ওয়ালটনের আইপিও

প্রান্তসীমা মূল্য নির্ধারণের নিলাম ২-৫ মার্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করবে দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ লক্ষ্যে কোম্পানিটির আইপিও শেয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য বা কাট অফ প্রাইস নির্ধারণের জন্য ৭২ ঘণ্টার নিলাম ২ মার্চ শুরু হবে।

এ বিষয়ে ওয়ালটনের কোম্পানি সচিব পার্থ প্রতীম দাস বলেন, ২ মার্চ বিকাল ৫টা থেকে বিডিং শুরু হবে, যা টানা ৭২ ঘণ্টা অর্থা আগামী ৫ মার্চ বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। এ সময় কোম্পানির শেয়ার কেনার জন্য যোগ্য বিনিয়োগকারীরা বিডিংয়ে অংশগ্রহণ করবেন। বিডিংয়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমে যোগ্য বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির কাট অফ প্রাইজ নির্ধারণ করবেন। এর পরে কোম্পানি নির্ধারণ করবে আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কতগুলো শেয়ার ছাড়বে।

পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংকঋণ পরিশোধ ও আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে ওয়াল্টন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। গত ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭১৪তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির আইপিও বিডিং অনুমোদিত হয়।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতিসহ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ২৪৩ টাকা ১৬ পয়সা, পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতি ছাড়া যা ১৩৮ টাকা ৫৩ পয়সা। গত পাঁচ বছরে কর-পরবর্তী নিট মুনাফার ভারিত গড় হারে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ২৮ টাকা ৪২ পয়সা।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জানুয়ারি আইপিওতে আসার কারণ এবং কোম্পানির আর্থিক ও ব্যবসায়িক নানা দিক তুলে ধরতে রোড শোর আয়োজন করে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকায় বিএমআরই, ৩৩ কোটি টাকা ব্যাংকঋণ পরিশোধ ও সাড়ে ৪ কোটি টাকা আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ নির্বাহে ব্যয় করবে তারা।

কোম্পানিটির ব্যবসা সম্প্রসারণ প্রকল্পে মোট ৬৮০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে আইপিও তহবিল থেকে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে ২৭৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া জার্মানির আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিইজির কাছ থেকে ৩৪০ কোটি টাকা দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেয়া হবে।

কোম্পানিটির আইপিও প্রসপেক্টাস অনুসারে, এর অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ হিসাব বছর শেষে ওয়ালটনের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৭২৪ কোটি টাকা এবং স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৭৮০ কোটি টাকা।

কোম্পানিটির গত পাঁচ বছরের রাজস্ব ও কর-পরবর্তী নিট মুনাফা পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে এর রাজস্ব আয় হয়েছে ২ হাজার ৯৯ কোটি টাকা আর মুনাফা হয়েছে ৫০২ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে ২ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব ও ৬২১ কোটি টাকা মুনাফা, ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে ৩ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা রাজস্ব ও ৭৩৪ কোটি টাকা মুনাফা, ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে ২ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা রাজস্ব ও ৩৫২ কোটি টাকা মুনাফা এবং ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে ৫ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা রাজস্ব ও ১ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা মুনাফা অর্জন করেছে কোম্পানিটি।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ ২০০৬ সালে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়, আর ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক উপাদনে আসে। ওই বছরই পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তরে (আরজেএসসি) নিবন্ধিত হয়। প্রথমে স্থানীয় বাজারে ইলেকট্রনিক ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স সরবরাহ করলেও বর্তমানে তাদের পণ্য বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।

ওয়ালটনের ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ট্রিপল এ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। রেজিস্ট্রার টু দ্য ইস্যু প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন