কভিড-১৯-এ আক্রান্ত ৬৪ হাজার

মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৩৮৩

বণিক বার্তা ডেস্ক

চীনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কেন্দ্রস্থল হুবেই প্রদেশে গতকাল মারা গেছে ১০০ জনের বেশি। এর মধ্যে ছয়জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। নিয়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে হাজার ৩৮৩। এছাড়া নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্তৃপক্ষ বলছে, গতকাল হাজার ৯০ জন নতুন করে কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়েছে। নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬৪ হাজারে দাঁড়িয়েছে। যদিও এর একদিন আগে রেকর্ডসংখ্যক মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছিল। সেই হিসাবে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া কমেছে। খবর এএফপি সিএনএন।

হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান এখন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছে। কভিড-১৯-এর জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল তৈরির পাশাপাশি প্রদেশটির অন্যান্য হাসপাতালও এখন আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পরও ভাইরাসটি মোকাবেলায় কার্যত পেরে উঠছে না উহান। প্রদেশ কর্তৃপক্ষ বলছে, হুবেইতে প্রায় ৩৭ হাজার আক্রান্ত মানুষ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। যাদের মধ্যে হাজার ৬৮৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের পর থেকে এখন পর্যন্ত হাজার ৭২৩ জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছে। চীন সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, হুবেই প্রদেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে ৮০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন।

গত ডিসেম্বরে চীনে প্রথম ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। যে চিকিৎসক সর্বপ্রথম ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন, গত সপ্তাহে তিনিও আক্রান্ত হয়ে মারা যান। যদিও শুরুতে চিকিৎসকের এমন সতর্কীকরণের বিষয়টি উপেক্ষা করে উপরন্তু তাকে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছিল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। যে কারণে ভাইরাসটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ বাড়ছে সাধারণ মানুষের। তারা মনে করে, শুরু থেকেই এটির বিষয়ে সরকার লুকোচুরি করায় এটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম হয়েছে। লি ওয়েনলিং নামে ওই চক্ষু চিকিৎসকের মৃত্যুর পর চীন সরকারের প্রতি জনসাধারণের ক্ষোভ আরো বেড়েছে।

সরকারের বিরুদ্ধে চলমান ক্ষোভের মধ্যে সম্প্রতি সমালোচনা করার অভিযোগ এনে হুবেই প্রদেশের দুই শীর্ষ নেতাকে বরখাস্ত করেছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। এছাড়া অনেক সরকারি কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটছে। এসব জায়গায় শি জিন পিংয়ের আনুগত্যশীল কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্য অনুযায়ী, হুবেই প্রদেশ রাজধানী উহানের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধানদের সরিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে সাংহাইয়ের সাবেক মেয়রকে হুবেইয়ের প্রধান এবং ওয়াং জংলিনকে উহানের প্রধান করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং।

এদিকে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় নতুন করে এটির নাম নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাভাইরাস ডিজিস বা কভিড-১৯ নাম দিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব সংস্থাটি।

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেডরস অ্যাডহানম বলেছেন, ভাইরাসটি যেকোনো দিকে অগ্রসর হতে পারে। তিনি বলেন, আমাদের যেকোনো মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ধনী দেশগুলোর উচিত হবে, যেসব দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্বল তাদের পাশে দাঁড়ানো। যেসব দেশ এমন মহামারী মোকাবেলায় সক্ষম নয়, সেসব দেশে যদি ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এটি বড় ধরনের বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

এদিকে চীনের বাইরে গতকাল হংকংয়ে আরো তিনজন কভিড-১৯- আক্রান্ত হয়েছে। নিয়ে চীনের আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ জনে। অঞ্চলটিতে এরই মধ্যে তিনজন আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন