আমরা প্রায়ই
বাংলাদেশের
একাডেমিক
গবেষণার
দুর্বল
অবস্থা
নিয়ে
বিভিন্ন
গল্প
শুনি
কিংবা
লেখা
পড়ি,
যা
বৈশ্বিক
তালিকায়
আমাদের
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর
নিম্ন র্যাংকিংয়ের
নেপথ্যে
একটি
প্রধান
কারণ।
আমার
কাছে
গবেষণা
শূন্যতার,
বিশেষ
করে
সামাজিক
বিজ্ঞানে
একটি
প্রধান
কারণ
নিপুণভাবে
লেখার
পটুতার
অভাব।
ভালো
লেখার
নৈপুণ্য
আয়ত্তে
সবচেয়ে
জরুরি
ভালোভাবে
পড়ার
অভ্যাস
তৈরি।
সত্যিকারের
সমস্যাটি
এখানেই
নিহিত।
তবে নতুন
গবেষণা
শুরু
করার
আগে
ঠিক
কতগুলো
নিবন্ধ
ও
বই
পড়া
জরুরি,
সে
সম্পর্কে
কোনো
সুস্পষ্ট
নিয়ম
নেই।
তবে
বিষয়টি
স্পষ্ট
যে
আমরা
পর্যাপ্ত
পরিমাণে
পড়ছি
না,
এমনকি
আমাদের
মধ্যে
কেউ
হয়তো
পড়ছি
কিন্তু
খুব
বেশি
গভীরে
পৌঁছাতে
পারছি
না।
পড়ার
জন্য
অনেক
সময়ের
প্রয়োজন
হয়,
তাত্ক্ষণিকভাবে
যার
কোনো
সুফল
চোখে
পড়ে
না।
তাছাড়া
আমাদের
বেশির
ভাগ
মূল্যবান
সময়
বিশ্ববিদ্যালয়ের
ক্লাস,
প্রস্তুতি,
শিক্ষার্থীদের
পরামর্শ
প্রদান
এবং
বিভিন্ন
মিটিংয়ে
ব্যয়
হয়।
পূর্ণকালীন
শিক্ষক
হওয়ার
পরও
আমাকে
স্বীকার
করতে
হবে,
বই
পড়ার
জন্য
কিন্তু
আমি
প্রয়োজনীয়
সময়
বের
করতে
পারি।
তবে
শেষ
পর্যন্ত
যে
বিষয়টি
গুরুত্বপূর্ণ
হয়ে
ওঠে,
তা
হচ্ছে
অবসর
সময়টা
গবেষণার
জন্য
পড়ার
কাজে
ব্যয়
করব
নাকি
সামাজিক
যোগাযোগ
মাধ্যমে
ব্যবহার
করব
কিংবা
স্রেফ
সিনেমা
দেখে
কাটাব।
ইংরেজি
যাদের
মাতৃভাষা
নয়,
তাদের
জন্য
এ
ভাষায়
লেখাটা
একটি
ধীর
প্রক্রিয়া।
সুতরাং
লেখার
গতি
এবং
শৈলীর
বিকাশ
ঘটাতে
অবিচ্ছিন্নভাবে
প্রশিক্ষণের
প্রয়োজন।
আমি
নিজের
লেখার
শৈলীকে
পরিশীলিত
করতে
দ্য
ইকোনমিস্ট
ম্যাগাজিনসহ
বেশ
কয়েকজন
অর্থনীতিবিদের
লেখা
ব্যক্তিগতভাবে
অনুসরণ
করি।
এক্ষেত্রে
আমার
ওই
ম্যাগাজিনের
নিবন্ধ
কিংবা
অর্থনীতিবিদদের
সব
লেখার
সঙ্গে
একমত
হওয়ার
প্রয়োজন
নেই।
কেবল
তাদের
ইংরেজি
ব্যবহারের
নৈপুণ্যকে
অনুসরণ
করি।
সাধারণত
নিজের
কোনো
নিবন্ধ
নিয়ে
সন্তুষ্ট
হতে
আমার
বেশ
খানিকটা
সময়
লাগে।
কিন্তু
যখন
আমি
আর
লেখাটার
উন্নতি
সাধনে
পেরে
উঠি
না,
তখন
লেখার
মান
উন্নয়নে
আমি
পেশাদার
প্রুফরিডারের
সাহায্য
নিয়ে
থাকি।
২০১০
সালের
পর
থেকে
আমি
যত
গবেষণাপত্র
লিখেছি
এবং
যেখানে
আমার
সহগবেষক
ইংরেজ
নন,
সেক্ষেত্রে
আমি
বাইরের
প্রুফরিডারের
সহযোগিতা
নিয়েছি।
এক্ষেত্রে
আমাকে
গবেষণা
তহবিল
থেকে
বাড়তি
অর্থ
খরচ
করতে
হয়েছে।
আমাদের
মতো
গবেষক,
বিশেষ
করে
ইংরেজি
যাদের
মাতৃভাষা
নয়,
তাদের
জন্য
ইংরেজিতে
লেখাটা
খানিকটা
নিরুৎসাহের
হতে
পারে।
তাছাড়া
আমাদের
মস্তিষ্ক
এ
ধরনের
চেষ্টা
চালিয়ে
যাওয়াটাও
খুব
একটা
পছন্দ
করে
না।
তাই
এক্ষেত্রে
লেখার
গতি
সচল
রাখতে
আমাদের
পর্যাপ্ত
পরিমাণে
স্বতঃপ্রণোদিত
হতে
হবে।
আমি
অবশ্যই
স্বীকার
করব,
স্কুলের
দিনগুলোতে
পড়া
বাংলা
উপন্যাস
পরবর্তী
সময়ে
আমার
লেখার
দক্ষতা
তৈরিতে
সাহায্য
করেছে।
বিদেশে
পড়তে
যাওয়ার
অভিপ্রায়
নিয়ে
আমাদের
শিক্ষার্থীরা
যখন
তাদের
সুনির্দিষ্ট
উদ্দেশ্যের
বিবরণী
(স্টেটমেন্ট অব পারপাস)
তুলে
ধরে,
সেগুলো
পড়ে
আমি
তখন
খুব
সুস্পষ্টভাবেই
বলে
দিতে
পারি,
তাদের
মধ্য
থেকে
কোন
কোন
শিক্ষার্থী
স্কুলজীবনে
উপন্যাস
পড়েছে
আর
কারা
পড়েনি।
কিছু
শিক্ষার্থী
অনলাইনে
দেয়া
উদ্দেশ্য
বিবরণী
থেকে
নমুনা
সংগ্রহের
ভুল
পদক্ষেপ
নেয়
এবং
পরবর্তী
সময়ে
তারা
আর
ওই
কাঠামো
থেকে
বের
হয়ে
আসতে
পারে
না।
নিজের
সত্তা
উপলব্ধির
সঙ্গে
সৃষ্টিশীল
রচনার
বিষয়টি
যুক্ত।
আমরা
যখন
অনুষদ
সদস্য
হয়ে
উঠি,
তখন
স্বাভাবিকভাবেই
বিবেচনা
করা
হয়
যে,
শিক্ষকতা
ও
গবেষণায়
আমরা
বহুমুখী
অভিজ্ঞতায়
সমৃদ্ধ।
তাছাড়া
খুব
কম
বিশ্ববিদ্যালয়ের
শিক্ষকদের
লেখার
ওপর
প্রশিক্ষণ
দেয়া
হয়।
তরুণ
গবেষকদের
অনুপ্রাণিত
করতে
সামাজিক
বিজ্ঞানের
গবেষণা
পদ্ধতির
মতো
বিভিন্ন
প্রশিক্ষণ
কোর্স
রয়েছে।
কিন্তু
তা
খুব
একটা
কাজের
নয়,
কেননা
এগুলো
স্বাচ্ছন্দ্যে
লেখার
সক্ষমতাবিষয়ক
মূল
সমস্যাগুলো
খুব
একটি
চিহ্নিত
করতে
পারে
না।
সন্তান
বড়
করতে
যেমন
কসরত
প্রয়োজন,
স্বাচ্ছন্দ্য
ও
সুন্দর
লেখার
জন্য
ঠিক
একই
প্রচেষ্টা
গ্রহণের
প্রয়োজন
হয়।
মূল
বিষয়টি
হচ্ছে,
এর
পেছনে
আপনাকে
প্রচুর
সময়
দিতে
হবে।
আন্তঃশৃঙ্খলা
পদ্ধতিতে
পড়া
ও
প্রচুর
পরিমাণে
পাঠ
করা
ব্যক্তির
নিজস্ব
লেখার
ধরন
তৈরি
করে
দেয়।
এছাড়া
সহজ
ও
সাবলীল
লেখার
সংক্ষিপ্ত
কোনো
সংস্করণ
আমি
খুঁজে
পাইনি।
প্রতিভাবান
লেখকদের
সম্পর্কে
একটি
ভুল
ধারণা
প্রচলিত
রয়েছে
যে,
তারা
খুব
সহজেই
বাক্য
গঠনে
পারদর্শী।
আমার
মনে
হয়,
তথাকথিত
ওই
প্রতিভাবান
লেখকদের
সবচেয়ে
বড়
সুবিধা
হচ্ছে
তারা
পরিষ্কারভাবে
চিন্তা
করতে
সক্ষম,
যা
কিনা
তাদের
অপরিসীম
পড়াশোনা
আর
সৃষ্টিশীল
চিন্তার
ফলাফল।
বিখ্যাত
লেখকদের
লেখার
রুটিন
জানার
বিষয়টিও
পরমানন্দের।
অর্থনীতিবিষয়ক
বিখ্যাত
ব্লগার
ও
লেখক
টেইলার
কাউয়েন
প্রতিদিনই
লেখার
কাজটি
করে
থাকেন।
বিশিষ্ট
অর্থনীতিবিদ
ও
লেখক
পার্থ
দাস
গুপ্ত
যেমন
চারপাশে
ছোট
শিশুরা
দৌড়ে
বেড়াচ্ছে
এমন
পরিবেশে
খাবার
টেবিলে
বসেই
নির্বিবাদে
লিখে
যেতে
পারেন।
ফিকশন
লেখক
স্টিফেন
কিং
যেমন
তার
প্রাত্যহিক
কোটার
দুই
হাজার
শব্দ
লিখতে
প্রয়োজনীয়
পদক্ষেপ
গ্রহণ
করেন।
ভিক্টর
হুগো
যখন
‘দ্য হাঞ্চব্যাক
অব
নটর
ডেম’
লিখতে
শুরু
করেন,
তখন
নিজেকে
রীতিমতো
গৃহবন্দি
করে
রাখতেন
এবং
মনোসংযোগের
কৌশল
হিসেবে
(তিনি তার পরিধেয়
পোশাক
খুলে
রাখতেন,
যাতে
হুটহাট
বাইরে
বের
হওয়ার
প্রলোভন
এড়ানো
যায়)।
বিখ্যাত
লেখকদের
ভালো
লেখার
সঙ্গে
ঘুমের
অভ্যাসের
পারস্পরিক
সম্পর্ক
রয়েছে।
সাধারণত
ভোরে
মনঃসংযোগ
বিঘ্নিত
কম
হয়
বলে
বেশির
ভাগ
লেখকই
খুব
ভোরে
উঠে
লেখার
টেবিলে
বসেন।
সিলিভিয়া
প্লাথ,
বেঞ্জামিন
ফ্রাঙ্কলিন,
টনি
মরিসন
ও
ইমানুয়েল
কান্ট
সাধারণত
ভোর
৫টা
থেকে
লেখা
শুরু
করতেন।
তবে
ভোরে
উঠে
লিখলেই
যে
আপনি
সফল
লেখক
বনে
যাবেন,
তার
কোনো
নিশ্চয়তা
নেই।
এক্ষেত্রে
সবচেয়ে
জরুরি
হচ্ছে
একটি
রুটিনে
আসা
এবং
প্রতিদিন
লিখে
যাওয়া।
একজন গবেষককে আমরা একটি সুসজ্জিত অফিস ও কাজের বিস্তারিত রূপরেখা দিতে পারি। তবে লেখার অভ্যাস ব্যতীত তার জন্য উন্নত মানের গবেষণাপত্র তৈরি কঠিন হবে। প্রযুক্তির আলোকে লেখা একটি ‘প্রক্রিয়া জ্ঞান’ অথবা ‘ব্যবহারিক বিদ্যা’, নিষ্ঠা ছাড়া যা রপ্ত করা কঠিন। তাই মানসম্পন্ন লেখার দক্ষতা অর্জনের বিষয়টি সহজ নয়, তবে নিয়মমাফিক অভ্যাসের মাধ্যমে লিখনশৈলীর পারদর্শিতা অর্জন সম্ভব।
সৈয়দ বাশার:
ইস্ট ওয়েস্ট
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক