গতবারের মতোই বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে (বিসিএল) আবারো শিরোপার
লড়াইয়ে মুখোমুখি দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চল। গতকাল তৃতীয় ও শেষ রাউন্ডের শেষ দিনে
ফাইনাল নিশ্চিত করেছে এ দুই দল। মধ্যাঞ্চলের বিপক্ষে স্নায়ুক্ষয়ী ড্রয়ের মধ্য দিয়ে
ফাইনালের ছাড়পত্র পেয়েছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ। উত্তরাঞ্চলকে ৮ উইকেটে হারিয়ে
পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষস্থান নিয়ে ফাইনালে উঠেছে পূর্ব। আগামী শনিবার চট্টগ্রামে
শিরোপার লড়াইয়ে নামবে এ দুই দল।
বিসিএলে নিজেদের সবচেয়ে দুর্ভাগা ভাবতেই পারে পূর্ব। গতবারসহ তিন-তিনবার ফাইনালে উঠেও শিরোপার নাগাল পায়নি
দলটি। বিপরীতে এ আসরকে অনেকটাই নিজেদের সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে দক্ষিণ। গত আসরসহ
মোট চারবার শিরোপা জিতেছে দলটি। রবিন লিগে পূর্বের পেছনে থেকে দ্বিতীয় সেরা হিসেবে
ফাইনালে এসেছে রাজ্জাক বাহিনী। তাদের সংগ্রহ ১৯.৮৯ পয়েন্ট। শীর্ষস্থান পাওয়া
পূর্বের সংগ্রহ ২৩.৪৭ পয়েন্ট। তৃতীয় স্থানে থাকা মধ্যাঞ্চল পেয়েছে ১১.৫ পয়েন্ট।
টেবিলের সর্বনিম্ন স্থান পাওয়া উত্তরের ঝুলিতে ৬.২২ পয়েন্ট।
এবার ফাইনালে উঠতে যথেষ্টই ঘাম ঝরাতে হয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের দলটিকে।
দক্ষিণের সামনে টার্গেট ছিল ৫০৭ রানের। এত বিশাল টার্গেটের সামনে ১৫৯/৪ নিয়ে তৃতীয়
দিনের খেলা শেষ করে দক্ষিণ। অর্থাৎ শুধু ড্র করার
জন্যই শেষ ৬ উইকেটে পুরো দিন পার করার এক দুরূহ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে গতবারের
চ্যাম্পিয়নরা। আর জিতলে দক্ষিণকে পেছনে ফেলে ফাইনাল খেলত মধ্যাঞ্চল। কিন্তু
মধ্যাঞ্চলের বাড়া ভাতে ছাই ঢেলে দিয়েছেন দক্ষিণের টেলএন্ডাররা। নবম উইকেট পতনের
পরও খেলা হয়েছে আরো ৯.৪ ওভার। ৫৮ বলেও শেষ উইকেট জুটি ভাঙতে পারেননি মধ্যাঞ্চলের
বোলাররা। ফরহাদ রেজা ও সফিউল ইসলাম দশম উইকেট জুটিতে প্রতিরোধের দেয়াল তুলে দলের
ফাইনাল নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন। ৯১ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন ফরহাদ। সফিউল
অপরাজিত থাকেন ১ রানে। ২৫ বল খেলে নিজের উইকেট আগলে রাখতে সমর্থ হন সফিউল।
এর আগের দিনের ১৫৯/৪ নিয়ে খেলতে নেমে দারুণ দৃঢ়তা দেখান শামসুর রহমান
শুভ ও নাইটওয়াচম্যান হিসেবে খেলা নাসুম আহমেদ। গতকাল এ জুটি ৫১.৩ ওভার আটকে রাখেন
প্রতিপক্ষ বোলারদের। ১৩৩ রান করে সাজঘরমুখো হন শামসুর। এর পরই পথ হারানোর জোগাড় হয়
দক্ষিণের। চটজলদি ফিরে যান নুরুল হাসান
(৮) ও
মেহেদী হাসান (৪)। পর পরই প্রান্ত
আগলে রাখা নাসুম (৮২) আউট হয়ে গেলে
দক্ষিণের হারের শঙ্কা প্রবল হয়ে ওঠে। এর দুই ওভার পরই বিদায় নেন অধিনায়ক রাজ্জাক (৪)। এ অবস্থায়
দক্ষিণের হারটাকে মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু শেষ উইকেট জুটিতে সব শঙ্কা দূর
করেন ফরহাদ রেজা ও সফিউল।
ইয়াসির আলীর জোড়া সেঞ্চুরিতে উত্তরের বিপক্ষে দাপটেই জিতেছে পূর্ব।
আগের দিনের ১৪৫/৫ নিয়ে খেলতে নেমে উত্তরের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ ২৬৯ রানে। প্রথম
ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ২৩ রানে। কিন্তু দলকে বেশিদূর টানতে
পারেননি বাংলাদেশের এ ব্যাটিং স্তম্ভ। ৩৮ রান করে আউট হয়ে যান মুশফিক। প্রথম
ইনিংসে ৫৯ রানে লিড নেয়া উত্তরের সামনে জয়ের জন্য টার্গেট দাঁড়ায় ২১১ রান। ওয়ানডে
মেজাজে খেলে এ টার্গেটে সহজেই পৌঁছে যায় পূর্ব। ৮৬ বল খেলে ৭০ রানে অপরাজিত থাকেন
মোহাম্মদ আশরাফুল। মাত্র ৮৮ বলের ইনিংসে ১১০ রান করেন ইয়াসির। প্রথম ইনিংসে তার
ব্যাট থেকে এসেছিল ১৬৫ রান।