদের উদ্যোগে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন